বৃহত্তর টরন্টোয় বসবাসরত বাংলাদেশী কানাডিয়ানদের প্রয়োজনীয়তা বহুবিদ। এর মধ্যে প্রধান প্রয়োজনীয়তাগুলো হচ্ছে যথাক্রমে আবাসন, কর্মসংস্থান, মানসিক স্বাস্থ্য, সঠিক তথ্য প্রাপ্তি এবং ইংরেজী ভাষাগত দক্ষতার উন্নয়ন। বেসরকারী সংস্থা বেঙ্গলি ইনফরমেশন এন্ড এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসেস (বায়েস) পরিচালিত সম্প্রতি এক জরিপে এ তথ্য প্রকাশ পায়। ৮ জানুয়ারি টরন্টোর বাঙালি অধ্যুষিত ডেনফোর্থ এভিনিউর এক রেস্তোরায় এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার বাংলাদেশী কমিউনিটির ৪২ জন উপস্থিত ছিলেন।
জরিপ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন বায়েসের নির্বাহী পরিচালক ইমাম উদ্দিন। তাঁকে সহায়তা করেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক প্রোগ্রাম এন্ড সার্ভিসেস মোস্তফা আকন্দ। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহত্তর টরন্টোয় বাড়ী ভাড়া অত্যন্ত বেশি এবং একটি সম্পত্তি কেনাও বেশ ব্যয়বহুল। ফলে পরিবারের আয়ের বেশিরভাগ অংশ ব্যয় করতে হয় আবাসনের জন্য। এই আবাসন সমস্যা বর্তমানে বাংলাদেশী কানাডিয়ানদের কাছে প্রধান উদ্বেগের কারন। চাহিদা মতো কর্মসংস্থান না পাওয়া কমিউনিটির সদস্যদের দ্বিতীয় প্রধান প্রয়োজনীয়তা।কোভিড ১৯ এর কারণে অনেক লোক তাদের চাকরি হারিয়েছে। নবাগতদের একটি ভাল চাকরি পাওয়া বেশ সময় সাপেক্ষ। মহিলাদের সন্তান প্রতিপালনে সময় দেয়ার কারনে কর্মসংস্থান কঠিন হয়ে পড়ে।
বায়েসের জরিপে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানের বিষয়টি কমিউনিটির অন্যতম প্রয়োজন বলে উঠে এসেছে। কোভিড মহামারী, কিশোর-কিশোরীদের একাকীত্ব থাকা, আশানুরূপ আয়ের সংস্থান না হওয়া,পারিবারিক সহিংসতা, বিনোদনের বেশি সুযোগ না থাকাসহ বিভিন্ন করনে কমিউনিটির সদস্যদের মাঝে মানসিক স্বাস্থ্য-এর অবনতি ঘটেছে। এছাড়া সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য পাওয়া অন্যতম প্রয়োজন বলে জরিপে চিহ্নিত হয়েছে। আর ইংরেজী ভাষাগত দক্ষতা যেহেতু এদেশে বসবাসের জন্য সবচেয়ে জরুরী সে প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি জরিপে উঠে এসেছে।
বায়েসের প্রেসিডেন্ট আলমগীর কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনায় অংশ নেন সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর, টিডিএসবির শিক্ষক সৈয়দ ফখরুদ্দিন, কৃষিবিদ কামাল মুস্তফা হিমু, প্রফেসর মোহাম্মদ আলী, সমাজ সেবক মঈন চৌধুরী, রীনা সেন গুপ্তা, সোশ্যাল ওয়ার্কার আফরোজা বেগম, জাকারিয়া মাইনুদ্দিন, নেছার আহমেদ প্রমুখ। এছাড়া সাংবাদিক সঞ্চয় চাকী, ড, এ এম তোহাসহ বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন।
বৃহত্তর টরন্টোয় বসবাসরত ৪০০ জন বাংলাদেশী কানাডিয়ানের উপর টেলিফোনের মাধ্যমে জরিপটি পরিচালনা করা হয়। এতে ৩৬০ জন ফোন রিসিভ করেছেন। আর মতামত দিয়েছেন ৮০ জন। এদের মধ্যে ৪০ জন পুরুষ, ৪০ জন নারী। উত্তরদাতাদের গড় বয়স ৩৭ বছর। ২০২২ সালের জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে সমীক্ষাটি পরিচালিত হয়। এতে নেতৃত্ব দেন ইমাম উদ্দিন। প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন মোস্তফা আকন্দ। তথ্য সংগ্রহ করেন, বুশরা মেহজাবিন ও নাফিজা উদ্দিন।
এছাড়া বায়েসের ১০ জন মেন্টর ১০০ জনকে বাংলাদেশী কানাডিয়ানকে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত ও পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছেন। সহায়তা প্রাপ্তদের বেশিরভাগই কানাডায় নবাগত।