ভোরের আলো ডেষ্ক: চীনের উহান থেকে উৎপত্তি হওয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্তের তালিকায় যুক্ত হচ্ছেন বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ব্রিটেনের প্রিন্স চার্লস।
এর পর আক্রান্ত হয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তারপর দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ক্রিস হুইটির শরীরেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা দিয়েছে।
তারপর করোনায় হানা দিয়েছে রাণীর উপরও। রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে ব্রিটিশ রাজপরিবার বাকিংহাম প্যালেসের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
এছাড়া আমেরিকার ৫ জন কংগ্রেসম্যানও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে পশ্চিমা একাধিক গণমাধ্যম নিশ্চিত করেছে। এই তালিকায় রয়েছেন পেনসিলভানিয়ার রিপাবলিকান নেতা মাইক কেলি।
আরো আছেন সাউথ ক্যারোলিনার ডেমোক্রেট নেতা ও সিনেটর জো কানিংহাম, ডেমোক্রেট সদস্য বেন ম্যাক অ্যাডামস। ফ্লোরিডার রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান মারিও দিয়াজ বালার্ট এবং রিপাবলিকান প্রভাবশালী সিনেটর মিট রমনিও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
কয়েকটি দেশেও প্রভাবশালীদের করোনায় আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাস্প বিশ্ব নেতাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে জানা যায়।
বিশ্বের প্রভাবশালী নেতারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরে জনমনে কিছু প্রশ্নের উদ্রেক হচ্ছে-
সর্বোচ্চ সতর্ক নিরাপত্তা ও সচেতন থাকার কথা যাদের তারা কি করে আক্রান্ত হলেন? ব্রিটেনের রাণী রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ছাড়া কারো সংস্পর্শে আসেন না। তার সাথে হাত মেলানো বা কাছাকাছি আসার জন্যও প্রটোকল মেনে চলতে হয়।
ব্রিটেনে করোনা ছড়ানোর আগে রাণী কোনো দেশ সফর বা তেমন কারো সংস্পর্শে এসেছিলেন কিনা সে বিষয়েও তাৎক্ষণিকভাবে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তাহলে তিনি কি করে আক্রান্ত হলেন? তিনি কি আক্রান্ত প্রিন্স এর সংস্পর্শে এসেছিলেন? রাণীর আগে প্রিন্সই বা কি করে আক্রান্ত হলেন? এমন প্রশ্ন জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে।
দেশটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ঘটনা সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠার জন্ম দিয়েছে। তাহলে তারা আক্রান্ত হলেন কি করে? শুধু স্পর্শের মাধ্যমে করোনা ছড়ায়, তথ্যটি কি তাহলে প্রশ্নবিদ্ধ হতে শুরু করেছে?
বর্তমান পরিস্থিতি ছাড়াই যারা সামাজিক দূরত্ব এড়িয়ে চলেন, তারা এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলেননি এমনটি বিশ্বাস করাও বোকামি।
তবে কি করে তারা আক্রান্ত হলনে? বিষয়টি স্পষ্ট করতে রাজপরিবার এক বিবৃতিতে জানায়, রাজকীয় দায়িত্বের অংশ হিসেবে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বেশ কিছু রাজকীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন প্রিন্স অব ওয়েলস।
এসব অনুষ্ঠান থেকে কোনভাবে তার শরীরে করোনার সংক্রমণ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রিন্স চার্লস স্ত্রী ডাচেস অব কর্নওয়ালকে নিয়ে স্কটল্যান্ডে আইসোলেশনে আছেন। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের করোনায় আক্রান্তের খবর প্রকাশের পর থেকেই রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের করোনায় আক্রান্তের সম্ভাবনা নিয়ে আগেই গুঞ্জন উঠেছিল। কারণ প্রতি সপ্তাহেই রানির সঙ্গে সাপ্তাহিক বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী জনসন।
তবে এমন ভয়াল পরিস্থিতির মাঝে পূর্ব সতর্কতার পরও রাণীর আক্রান্ত হবার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে অনেককেই। সতর্কার ধাপ আরো বৃদ্ধির প্রয়োজন হতে পারে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।