ভোরের আলো ডেস্ক:
খাগড়াছড়ির রামগড় সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় এক পাগল ব্যক্তিকে জোর করে বাংলাদেশে পুশইন করার চেষ্টা করেছে বিএসএফ। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে রামগড়-সাব্রুম সীমান্তে চরম উত্তেজনার বিরাজ করে। উভয় দেশ সীমান্তে অতিরিক্ত সৈন্য মোতায়েন করে।
স্থানীয়রা জানান, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ সেদেশের এক পাগল ব্যক্তিকে (৪০) রামগড় সীমান্তের থানাঘাট এলাকা দিয়ে জোরপূর্বক ফেনীনদী পার করে বাংলাদেশে পুশইন করার চেষ্টা করে। নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা বিষয়টি বিজিবিকে জানানোর পর তারা এসে বিএসএফকে বাধা দেয়। কিন্তু বাধা উপেক্ষা করে বিএসএফ জোরপূর্বক ওই পাগলকে পুশইন করার চেষ্টা করলে বিজিবি কঠোরভাবে তা প্রতিরোধ করে। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে উভয় সীমান্তে অতিরিক্ত সৈন্য মোতায়েন করে দুপক্ষ। সীমান্তের উত্তেজনাকর পরিস্থিতির কারণে নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।
রামগড়ের দারোপাড়ার ফেনীনদীর তীরবর্তী বাসিন্দা কাউসার হোসেন জানান, একদল বিএসএফ সাব্রুমের স্থানীয় কয়েকজন লোক নিয়ে ওই পাগলকে পিটিয়ে জোরপূর্বক বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা করলে তারা কয়েকজন নদীর এ পার থেকে প্রতিবাদ জানায়। এতে বিএসএফ তাদের গুলি করার হুমকি দেয়। পরে তারা বিজিবিকে খবর দেন।
এদিকে, চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রামগড়-সাব্রুম সীমান্তের মৈত্রীসেতু এলাকায় জরুরি পতাকা বৈঠকে বসেন বিজিবি ও বিএসএফের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। বৈঠকে বিজিবির গুইমারার সেক্টর কমান্ডার কর্নেল জিএইচএম সেলিম হাসান ও বিএসএফর উদয়পুরের ডিআইজি জামিল আহমেদ নেতৃত্ব দেন। বৈঠকে ভারতীয় পাগলকে বাংলাদেশে পুশইন করার চেষ্টার কড়া প্রতিবাদ জানায় বিজিবি। বিএসএফ ওই পাগল ব্যক্তিকে বাংলাদেশের নাগরিক বলে দাবি করলে এর সত্যতা প্রমাণের জন্য বিজিবির পক্ষ থেকে চ্যালেঞ্জ করা হয়।
বৈঠক শেষে বিজিবির গুইমারা সেক্টর কমান্ডার কর্নেল জিএইচএম সেলিম হাসান জানান, সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে একের পর এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে জোরপূর্বক বাংলাদেশে পুশইন করার চেষ্টার কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে- ওই পাগল ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে তথ্য প্রমাণ না দেয়া পর্যন্ত বিএসএফের হেফাজতে থাকবে। ভবিষ্যতে পতাকা বৈঠক ছাড়া কাউকে জোরপূর্বক অথবা গোপনে বাংলাদেশে পুশইন করার চেষ্টা করবে না বিএসএফ। উভয় সীমান্তে মোতায়েন করা অতিরিক্ত সৈন্য দুপক্ষই প্রত্যাহার করবে।
এদিকে, শনিবার সীমান্ত এলাকা ঘুরে শান্ত ও স্বাভাবিক অবস্থা দেখা গেছে। তীরবর্তী বাসিন্দারা জানান, শুক্রবার গভীর রাতে অতিরিক্ত সৈন্য ক্যাম্পে ফিরে গেছে।
(ভোরের আলো/ফআ)