ভোরের আলো ডেষ্ক: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেই ভারত ও বাংলাদেশে পঙ্গপাল হানার আশঙ্কা করা হচ্ছে। শনিবার ভারতের দ্য হিন্দু পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতে পঙ্গপালের হানার আশঙ্কার কথা ইতিপূর্বেও করা হয়েছিল। চলতি বছরের মে থেকে ভারতে পঙ্গপালের উপদ্রব শুরু হবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছিল বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। তবে সেখানে বাংলাদেশের কথা উল্লেখ ছিল না।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত মহাসাগর অতিক্রম করে একদল পঙ্গপাল সরাসরি ভারত উপদ্বীপের কৃষিজমিতে নেমে পড়তে পারে। এরপরই যাবে বাংলাদেশের দিকে।
হিন্দু পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ভারত যখন প্রাণপণে লড়ে যাচ্ছে তখন দেশটির দিকে ধেয়ে আসছে আরেকটি ভয়াবহ বিপদ। এ গৃষ্মেই ভারতের কৃষি জমিগুলোতে হামলে পড়তে পারে পঙ্গপাল।
সরকারি সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই ফ্রন্টে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত সরকার। একটি হচ্ছে চলমান করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে আর অন্যটি হচ্ছে পঙ্গপালকে প্রতিরোধ করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।
ওই সূত্রটি জানায়, হর্ন অব আফ্রিকা থেকে একদল পঙ্গপাল গতিপথে মরু অঞ্চলের আরেকদলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে হানা দিচ্ছে। এদের একটি ঝাঁক ইয়েমেন, বাহরাইন, কুয়েত, কাতার, ইরান, সৌদি আরব এবং পাকিস্তান হয়ে ভারতে হানা দিচ্ছে। এরা ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানাসহ আরও কয়েকটি এলাকায় ঢুকছে।
অন্যদলটি ভারত মহাসাগর অতিক্রম করে সরাসরি ভারত উপদ্বীপের কৃষিজমিতে নেমে পড়তে পারে। এরপরই যাবে বাংলাদেশের দিকে।
উভয় ঝাঁকের সম্মিলিত হামলায় ভারতের খাদ্য নিরাপত্তা সংকটে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দেশটির নীতি নির্ধারকরা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিরাপাত্তা কাউন্সিলকে এক ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বেসলি হুশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, বর্তমান মহামারীটি এখন ‘ক্ষুধার্ত মহামারী’তে পরিণত হতে পারে।
প্রসঙ্গত গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় পঙ্গপাল উৎপাতের মধ্যে পড়তে যাচ্ছে বিশ্ব। এতে আফ্রিকাসহ বিশ্বের লাখ লাখ মানুষকে খাদ্যাভাবে ফেলে দিতে পারে।
পঙ্গপাল উৎপাতের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাত কোটি ডলারের তহবিল চেয়ে আহ্বান জানিয়েছে এফএও এবং জাতিসংঘ।
গত ২১ এপ্রিল জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, মরুর পঙ্গপাল যারা এ বসন্তে পূর্ব আফ্রিকা, ইয়েমেন ও দক্ষিণ ইরানে হানা দিয়েছে। আফ্রো-এশীয় অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তার জন্যও তারা বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
আফ্রিকার কয়েকটি দেশের পর পাকিস্তান এবং সর্বশেষ ভারতে আক্রমণ চালানোর পর বাংলাদেশেও পঙ্গপালের আক্রমণ হতে পারে, এমন আশংকার কথা জানিয়েছিল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। তবে সে ঝুঁকি এ বছরের চেয়ে আগামী বছর বেশি হবে বলে জানানো হয়।