ভোরের আলো ডেষ্ক: দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক পদ থেকে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে অব্যাহতি দেওয়ার পর ফের প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে হেফাজতে ইসলামের অন্তঃকোন্দল। হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফী ও মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীর অনুসারীরা এ ইস্যুকে কেন্দ্র করে নেমে পড়েছেন ‘ভার্চুয়াল যুদ্ধে’। একে অপরকে ঘায়েল করতে নেমে পড়েছেন প্রকাশ্যে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিচ্ছেন স্ট্যাটাস। তবে হাটহাজারী মাদ্রাসার বিরোধ হেফাজতে ইসলামে প্রভাব ফেলবে না বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। তার মতে, ‘হাটহাজারী মাদ্রাসা ও হেফাজতে ইসলাম দুটো একেবারে ভিন্ন বিষয়। হাটহাজারী মাদ্রাসার সঙ্গে হেফাজেত ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই হাটহাজারী মাদ্রাসার সহযোগী পরিচালক নির্বাচনের প্রভাব হেফাজতে ইসলামে খুব একটা পড়বে না।’ তিনি বলেন, ‘যারা বিজ্ঞ আলেমদের সম্মানহানি করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিচ্ছে তারা ভুল করছে। এ ধরনের স্ট্যাটাস কোনোভাবে কাম্য নয়।’ তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে হেফাজতে ইসলামের একাধিক নেতা বলেন, ‘হাটহাজারী মাদ্রাসার সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের ওতপ্রোত সম্পর্ক। সে জন্যই যিনি হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক তিনিই হবেন আল্লামা আহমদ শফী পরবর্তী হেফাজতে ইসলামের আমির। এ ছাড়া বেফাক, আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যানসহ কমপক্ষে তিন শতাধিক নেতৃত্ব দেবেন। হাটহাজারী মাদ্রাসার সহকারী পরিচালকসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির কারণে আহমদ শফীর উত্তরসিূর হওয়ার দৌড় থেকে ছিটকে গেলেন জুনায়েদ বাবুনগরী। পক্ষান্তরে হাটহাজারী মাদ্রাসার সহযোগী পরিচালক হওয়ায় শফীর উত্তরসূরি হওয়ার দৌড়ে সবার চেয়ে যোজন-বিয়োজনে এগিয়ে গেলেন আল্লামা শেখ আহমদ। অনুমোদিতভাবে শেখ আহমদই হচ্ছেন কওমিদের আগামীর কান্ডারি। জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে স্নায়ুযুদ্ধ চলছে হেফাজতে ইসলামের দুই শীর্ষ নেতা আমির আহমদ শফী ও মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীর মধ্যে। কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ ডিগ্রি দাওরা হাদিসকে মাস্টার্সের মর্যাদার স্বীকৃতিকে কেন্দ্র করে দুই নেতার সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয়। এরপর থেকে দীর্ঘদিন তারা নানান ইস্যুতে পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন ও বিবৃতি দিয়ে আসছেন। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে গত রমজানে পাঁচ ওয়াক্ত ও জুমার নামাজের সময় মসজিদে উপস্থিতি সীমিত করার পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে বিবৃতি ও পাল্টা বিবৃতি দেন এ দুই আলেম। গত মাসের শেষের দিকে হাটহাজারী মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন নিয়ে প্রকাশ্যে আসে তাদের মতবিরোধ। সর্বশেষ গত বুধবার হাটহাজারী মাদ্রাসার মজলিসে শূরার বৈঠকের পর চরম আকার ধারণ করে তাদের দ্বন্দ্ব। শূরার বৈঠকের পর হাটহাজারী মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ যাবতীয় কর্মকান্ড থেকে জুনায়েদ বাবুনগরী অব্যাহতি নিয়েছেন এমন মর্মে বিবৃতি দিয়েছে। এরপর রাতেই পাল্টা বিবৃতি দিয়েছেন জুনায়েদ বাবুনগরী। ওই বিবৃতিতে তিনি বলেন, মাদ্রাসার সহকারী পরিচালকের পদ থেকে আমি পদত্যাগ করতে চাইনি।