অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বিকল্পধারা বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরী ও তার স্ত্রী আশফাহ হক লোপার সম্পদের হিসাব চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন
সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে মাহীর গুলশানের বারিধারার বাড়ির ঠিকানায় বৃহস্পতিবার পাঠানো নোটিসে তাদের সম্পদ বিবরণী দুদক প্রধান কার্যালয়ে জমা দিতে বলা হয়েছে বলে দুদকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
নোটিসে বলা হয়, তাদের নিজের ও তাদের উপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের নামে/বেনামে থাকা যাবতীয় স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি, দায়-দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী ২১ কার্যদিবসের মধ্যে নির্ধারিত ছকে দাখিল করতে হবে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে ব্যর্থ হলে অথবা মিথ্যা বিবরণী দাখিল করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নোটিসে উল্লেখ করা হয়।
বিদেশে অর্থ পাচার এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মাহী বি চৌধুরী এবং তার স্ত্রী আশফাহ হক লোপার বিরুদ্ধে দুদকের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন আহম্মদ অনুসন্ধান করছেন।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে এই দম্পতিকে তাদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ২৫ অগাস্ট মাহী বি চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা জালাল।
ওই দিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মাহী সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছিলেন, “এখানে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের সুযোগ নেই, মানি লন্ডারিংয়েরও সুযোগ নেই। বাংলাদেশের বাইরে যদি কোনো আয় থেকে থাকে, তা বাংলাদেশের বাইরের বৈধ আয় থেকেই হয়েছে।”
জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে মাহী বলেন, “একটি অভিযোগ এসেছে আমার নামে, সেই অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত করছে দুদক। সেই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার জন্য আমার বক্তব্য নেওয়া প্রয়োজন ছিল। সেই জন্য দুদক আমাকে ডেকেছে, আমি আমার বক্তব্য দিয়েছি।
“আমি মনে করি দুদকে যেহেতু অভিযোগ এসেছে, দুদক প্রকৃত অথরিটি, সত্য উদঘাটনের জন্য সময় দরকার। আমার কাছ থেকে দুদক যেসব তথ্য চেয়েছে, সেগুলো আমি দেব। দুদক তার মতো কাজ করবে। এর পাশাপাশি আমার কিছু কাজ করতে হবে, যা পরবর্তীতে ওই সংবাদ সম্মেলনে খোলাসা করব। অভিযোগে সত্যতা কতটুকু, এর পেছনে কী ষড়যন্ত্র রয়েছে, তা বলব।”
এসব বিষয় নিয়ে তখন দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করবেন বললেও মাহী বি চৌধুরী আর কোনো সংবাদ সম্মেলন করেননি।
একই অভিযোগে মাহী বি চৌধুরীর পাশাপাশি তার স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করলেও তিনি দুদকে হাজির হননি। তখন স্ত্রী অনুস্থ জানিয়ে মাহী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তিনি তার স্ত্রীকে ‘রিপ্রেজেন্ট’ করেন।
মাহী বি চৌধুরী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ পাচারের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহিভূর্ত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত বছরের জুন মাসে তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।