নারায়ণগঞ্জের প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়া থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে সিটি করপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের তল্লা এলাকা। এখানকার তল্লা বড় মসজিদের মাইক থেকেই গতকাল রোববার সকালে কিছু সময় পরপরই জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য এলাকাবাসীকে মসজিদে আসার আহ্বান জানানো হয়।
একটি রেললাইন ১১ নম্বর ওয়ার্ডকে ফতুল্লা ইউনিয়ন থেকে আলাদা করেছে। তল্লা বড় মসজিদের অদূরেই শুক্রবার রাতে ফতুল্লার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম তল্লার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে নামাজ আদায়ের সময় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৩৭ জন দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ২৬ জন মারা যান। মৃতের তালিকা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিম তল্লায় শোক আর আহাজারি বাড়ছিল।
সেখানে থমকে গেছে জীবনের সব কোলাহল। ঘরে ঘরে স্বজনহারাদের আর্তনাদ। অনেকে স্তব্ধ তাদের প্রতিবেশী হারিয়ে। তবে সংশ্নিষ্টরা বলছেন, চাইলেই এই মর্মান্তিক আর দুর্বিষহ দুর্ঘটনাটি এড়ানো যেত। পদে পদে অবহেলা আর গাফিলতির কারণেই অকালে প্রাণ গেছে এতগুলো মানুষের। এলাকাবাসী বলছেন, এটা দুর্ঘটনা নয়, অবহেলাজনিত ‘হত্যাকাণ্ড’।
সমকালের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, তল্লায় তিতাসের নামে অবৈধ কারবার মানেই স্থানীয় ঠিকাদার দীন মোহাম্মদ মোল্লা ওরফে দিলীপ ও তার সহযোগী শামছুল। এরই মধ্যে গা-ঢাকা দিয়েছেন দিলীপ।
দায়ী যারা : বায়তুস সালাত জামে মসজিদের দেয়াল ঘেঁষেই ‘বিসমিল্লাহ’ নামে একটি ছোট্ট মুদি দোকান। গতকাল সরেজমিন দোকানটির কর্ণধার ষাটোর্ধ্ব বজলুর রহমানের সঙ্গে কথা হয়। ঘটনার রাতে তিনি ওই মসজিদে এশার নামাজ পড়েছিলেন। বজলুর রহমান বলেন, সুন্নত পড়ে মসজিদ থেকে বেরিয়ে দোকানে এসে বসেছিলেন তিনি। নামাজে ৭০-৮০ জন মুসল্লি ছিলেন। অর্ধেকের মতো সুন্নত পড়ে বেরিয়ে আসেন। নামাজ শেষে দোকানে বসার পরপরই একটি বিকট শব্দ পান। তিন-চার সেকেন্ড শব্দটি স্থায়ী ছিল। দোকান বন্ধ করে মসজিদের দিকে দৌড়ে গিয়ে দেখেন ভেতরে আগুন। এদিক-সেদিক দৌড়াদৌড়ি করছেন মুসল্লিরা।
বজলুর রহমান বলেন, ‘এই মসজিদে নিয়মিত নামাজ পড়ি। অনেক দিন ধরেই নামাজ পড়তে গেলে গ্যাসের গন্ধ পেতাম। টাইলসের ফাঁক দিয়ে বুদবুদ করে গ্যাসও উঠত। এ সমস্যা কেউ গুরুত্ব সহকারে নেননি। এ কারণেই এই করুণ পরিণতি। ভাগ্যক্রমে আমি বেঁচে গেলেও এতগুলো পরিচিত মানুষকে আমরা হারালাম।’
স্থানীয় মোবারক হোসেন সমকালকে বলেন, মসজিদটি নিচু জায়গায়। একটু বেশি বৃষ্টি হলেই ভেতরে পানি আসে। আগে থেকে গ্যাসের গন্ধ থাকলেও সম্প্রতি তা আরও বেড়ে যায়। এক বছরের বেশি সময় আগে জেনারেল কোম্পানির ছয়টি এসি মসজিদে লাগানো হয়।
বায়তুস সালাত জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি আবদুল গফুর সমকালকে বলেন, মসজিদের পাশ ঘেঁষেই গ্যাসের দুটি লাইন গেছে। একটি পুরোনো লাইন ও আরেকটি নতুন। নতুন লাইনের বয়সও ১০ বছরের বেশি হবে। নতুন লাইন আসার পর এলাকার অনেক বাড়ি মালিক পুরোনো লাইন বাদ দিয়ে নতুন মেইন লাইন থেকে বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগ নিচ্ছেন। মসজিদ সংলগ্ন নতুন লাইন থেকেও গ্যাসের সংযোগ অনেকে বাসায় নিয়েছে। আর পুরোনো লাইনটি হয়তো ঠিকভাবে বন্ধ করা হয়নি। তাই দীর্ঘদিন পুরোনো লাইন থেকে গ্যাস লিক হয়ে টাইলসের নিচ দিয়ে মসজিদের ভেতরে আসতে থাকে।
এই সমস্যা দূর করতে মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি তিতাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। সেখান থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ চাওয়া হয়। এত টাকা মসজিদের ফান্ডে ছিল না। অল্প টাকা চাইলে হয়তো তা দিয়ে দ্রুত গ্যাস লিকেজ সমস্যা সমাধান করা যেত। ৫০ হাজার টাকা জোগাড় করে দেওয়ার আগেই দুর্ঘটনা ঘটে গেল। এক প্রশ্নের জবাবে সভাপতি জানান, মসজিদের পাশ ঘেঁষে যাওয়া দুটি লাইন বৈধ বলেই জানি। তবে কেউ কেউ বলছেন, একটি লাইন অবৈধ। এটার সত্যাসত্য সম্পর্কে নিশ্চিত নই। তবে স্থানীয় অনেকের ভাষ্য, মসজিদ কমিটিরও এ ঘটনায় দায় রয়েছে। দীর্ঘদিনের এই সমস্যার সমাধানে তারা আরও জোরালো ভূমিকা রাখতে পারতেন। ঘুষ দাবির প্রতিবাদে বিবৃতি বা মানববন্ধনও করা যেত।
তল্লায় তিতাস গ্যাস মানেই দিলীপ : তল্লার একাধিক বাড়ির মালিক জানান, অনেক বছর ধরেই বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকলেও তল্লায় গড়ে ওঠা অনেক নতুন নতুন বাড়িতে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। রাইজার ছাড়াই মেইন লাইন থেকে অনেক বাসায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে সংযোগ নিতে দেখা যায়। স্থানীয়রা জানায়, পুরো তল্লা এলাকায় বৈধ-অবৈধ সব গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার নেপথ্যে রয়েছেন পশ্চিম তল্লার শাহাবুদ্দিন মোল্লার ছেলে দীন মোহাম্মদ মোল্লা ওরফে দিলীপ। তবে বৈধ কাজের চেয়ে অবৈধ কাজেই তার হাত বেশি পাকা। এলাকায় তিনি ‘গ্যাস দিলীপ’ নামে পরিচিত। লোকজন তাকে তিতাসের ‘ঠিকাদার’ কেউ আবার ‘দালাল’ হিসেবে চেনে।
দিলীপের ব্যাপারে খোঁজ নিতে পশ্চিম তল্লায় তার বাড়িতে গেলে তার স্ত্রী জানান, তিনি ফতুল্লায় রয়েছেন। এরপর সেখানে দিলীপের ভাই শাহাবুদ্দিনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানালেন, তার ভাইয়ের আরেকটি বাসা রয়েছে। সেখানে দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে থাকেন তিনি। ওই বাসায় দিলীপ থাকতে পারেন। ওই বাসায় গেলেও দিলীপকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল নম্বরে ফোন করার পরও রিসিভ করেননি তিনি। এক পর্যায়ে তার মোবাইল বন্ধ করে রাখা হয়।
প্রতিহিংসার ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাড়ির মালিক জানান, কেউ অবৈধ গ্যাসলাইন নিতে চাইলে দিলীপের সঙ্গে প্রথমে চুক্তি হয়। লাইন সংযোগের পর বছরে ২-৩ বার এসে প্রতিটি বাড়ি থেকে টাকা আদায় করেন তিনি। পরে ওই টাকার ভাগ তিতাসের অসাধু কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছে দেন। এ কাজে দিলীপকে সহায়তা করেন শামছুল।
গ্যাস থেকেই দুর্ঘটনা : তদন্ত-সংশ্নিষ্টরা মনে করছেন, মসজিদে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কারণ তিতাসের ছিদ্র লাইন থেকে জমা গ্যাসের সঙ্গে বৈদ্যুতিক লাইনের স্পার্ক থেকে সৃষ্ট আগুনের সূত্রপাত। মসজিদের ভেতরে মিথেন গ্যাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। মসজিদের এসি বিস্ম্ফোরণ ঘটেনি। এসি বিস্ম্ফোরিত হলে তা ছিন্নভিন্ন হয়ে যেত। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল গতকাল মসজিদের সব এসি ও ট্রান্সমিটার থেকে বিদ্যুতের লাইন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে।
জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার পরও সেই রাতে মসজিদের ভেতরে ১৭-১৮ শতাংশ গ্যাস জমা ছিল। স্পোক ইজেক্টর দিয়ে সেই গ্যাস সরানো হয়। সেই রাতেই গ্যাসের লিকেজও বন্ধ করা হয়। এখন পর্যন্ত যেসব আলামত পাওয়া যাচ্ছে তাতে প্রমাণ হয় তিতাসের লাইন থেকে জমে থাকা গ্যাসই অগ্নিকাণ্ডের কারণ। মসজিদে বিদ্যুতের দুটি লাইন। একটি লাইনে বিদ্যুৎ হঠাৎ চলে যায়। তখন হয়তো অন্য লাইন থেকে বিদ্যুৎ পেতে সুইচ অন করা হয়েছে। তখন কোনো কারণে স্পার্ক হয়। সাধারণত স্পার্ক হলে বৈদ্যুতিক সুইচ বোর্ডে একটি বিশাল দাগ হয়। মসজিদের বৈদ্যুতিক বোর্ডে আমরা স্পার্কের সেই দাগ পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, গ্যাস থেকে আগুন লাগলে সাধারণত সেই আগুন থেকে খুব বেশি কালো ক্ষত হয় না। মসজিদে এত বড় ধ্বংসযজ্ঞ ঘটলেও সেখানে কালো ক্ষত নেই বললেই চলে। যতক্ষণ গ্যাস ছিল, ততক্ষণ আগুন জ্বলেছিল। আগুনের তাপে এসির ওপরের অংশ পুড়ে গেছে।
আগুন লাগার কারণ বের করতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের বোমা নিষ্ফ্ক্রিয়করণ দল। ওই দলের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ চৌধুরী বলেন, তিতাসের লাইন থেকেই গ্যাস জমে পুরো মসজিদটি গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়। গ্যাসের সঙ্গে আগুনের সংযোগ ঘটার পরই দুর্ঘটনা ঘটে। এর আগে ঢাকা, ময়মনসিংহসহ একাধিক জায়গায় গ্যাস থেকে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে।
মামলায় অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগ : মসজিদে বিস্ম্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। এজাহারে বলা হয়, অবহেলার কারণে এ ভয়াবহ বিস্ম্ফোরণ ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ফতুল্লা মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন এস আই হুমায়ুন কবির। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা দায়ী বলে উল্লেখ করা হয়। অবহেলার জন্য তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ, ডিপিডিসি, ভবন নির্মাণের সঙ্গে সংশ্নিষ্টরা ও মসজিদ কমিটি দায়ী থাকতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫টি সংস্থা পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনে যারা দোষী সাব্যস্ত হবে তারাই এ মামলার আসামি হবে। এ মামলায় তাদের আইনের আওতায় নেওয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম বলেন, পুলিশের তদন্তেও প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে তিতাস গ্যাসের লাইন থেকেই সেখানে গ্যাস জমেছিল। তাই অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে হত্যা মামলা করা হয়। তদন্তে সংশ্নিষ্টদের গাফিলতির বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে।
অভিভাবকহীন জনপদ : পশ্চিম তল্লার ওই এলাকাটি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সীমানা লাগোয়া ফতুল্লা ইউনিয়নভুক্ত। মামলাজনিত জটিলতার কারণে ২৮ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার এই ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন হচ্ছে না। সর্বশেষ ১৯৯২ সালে ওই ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইউনিয়নবাসী সব ধরনের সুবিধাসহ নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত রয়েছে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় এলাকাবাসীর ভোগান্তিরও শেষ নেই। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য তাদের নিজস্ব লোক দিয়ে ১৯৯৬ সালে ইউনিয়নের পক্ষে ও বিপক্ষে হাইকোর্টে দুটি মামলা দায়ের করান। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার ফলে এখনও নির্বাচন করা যাচ্ছে না। একটি পক্ষ চায়, এলাকাটি ইউনিয়ন হিসেবে থাকুক। আরেক পক্ষের চাওয়া এটি সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত হোক। এমন রেষারেষির কারণে এলাকার উন্নয়নও ব্যাহত হচ্ছে। এলাকার অধিকাংশ রাস্তাঘাট অপ্রশস্ত। নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত অধিকাংশ লোকের বসবাস সেখানে।
গ্যাসের সংযোগ না থাকায় দুর্ভোগ : দুর্ঘটনার পর থেকে গতকাল পর্যন্ত তল্লা এলাকায় গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে শতশত মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। মসজিদ সংলগ্ন বাড়ির গৃহিণী শাহনাজ বেগম বলেন, দুর্ঘটনার পর গ্যাস না থাকায় মাটির চুলায় কাঠ দিয়ে রান্না করে কোনোমতে খাওয়া-দাওয়া সারছেন তারা। আবার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে। এলাকার আরেক বাসিন্দা লিজা বেগম বলেন, কারও বাড়িতে অবৈধ লাইন থাকলে তা চিহ্নিত করে বিচ্ছিন্ন করা হোক। যাদের বৈধ লাইন আছে তাতে দ্রুত সংযোগ দেওয়া দরকার।
পশ্চিম তল্লা এলাকার একটি টিনশেড বাড়িতে ভাড়া থাকেন অটোরিকশা চালক মো. সুজন। তিনি জানান, প্রধান লাইন থেকে একটি সংযোগ টেনে তাদের বাড়িতে গ্যাস এনে দিয়েছেন বাড়ির মালিক মজিবর মিয়া।
ঘড়ির কাঁটা ঠিকঠাক চলছিল : সরেজমিনে দেখা যায়, মসজিদের ভেতরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে পোড়া পোশাক-আশাক। কারও স্যান্ডেলও পড়ে ছিল। সিলিং ফ্যানের পাখা বাঁকা হয়ে আছে। ইমাম যেখানে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন তার পাশের দেয়ালের ঘড়িটি ঠিকঠাক চলছিল। ঘড়ির কাঁটার শব্দ দেখে কে বলবে দু’দিন আগেই কী ভয়াবহ দুর্ঘটনা মসজিদের ভেতরে ঘটে গেছে। দুর্ঘটনায় মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিন দু’জনই মারা গেছেন।
মসজিদের প্রধান গেট বন্ধ করে রেখেছেন পুলিশ সদস্যরা। উৎসুক জনতা ও স্বজনহারানো কেউ কেউ জানালার বাইরে থেকে মসজিদের ভেতরের দৃশ্যপট দেখছিলেন। মো. আলমগীর হোসেন অপলক চোখে মসজিদের জানালার লোহার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি জানান, দুর্ঘটনায় তার দুই ভাতিজা জুবায়ের ও সাব্বিরকে হারিয়েছেন তিনি। তারা তিন ভাই একসঙ্গে নামাজ পড়ছিল। ছোট ভাতিজা ইয়াছিন ফরজ নামাজ পড়েই বেরিয়ে যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে যায়।