মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই তার ওপর অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
বাইডেন অফিসে দায়িত্ব নেয়ার পরপরই যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছেন তার মধ্যে অন্যতম হলো কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বিতর্কিত কিস্টোন এক্সএল পাইপলাইন নির্মাণ বন্ধের সিদ্ধান্ত।
বুধবার বাইডেন যে ১৫টি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন তার একটি হলো এই পাইপলাইন নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা। জাস্টিন ট্রুডো প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই পদক্ষেপকে ‘হতাশাজনক’ বলে মন্তব্য করেন।
এক বিবৃতিতে ট্রুডো বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আমরা প্রেসিডেন্টের প্রতিশ্রুতিকে যেমন স্বাগত জানাই, তেমনি প্রেসিডেন্টের এ সিদ্ধান্তেও আমরা হতাশ। যদিও নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেগুলো পূরণের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্তের বিষয়টিও আমাদের মাথায় আছে।’
বেসরকারি অর্থায়নে নির্মাণাধীন পাইপলাইনটির মূল্য প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার। কোম্পানিটি কানাডার আলবার্টা থেকে নেব্রাস্কায় দৈনিক আট লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল পরিবহন করতো।
বাইডেনের আদেশের পরে পাইপলাইন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান টিসি এনার্জি বুধবার তাদের চলমান নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়। ফলে কয়েক হাজার মানুষ তাদের চাকরি হারাবেন বলে জানায় টিসি এনার্জি।
ট্রুডো বলেন, ‘দূষণ কমাতে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায়, কোভিড-১৯ মোকাবিলায়, মধ্যবিত্তদের জন্য চাকরি তৈরি ও টেকসই অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে আমি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে কাজ করব।’
পরিবেশগত ঝুঁকির কারণে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১৫ এই প্রকল্পে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। ২০১৭ তে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে দেন। গত বছর জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি নিম্ন আদালতের আদেশ বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্ট, যেখানে প্রকল্পটি পরিবেশগত যাচাইয়ের নির্দেশ দেয়া হয়।
কানাডা সবসময় এ প্রকল্পের পক্ষে সমর্থন দিলেও পরিবেশবাদী সংস্থা এবং আদিবাসী আমেরিকান গোষ্ঠী এর বিরুদ্ধে এক দশকের বেশি সময় ধরে লড়াই করে আসছে।
পরিবেশবাদীদের দাবি, ‘টার স্যান্ডস’ নামে পরিচিত এই তেল সাধারণ অপরিশোধিত তেলের চেয়ে আরও ঘন, আরও এসিডযুক্ত এবং বেশি ক্ষতিকর। পরিবহনের সময় পাইপজুড়ে তেল চুয়ে পড়ার ফলে তা পরিবেশের ক্ষতি করবে বলে দাবি করেন তারা। সূত্র: এএফপি, বিবিসি, নিউইয়র্ক পোস্ট