পান পাতা, আমাদের বাঙালি খাদ্য সামগ্রীর একটি অন্যতম জনপ্রিয় খাদ্য। পান শব্দটা শুনলেই ষাট বা সত্তর বয়সী প্রবীণদের পানের রস লেগে থাকা লাল ঠোটের চিত্র ভেসে উঠে আমাদের চোখে। বাংলাদেশি তথা বাংলা ভাষাভাষী তথা বাংলা সংস্কৃতির মানুষ যেখানে সেখানে পান থাকবেই।
ইংল্যান্ড, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যের পরে ইউরোপ ইউনিয়ন দেশগুলোতে বাড়তে শুরু করছেন বাংলাদেশি জনগোষ্ঠী। বিশেষভাবে ফ্রান্সে উল্লেখ্য সংখ্যক হারে বেড়ে চলেছে বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীদের অবস্থান, বাড়ছে বাঙালি সংস্কৃতির বিচরণ।
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বাংলাদেশিদের অবস্থান বাড়ার সাথে সাথে বেড়েছে পানের চাহিদা। বেড়েছে ক্ষুদ্র পান ব্যবসায়ীদের ভ্রাম্যমাণ দোকান। ২৪ আগস্ট প্যারিসের বিখ্যাত পর্যটন এলাকা, আন্তর্জাতিক রেলওয়ে স্টেশন gare du nord এলাকায় বেশ কিছু পান ব্যবসায়ীর ভ্রাম্যমাণ দোকান দেখা যায়।
আশরাফুল আলম নামক একজন ক্ষুদ্র পান ব্যবসায়ী জানান, ফ্রান্সে তিনি অনিয়মিত বাসিন্দা হবার কারণে তিনি স্থায়ী কোনো কাজ করতে পারছেন না। তাই নিজ উদ্যোগে পান ব্যবসা শুরু করেছেন।
তার সাথে কথা বলে জানা যায়, পান, সুপারি, নারিকেলের বিভিন্ন মিষ্টান্ন তিনি বিক্রি করেন। দৈনিক ৫০ থেকে ৬০ ইউরোর পান সুপারি বিক্রি করতে পারেন।
তবে জর্দা বিক্রিতে স্থানীয় প্রশাসনের কড়াকড়ি থাকার কারণে ১০ বা ১৫ প্যাকেট জর্দা তিনি সাথে রাখেন বলে জানিয়েছেন।
জর্দা বিক্রির ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন বা সিটি করপোরেশনের কন্ট্রোল পুলিশের অভিযান রয়েছে বলে তিনি জানান।
তবে তিনি বলেন, একসাথে জর্দার প্যাকেট বিক্রি না করলে কন্ট্রোল পুলিশ তেমন কোন ঝামেলা করে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্যারিসে বসবাসরত একজন বাংলাদেশি প্রবীণ ব্যাক্তি জানান, এখানে তিনি প্রায়শ আসেন পান কেনার জন্য। ১ ইউরো করে পান সুপারি নিয়ে যান।
খন্দকার আলম আবেদিন নামক এই প্রবীণ জানান, দেশের মত পান এখানে পাওয়া যায় না। পানের দামও খুব চড়া। তবে চিরাচরিত অভ্যাসের কারণেই পান কিনতে এখানে আসেন।
প্যারিসে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলা যায়, ২০ ইউরো দিয়ে তারা ১ কেজি পান পাইকারি হারে ক্রয় করেন। সুপারির বস্তার দাম ৩৫ ইউরো।
তবে জর্দার ব্যাপারে জানতে চাইলে এসব ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, জর্দা বেচাকেনা করা আইনত দণ্ডনীয়। সুতরাং জর্দার আমদানি-রপ্তানির সাথে তারা কেউ জড়িত নন।