নদী দখল নিয়ে প্রতিমন্ত্রী-এমপির দ্বন্দ্ব

নদী দখল করে অবৈধ স্থাপনা স্থাপন তৈরির ইস্যুতে নতুন করে উঠে এসেছে নৌ প্রতিমন্ত্রী ও ঢাকা-১৪ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আসলামুল হকের দ্বন্দ্ব। যা সরকার ও জনপ্রতিনিধিদের সম্পর্কে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে।

সম্প্রতি জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে আসে বুড়িগঙ্গা নদী ও তুরাগ নদের জায়গা দখল করে অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাংসদ আসলামুল হক। দখল করা জায়গার মধ্যে জলাশয়ও রয়েছে। সব মিলিয়ে দখলের মোট পরিমাণ ৫৪ একরের বেশি।

নদী কমিশনের প্রতিবেদনের পর আসলামুল হক সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন নদী কমিশনের প্রতিবেদন মনগড়া।

তিনি বলেন, এটা জরিপ করা প্রয়োজন, আটমাস উনি ঘুমিয়ে ছিলেন, উনার এখানে শত শত আবেদন আছে, অন্য কোন আবেদনকে উনি তড়িঘড়ি করে আমলে নিলেন না, শুধু আমার এই বিষয়টি আমলে নিয়ে উনি তড়িঘড়ি করে একটি রিপোর্ট তৈরি করলেন। যে রিপোর্টটি আইন বিবর্জিত, পরস্পরবিরোধী।

আসলামুল হকের এমন মন্তব্যের পর আওয়ামী লীগের নেতারা নড়েচড়ে বসেন। তাদের মতে আসলামুল হকের এই বক্তব্য সরকারের সাথে প্রশাসনের সম্পর্ককে নষ্ট করবে।

তবে এই ইস্যুটি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয় আসলামুল হক ও নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী পরস্পরকে দোষারোপ করায়।

আসলামুল হকের নিকটজনের মতে, আসলামুল হক এ বিষয় নিয়ে প্রতিমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে গেলেও তিনি দেখা দেননি।

আসলামুল হকের দাবি, তিনি প্রতিমন্ত্রীকে ১৭ বার কল করলেও তিনি কল ধরেননি। এমনকি কয়েকবার তার সরকারি বাসভবনে গিয়ে দেখা করতে চাইলেও দেখা দেননি।

তার মতে, নৌ প্রতিমন্ত্রী তার উপর ক্ষুদ্ধ। সেই ক্ষুদ্ধতার কারণেই নদী দখলের মত অভিযোগ এনে তার সারা জীবনের অর্জনকে ধূলিস্যাত করতে চান।

আওয়ামী লীগের ঢাকা উত্তরের সহ-সভাপতি আসলামুল হক এই বিষয় নিয়ে  আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার কাছে নালিশ জানিয়েছেন।

অপরদিকে আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদের আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার নিকট জানিয়েছেন, আসলামুল হকের অনুরোধ রাখতে গেলে অবৈধ নদী দখলের পুরো অভিযানই বন্ধ করে দিতে হবে।

এছাড়া প্রতিমন্ত্রী তার মন্ত্রণালয়ে কোন দলপ্রীতি বা স্বজনপ্রীতি চলবে না বলেও জানিয়ে দেন। নিজের ইমেজকে ক্লিন রাখতে তিনি মন্ত্রণালয়কে দলপ্রীতি থেকে দূরে রাখতে জানতে বলে আওয়ামী লীগের নেতাদের তিনি জানিয়েছেন, বলে জানান একাধিক আওয়ামী লীগের নেতা।

নদী দখলের এই ইস্যুতে আওয়ামী লীগ দলীয় জনপ্রতিনিধি ও মন্ত্রী সভার সদস্যের পরস্পরের দোষারোপ জনপ্রতিনিধি ও প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বকেই সামনে নিয়ে এসেছে।

 

এমন আরো সংবাদ

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন !
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ সংবাদ