শাহজাদি আয়শা দুরুশেহভার সুলতান ও প্রিন্সেস নীলুফার খানুম সুলতানা (হায়দ্রাবাদের জানা-অজানা ইতিহাস)

মাহবুবুর রব চৌধুরী, টরেন্টো

১৫১৮ সালে দাক্ষিণাত্যের গোলকুন্ডায়, সুলতান কুলি কুতুব-উল-মুলক (১৫১৮-১৫৪৩) কুতুব শাহি রাজবংশ সালতানাত কায়েম করেন। হায়দ্রাবাদের উত্থান ও তার গৌরব গাঁথা রচনায় এ সালতানাত ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছে। ১৫৯১ সালে কুতুবশাহী পঞ্চম সুলতান, সুলতান মুহাম্মদ কুলি কুতুব শাহ হায়দ্রাবাদ নগরীর পত্তন করেন। এই বংশে আটজন সুলতান শাসন করেছেন ১৬৩৬ সালে সম্রাট শাহজাহান কুতুব শাহি সুলতানকে মুঘলদের সার্বভৌমত্ব মেনে চলতে বাধ্য করেন।
১৬৮৭ সাল পর্যন্ত এই অবস্থা বজায় ছিল। এরপর সম্রাট আওরঙ্গজেব এটি আরো এক ধাপ এগিয়ে নেন।
মুঘল সম্রাট মুহম্মদ শাহ ‘ প্রথম হায়দ্রাবাদের শাসন কর্তাকে “আসফ জাহ” এবং নিজাম উল-মুলক বা সংক্ষেপে “নিজাম” এই উপাধি দেন। অতঃপর হায়দ্রাবাদের শাসন কর্তারা ইতিহাসে নিজাম নামেই অধিকতর পরিচিতি লাভ করেন। কুতুবশাহী রাজবংশের ৮ সুলতান।
১.সুলতান কুলি কুতুব-উল-মুলক (১৫১৮-১৫৪৩)
২.জামশেদ কুলি কুতুব শাহ (১৫৪৩-১৫৫০)
৩.সুবহান কুলি কুতুব শাহ (১৫৫০)
৪.ইবরাহিম কুলি কুতুব শাহ (১৫৫০-১৫৮০)
৫.মুহাম্মদ কুলি কুতুব শাহ (১৫৮০-১৬১২)
৬.সুলতান মুহাম্মদ কুতুব শাহ (১৬১২-১৬২৬)
৭.আবদুল্লাহ কুতুব শাহ (১৬২৬-১৬৭২)
৮.আবুল হাসান কুতুব শাহ (১৬৭২-১৬৮৬)
কুতুবশাহী রাজবংশ তুর্ক বংশোদ্ভূত। এই রাজবংশের সাথে তুর্কমেনিস্তানের কারা কোয়ুনলু রাজবংশের সম্পর্ক পাওয়া যায়। দাক্ষিণাত্যের উত্তপ্ত পরিবেশ পরিস্থিতি এবং যুদ্ধ সংগ্রামের মাঝে রাজ্য শাসন সহ প্রজাদের অর্থাৎ রাজ্যের, সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাওয়া কোন সহজ বিষয় নয়। এ কাজটি অত্যন্ত যোগ্যতার সাথে, সফলতার সাথেই করে দেখিয়েছেন হায়দ্রাবাদের নিজাম শাসকেরা।
১৫৯১ সালে সুলতান মুহাম্মদ কুলি কুতুব শাহ হায়দ্রাবাদ নগরীর পত্তন করেন। এবং হায়দ্রাবাদকে নতুন রূপে গড়ে তোলেন। তিনিই এই শহরের নামকরন করেন হায়দ্রাবাদ। হায়দার অর্থ সিংহ আর আবাদ অর্থ শহর অর্থাৎ সিংহদের শহর বা সিংহদের বিচরণ ক্ষেত্র। সুলতান এই মনভাব নিয়ে এবং সে আদলেই শহরটি গড়ে তুলতে চেয়েছেন। মোগল, মারাঠা, ব্রিটিশ এর মাঝে টিকে থাকতে যে কৌশল কূটনীতি প্রয়োজন তার সব টুকুই নিজাম হায়দ্রাবাদ ব্যবহার করেছেন। এ বিষয়ে কখনো পিছপা হননি। এভাবেই নিজেদের, প্রজাদের ও রাজ্যের স্বার্থের দেখভাল তারা করে গেছেন শেষ অব্দি।
ক্ষয়িষ্ণু মোগল আমলে দাক্ষিণাত্যের মারাঠা ঊত্থানের পর নিজামেরা মারাঠাদের বার্ষিক চৌথ অর্থাৎ কর বা অর্থ কড়ি দিতে বাধ্য হন। মারাঠাদের হাত থেকে রাজ্যকে মুক্ত রাখতে হায়দ্রাবাদের নিজাম ! নিজাম আলী খান আসফ জাহ ব্রিটিশদের সাথে ১৭৯৮ সালে একটি চুক্তি করেন। এই চুক্তির অনুসারে হায়দ্রাবাদকে ব্রিটিশ সুরক্ষা দেবার কথা যুক্ত করা হয়। একই সাথে চুক্তির ফলে ব্রিটিশরা নিজামকে His Exalted Highness (মহামাননীয়) উপাধি প্রদান করে এবং তারপর থেকে ২৩-তোপ দিয়ে নিজামকে ছালাম জানানোর প্রথা চালু হয়। একই সাথে হায়দ্রাবাদের নিজামই ব্রিটিশ ভারতে প্রথম দেশীয় রাজ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায় এবং তার স্বীকৃতি অর্জন করে। এরপর সিকান্দার জাহ-এর রাজত্বকালে হায়দ্রাবাদে একটি বড় আকারের শক্তিশালী সেনানিবাস তৈরী করা হয়। এবং সেনানিবাস অঞ্চলটির নাম করা হয় সেকেন্দ্রাবাদ। ১৯০১ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে এই রাজ্যের গড় আয় ছিল ৪৭১,০০,০০০ রুপি। তখন রাজ্যটি ছিল ভারতের সবচেয়ে ধনী দেশীয় রাজ্য। এবং নিজামকে বিশ্বের সব থেকে ধনী ব্যক্তি হিসাবে আখ্যায়িত করা হত। হায়দ্রাবাদ বা ডেকানের বাসিন্দারা, জাতি বর্ণ নির্বিশেষে, “মুলকি” (দেশবাসী) আপনা মুলুক কি ! নামে পরিচিত ছিলেন এই টার্ম আজও ব্যবহৃত হয়। নিজামদের রাজত্বকালের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনাণ্ডলোর একটি হলো পঞ্চম নিজামের রাজত্বকালে (১৮৫৭-১৮৬৯) প্রশাসনিক সংস্কারের কাজ। রাজ্যের বিষয়ে ইউরোপীয় আদলে সিস্টেম প্রতিষ্ঠা করা হয়। ব্রিটিশ শাসন কর্তৃত্বের বাইরে দেশীয় একটি রাজ্যের মাঝে এই রূপ পরিবর্তন আনা ছিল একটি যুগান্তকরি সংস্কার মূলক কাজ। এটিকে নিজামের দূরদর্শিতার উদাহরণ হিসাবেই দেখা হয়।
নিজাম স্থাপত্য, শিল্প, সাহিত্য এবং শিক্ষার অনুরাগী ছিলেন। দরবারে ফার্সি, উর্দুর পাশে তেলুণ্ড ভাষা চালু করেন। রাজ্যে শিল্প, সাহিত্য, কৃষ্টি- সংস্কৃতির চর্চা ছিল এবং তার কদর ছিল। নিজামেরা শুধুমাত্র হায়দ্রাবাদ নয় ভারতবর্ষের অন্যান্য স্থানেও শিক্ষা প্রসারে সাহায্য এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। স্যার সৈয়দ আহমেদ প্রতিষ্ঠিত আলী গড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে- এমনকি রবীন্দ্র নাথের সাহায্যের আবেদনে সাড়া দিয়ে শান্তি নিকেতনেও বড় আকারে সাহায্য করেছেন। এই সাহায্য পাবার পর থেকে সেখানে মুসলিম ছাত্র ভর্তি হবার সুযোগ পায়। এবং নিজামের অর্থ অনুকূলে একটি মুসলিম ছাত্র বৃত্তি চালু করা হয়। সুলতান মুহাম্মদ কুলি কুতুব শাহ দক্ষিণী উর্দু, ফার্সি ও তেলুণ্ড ভাষায় কবিতা রচনা করেছেন। তিনি বিপুল কাব্যের সংগ্রহ রেখে গেছেন। পরবর্তী কালে কবি ও লেখকরা ফার্সি, হিন্দি ও তেলুণ্ড শব্দ ব্যবহার করে উর্দুতে রচনাকর্ম সম্পাদন করেছেন। এরূপ একটি ধারা নিজামদের উৎসাহেই সৃষ্টি হয়েছিল। ১৫৩৫ সাল থেকে কুতুব শাহি সুলতানরা রাজস্ব ও বিচারিক ক্ষেত্রে তেলুণ্ড ভাষার ব্যবহার শুরু করেন।
পর্যায়ে কুতুব শাহি সুলতানরা ফার্সি সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতা করলেও পরবর্তীকালে দক্ষিণাত্যের স্থানীয় সংস্কৃতিকেও তারা গ্রহণ করেন। তেলুণ্ড ভাষা এবং দক্ষিণী উর্দুর নবগঠিত শৈলী রাজ কার্য সম্পাদন ক্ষেত্রে ভাষাগত যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে উঠে। এটিও ছিল তাদের দূর দৃষ্টির পরিচয়। কুতুব শাহি সুলতানদের মাতৃভাষা তেলুণ্ড না হওয়া সত্ত্বেও তারা তেলুণ্ড ভাষায় কথা বলতে ও লিখতে পারতেন। এ কারণেই জন সাধারণ তখন তাদের তেলুণ্ড সুলতান নামে আখ্যায়িত করেছিল। হায়দ্রাবাদ রাজ্যের নিজামরা ছিলেন মুসলিম। রাজ্য শাসনে তারা সুশাসনকেই নীতি হিসাবে নিয়েছিলেন। প্রতিষ্ঠিত করে ছিলেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ছিল রাজ্য শাসনের নীতি।
রাজ্যের প্রজাদের মেজরিটি ছিলেন হিন্দু। তারা কখনও ধর্মীয় কারনে বঞ্চিত হয়েছেন এ অভিযোগ তুলেননি। এবং তুলবার কারন খুঁজে পাননি। হায়দ্রাবাদ রাজ্যে হিন্দু, মুসলিম সহ ধর্মীয় ভাবে রেশিও টি এইরূপ।
Residents of Hyderabad are called Hyderabadi. They are predominantly the native Hyderabadi Muslims and Telugu people (mostly Hindu). The minority communities of Hyderabad are Kannadiga (including Nawayathi), Marwari, Odia, Bengali, Tamil, Malayali, Gujarati, Marathis, Hindavi, Sindhi, Iranian, Punjabi, Pathan, and Turkic. Among the foreign-origin communities Yemeni Arabs form the majority with African Arabs, Iranian, Pathani and Turkic as minorities – who kept settling here during Muslim rule.
Hyderabad district religious statistics of 2011 census are: Hindus (64.93%), Muslims (30.13%), Christians (2.75%), Jains (0.29%), Sikhs (0.25%), Buddhists (0.04%) and remaining others.The population of Hyderabad district is 39.43 lakhs, where Hindus are 20.46 lakhs (51.89%) and Muslims are 17.13 lakhs (43.35%).
হায়দ্রাবাদে নিজাম এর শাসন আমল শুরু থেকে ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ইন্ডিয়া স্বাধীনতা লাভের পরেও রাজ্যটি নিজ সত্ত্বায় টিকে ছিল। ১৮ই সেপ্টেম্বর ১৯৪৮ তারিখে যা শেষ হয়েছিল। সেটি ছিল ভারতের পক্ষ থেকে এক বিশ্বাস ঘাতকতার কাহিনী। পরবর্তীতে ১৯৬৪ সালে ভারত চীন যুদ্ধের পর তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী হায়দ্রাবাদ সফরে যান এবং যুদ্ধ পরবর্তী পুনর্গঠন কাজে হায়দ্রাবাদের নিজামের সাহায্য চান। হায়দ্রাবাদের নিজাম সে আবেদনে সাড়া দিয়ে তখন ৫০০০ কিলো সোনা ভারতীয় ফান্ডে দান করেন। এটিই ভারতের ইতিহাসে এযাবৎ কালের একক ব্যক্তি তহবিল থেকে পাওয়া সর্ব বৃহৎ ডোনেশন। হায়দ্রাবাদের ইতিহাসে এইরূপ অসংখ্য ঘটনা আছে।
শাহজাদি আয়শা দুরুশেহভার সুলতান বা প্রিন্সেস আয়শা দুররে শাহওয়ার সুলতান একই জন। একই রাজ্ কুমারী। তিনি ইতিহাসের বিখ্যাত এরতুগরুল গাজীর নাতনি। উসমানীয় সাম্রাজ্যের সিংহাসনের শেষ উত্তরাধিকারী, অটোমান রাজবংশের শেষ সুলতান এবং উসমানীয় খিলাফতের শেষ খলিফা দ্বিতীয় আব্দুল মজিদের একমাত্র কন্যা। হায়দ্রাবাদ দাক্ষিণাত্যের ৭ম নিজাম মীর ওসমান আলী খানের প্রথম পুত্র আজম জাহের স্ত্রী। তিনি ছিলেন সুন্দরী, সুশিক্ষিতা, আধুনিক মনস্কা, মার্জিত, ঐতিহ্য অনুরাগী, প্রগতিশীল একজন রোল মডেল মহিলা।
তিনি ১৬ জানুয়ারি ১৯১৪ চামলিজা প্রাসাদ, কনস্টান্টিনোপল, টার্কিতে (বর্তমান ইস্তাম্বুল, তুরস্ক এ) জন্ম গ্রহণ করেন। এবং ৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৬, ৯২ বছর বয়সে লন্ডন, ইংল্যান্ড মৃত্যুবরণ করেন। মিশরের রাজা এবং ইরানের শাহ নিজ নিজ পুত্রের জন্য সুলতানের নিকট প্রস্তাব পাঠিয়ে ছিলেন। কিন্তু সুলতান দ্বিতীয় আব্দুল মজিদ তার একমাত্র কন্যার জন্য হায়দ্রাবাদের নিজাম এর বড় পুত্রকেই পছন্দ করেন।
প্রিন্সেস দুরুশেভার বিবাহের পর তার হায়দ্রাবাদ জীবনে হায়দ্রাবাদের মানুষের জন্য সব টুকু আন্তরিকতা নিয়ে সামর্থের মাঝে সব কিছুই তিনি করেছেন এবং এই কাজে স্বামী ও পরিবারের সর্বাত্বক সমর্থনও তার সাথে ছিল। এখানে সংক্ষিপ্ত ভাবে তার কাজের কিছু বিবরণ তুলে ধরা হল।
তার আগ্রহ ও প্রচেষ্টায় হাইদ্রাবাদে আধুনিক বিমানবন্দর তৈরি হয় এবং ১৯৪০ সালে তিনি তা উদ্বোধন করেন। তিনি হায়দ্রাবাদে ওসমানিয়া জেনারেল নির্মাণ কোরান এবং এ হসপিটালটি ও তিনি উদ্বোধন করেন।
হাইদ্রাবাদ শিশু ও মহিলাদের জন্য প্রিন্সেস দুরুশেভার চিলড্রেন্স এন্ড জেনারেল হসপিটাল তৈরি করেন। ১৯৩৯ সালে তিনি ভারতের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের আজমল খান তবীবিয়া কলেজ এবং হসপিটালের তৈরিতে অর্থায়ন করেন। এবং সমাপ্তি শেষে তিনি তা উদ্বোধন করেন। হায়দ্রাবাদের জন্য এক জীবনে তিনি অনেক করেছেন। যার সুফল আজও মানুষ পাচ্ছেন।
রাজকুমারী বেগম সাহিবা নীলুফার খানুম সুলতানা: প্রিন্সেস দুরুশেভার এবং প্রিন্সেস নিলুফার খানম সুলতানা দু বোন দুই তুর্কি প্রিন্সেস। দুই রাজকন্যাদ্বয় ছিলেন সম্পর্কে একে অপরের কাজিন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষে উসমানীয় রাজবংশকে ক্ষমতা চ্যুত করা এবং তুরস্ককে প্রজাতন্ত্র হিসাবে ঘোষণা করা হয়। তারপর ১৯২৪ সালে, তুরস্ক থেকে উসমানদের নির্বাসিত করা হয়েছিল। তারা ফ্রান্সে বসতি স্থাপন করেছিল এবং ভূমধ্যসাগরীয় শহর নিসে বাসস্থান শুরু করেছিল। নিলুফারের বাবা-মা সহ তাদের পরিবারের সদস্যরা এবং বর্ধিত পরিবার একইভাবে ফ্রান্সে নির্বাসনে গিয়েছিলেন।
প্রিন্সেস দুরুশেভার নিজ দেবর মোয়াজ্জেম জাহের সাথে নিজ কাজিন প্রিন্সেস নিলুফার খানুম সুলতানা ফরহাত এর বিবাহের বন্দবস্ত করেন। তখন প্রিন্সেস নীলুফার খানুম সুলতানার বয়স ছিল ১৬ বছর। ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর নিসে তাঁর মামার হিলাফট প্রাসাদে, প্রিন্সেস নিলুফারের বিয়ে অনুষ্ঠান হয়।
প্রিন্সেস নীলুফারও প্রিন্সেস দুরুশেহভার সুলতান এর মত সমাজ কর্মে উৎসাহী ছিলেন। তিনি ছিলেন নিঃসন্তান। সন্তানের অভাব তিনি সেবা কর্মে পুষিয়ে নিয়েছিলেন।
১৯৪৪ সালে তার সহকারী হোম সাহায্যকারী “রাফাতুন্নিসা বেগম”- চিকিৎসার অভাবে সন্তান প্রসবকালে মারা যান। তার প্রিয় কাজের মেয়েটির মৃত্যুর সংবাদ শুনে রাজকন্যা খুব ব্যথিত হন। তারপরে তিনি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন এর পরে আর কোনও মা যেন মৃত্যুর মুখোমুখি হন না। নিলুফার তার শ্বশুরবাড়ির সকলে কাছে চিকিৎসা সুবিধার অভাবে যে সমস্যাণ্ডলি দেখা দেয় তা জানিয়েছিলেন। ফলস্বরূপ তার প্রচেষ্টায় শহরের রেড হিলস এলাকায় মহিলা এবং শিশুদের জন্য একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মিত হয়েছিল। স্বামী মোয়াজ্জাম জাহ দ্বিতীয় স্ত্রী হিসাবে হায়দরাবাদের স্থানীয় অভিজাত মেয়ে রাজিয়া বেগমকে বিয়ে করেন তার দ্বিতীয় বিবাহটি তাকে তিনটি কন্যা সন্তানের পিতা করে। তারপর প্রিন্সেস নিলুফার ১৯৫২ সালে, বিয়ের ২১ বছর পরে, স্বামী মোয়াজ্জাম জাহ’র সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করেছিলেন। তিনি ১৯৮৯ সালের ১২ জুন প্যারিসে মারা যান। প্রিন্সেস নীলুফার খানুম সুলতানা তার সময় বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দশ সুন্দরী মহিলার মাঝে একজন বলে বিবেচিত হতেন।
মাহবুবুর রব চৌধুরী, টরন্টো
লেখক পরিচিতি: ইতিহাস গবেষক, রাজনীতি বিশ্লেষক

এমন আরো সংবাদ

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন !
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ সংবাদ