‘আমাদের লক্ষ্য মানুষের পাশে থাকা। কোভিড ১৯ এর মতো প্রাণঘাতী রোগের যত ওষুধ আসবে, আমরা সাধ্যমতো সবগুলোই উৎপাদন করে যাব। এই দুর্দিনে দেশের মানুষের সঙ্গে থেকে তাদের সেবা করে যাব, যতটা পারি।’
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকর ওষুধ রেমডেসিভির উৎপাদন সম্পন্ন করার পর দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে সাক্ষাতকারে এভাবেই নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন দেশের খ্যাতনামা ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিমিন হোসেন।
এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড গত ৩০ বছর ধরে ওষুধ উৎপাদন করছে। প্রতিষ্ঠানটি দেশের বাইরে ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশের ৩০টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করে আসছে। সিমিন হোসেনের কাছে জানতে চাইলাম-
করোনার ওষুধ রেমডেসিভির আপনারা উৎপাদন করবেন, এই সিদ্ধান্ত কবে নিলেন?
সিমিন হোসেন: মার্চের মাঝামাঝি সময়ে আমরা এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এটা যেহেতু একটি ইনজেকশন, সে কারণে খুবই স্পর্শকাতর ছিল। এর ধাপগুলো খুব জটিল। কাঁচামাল সরবরাহকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কাঁচামাল প্রাপ্তি নিশ্চিত হওয়ার পরই আমরা উৎপাদনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এর আগে, জাপানি ওষুধ এভিগানও আপনারা উৎপাদনের চেষ্টা করছিলেন বলে জানা গিয়েছিল। সেটার কোনো সংবাদ আছে?
সিমিন হোসেন: এভিগান উৎপাদনের বিষয়েও আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। অনুমোদন পেলে আমরা যেকোনো সময় এটাও বাজারে আনতে পারব।
রেমডেসিভিরের দাম নিয়ে মানুষের ভেতরে আলোচনা আছে। দাম কেমন হবে?
সিমিন হোসেন: পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকার মতো দাম হতে পারে। দুই ধরনের ডোজ আছে– পাঁচ দিনের ও ১০ দিনের। ১০ দিনের ডোজে ৫৫ হাজার টাকার মতো এবং ৫ দিনের ডোজে ৩০ হাজার টাকার মতো হতে পারে।
ওষুধ উৎপাদন করছেন, হাসপাতাল বা সরকারি সংস্থা থেকে সাড়া পেয়েছেন বা পাচ্ছেন?
সিমিন হোসেন: অনেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। দেশের অনেক হাসপাতালে এখনো করোনা আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগী আছেন। তাদের জন্য চিকিৎসকরা এ ওষুধ ব্যবহার করতে চান। তারা আমাদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করছেন। কিন্তু আমরা সরকারের অনুমোদনের বাইরে কাউকে এটা দিতে পারব না।
এটা কবে নাগাদ বাজারে আনতে পারবেন?
সিমিন হোসেন: আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এখন ওষুধ প্রশাসনের কাজ। তারা অনুমোদন দিলে আগামী সপ্তাহ থেকে আমরা এটা বাজারে সরবরাহ করতে পারব বলে আশা করি।
সারাদেশেই এই ওষুধ সহজে পাওয়া যাবে?
সিমিন হোসেন: এটা আবারও বলছি যে, ওষুধ প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া এটা আমরা কাউকে দিতে পারব না। তারা অনুমোদন দিলে আমরা খুব কম সময়ে এটা সরবরাহ করতে পারব। অবশ্যই দেশের সব মানুষের জন্যেই তো আমরা ওষুধ উৎপাদন করি।
ভবিষ্যতে করোনার অন্য ওষুধ আসলেও কি এসকেএফ সেটা বা সেগুলো উৎপাদন করবে?
সিমিন হোসেন: করোনার যত ওষুধ আসবে, দেশের মানুষের জন্যে আমরা সবই উৎপাদনের চেষ্টা করব। শুধু বাণিজ্য নয়, আমরা চাই মানুষের পাশে থাকতে। সেই আকাঙ্ক্ষা থেকে বলছি, দুনিয়ার যেখানে করোনার যত ওষুধ আসবে, আমরা সবই দেশের মানুষের জন্যে আনার চেষ্টা করে যাব।