ভোরের আলো রিপোর্ট, ঢাকা অফিস: প্রায় ছয় মাস আগে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে পরিচয়। এরপর গভীর প্রণয়। সেই সূত্র ধরে শারীরিক সম্পর্কও হয় একাধিকবার। প্রথমবার ভালোভাবে প্রেমিকাকে ফেরত পাঠালেও দ্বিতীয়বার লাভলী আক্তারকে (৩০) ফিরতে হয় বিবস্ত্র লাশ হয়ে। মৃতদেহ অজ্ঞাত হয়ে পড়ে থাকে প্রায় ১০ ঘণ্টা।
লাভলী আক্তারের সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক করলেও বিয়ে করতে নারাজ লম্পট প্রেমিক রাজাবালী (৪৫)। হত্যাকাণ্ডের পর স্বাভাবিকভাবেই নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিল খুনি।
তবে চতুর রাজাবালী রেহায় পায়নি পুলিশের কাছ থেকে। হত্যাকাণ্ডের মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তাকে হাতকড়া পড়ায় ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক রাজাবালী হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিবির ওসি শাহ কামাল আকন্দ। বলেন, বিয়ে করতে চাপ দেয়ার কারণেই ওই গার্মেন্ট কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। অভিযুক্তকে আদালতের মাধ্যমে জেলা হাজতে পাঠানো হয়েছে। রাজাবালীর স্ত্রীসহ তিন সন্তান রয়েছে। প্রায় ২০ বছর আগে সে বিয়ে করেছে।
রাজাবালীর বরাত দিয়ে ডিবির ওসি আরও জানান, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ডেকে নিয়ে আসে ঘাতক রাজাবালী। পরে শারীরিক সম্পর্কও করে। এরপর বিয়ের জন্য চাপ দেয় লাভলী। এতে রাজী হয়নি রাজাবালী। এসময় আত্মহত্যার চেষ্টা করে ওই গার্মেন্ট কর্মী। পরে রাত দুইটার দিকে কৌশলে পেছন থেকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে রাজাবালী। হত্যা শেষে বিবস্ত্র করে লাশ শ্রীপুর গ্রামের একটি কচুক্ষেতে ফেলে রাখে সে।
ওসি কামাল আকন্দ বলেন, পরদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয়রা একটি অজ্ঞাতনামা লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। এসময় একটি ব্যানিটি ব্যাগও উদ্ধার করা হয়। ব্যানিটি ব্যাগের ভেতরে কাগজে লিখা একটি মোবাইল নাম্বারের সূত্র ধরে লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। এরপরদিন নিহতের পিতা ফলবাড়িয়া থানায় একটি মামলা করেন।
লাভলী আক্তারের আগেও একটি বিয়ে হয়েছিল। স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় বছর দুয়েক ধরে গাজীপুর কোনাবাড়িতে বাসা ভাড়ায় থেকে গার্মেন্টে কাজ করতো। ওই সংসারে সাত বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। তার বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতি থানার ছিন্নাই পাড়া গ্রামে বলেও জানান ডিবির ওসি।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আহমার উজ্জামান জানান, এ নির্মম হত্যাকাণ্ডকে গুরুত্বের সাথে আমলে নিয়ে লাশের পরিচয় দ্রুত শনাক্ত এবং খুনিকে অল্প সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করতে নির্দেশ দেয়া হয়। সে নির্দেশ মোতাবেক ফুলবাড়িয়া থানা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ হত্যাকারীকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।