বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ হলেন স্প্যানিশ একজন নারী। তার নাম মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরা। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছেন। তার বর্তমান বয়স ১১৫ বছর। বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) এ খবর জানিয়েছে ইন্ডিয়ান টাইমস। বুধবার (১৮ জানুয়ারি) গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের একজন পরামর্শদাতা এ কথা বলেছেন।
জেরন্টোলজির সিনিয়র কনসালট্যান্ট রবার্ট ডি ইয়ং বলেন, ১১৮ বছর বয়সী ফরাসি সন্ন্যাসী লুসিল র্যান্ডনের মঙ্গলবার মৃত্যুর পর মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরা এ খেতাব গ্রহণ করেছেন বলে ধারণা করা হয়।
জেরন্টোলজি রিসার্চ গ্রুপের সুপারসেন্টেনারিয়ান রিসার্চ ডাটাবেসের ডিরেক্টর ইয়াং আরও বলেন, প্রমাণাদি পরীক্ষা এবং ব্রানিয়াস মোরেরার পরিবারের সাক্ষাৎকার নেওয়ার পর গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসকে অবশ্যই আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সংবাদমাধ্যম এএফপিকে পাঠানো একটি ই-মেলে তিনি লিখেছেন, আমরা জানি কি হতে পারে, তবে এ মুহূর্তে তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। বানিয়াস মোরেরা ১৯১৮ সালের ফ্লু, দুটি বিশ্বযুদ্ধ এবং স্পেনের গৃহযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করেছেন। সাক্ষাৎকারের জন্য তাকে পাওয়া যায়নি। উত্তর-পূর্ব স্পেনের ওলোট শহরের সান্তা মারিয়া দেল তুরা নার্সিং হোমে ব্রানিয়াস মোরেরা গত দু’দশক ধরে বসবাস করছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তিনি সুস্থ অবস্থা রয়েছেন এবং তাকে নিয়ে যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে এজন্য তিনি বিস্মিত এবং কৃতজ্ঞ।
বানিয়াস মোরেরার কনিষ্ঠ কন্যা, ৭৮ বছর বয়সী রোসা মোরেট তার মায়ের দীর্ঘায়ুকে ‘জেনেটিক্স’ এর কারণ বলে জানিয়েছেন। বুধবার স্থানীয় কাতালান টেলিভিশনকে মোরেট বলেন, তিনি কখনো হাসপাতালে যাননি। তার কোনো হাড় ভাঙেনি, তিনি ভালো আছেন।
বানিয়াস মোরেরা তার পরিবার মেক্সিকো থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসার পরপরই ৪ মার্চ, ১৯০৭-এ সান ফ্রান্সিসকোতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবার ১৯১০ সালে নিউ অরলিন্সে চলে আসে। যেখানে তার বাবা ‘মারকিউরিও’ নামে স্প্যানিশ ভাষায় একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করেন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সমগ্র পরিবার ১৯১৫ সালে তাদের জন্মস্থান স্পেনে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৩১ সালে স্পেনের ১৯৩৬-৩৯ গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পাঁচ বছর আগে তিনি একজন ডাক্তারকে বিয়ে করেছিলেন। তার স্বামী ৭২ বছর বয়সে মারা না যাওয়া পর্যন্ত এ দম্পতি চার দশক ধরে একসঙ্গে বসবাস করেছিলেন। তার তিনটি সন্তান রয়েছে, যার মধ্যে একজন ইতোমধ্যেই মারা গেছেন, ১১ জন নাতি-নাতনি এবং তাদের ঘরের ১১ জন প্রনাতি-প্রনাতনি রয়েছে।
লা ভ্যানগার্ডিয়ার নামে বার্সেলোনা ভিত্তিক একটি পত্রিকাকে ২০১৯ সালে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, আমি অসাধারণ কিছু করিনি, আমি একমাত্র বেঁচে থেকেছি।