বিয়ের ক্ষেত্রে বরের শিক্ষাগত বা পেশাগত যোগ্যতা মূখ্য হলেও ভারতের এক গ্রামে ভিন্ন ধর্মী এক ব্যাপার যোগ্যতার মাঠকাঠি হিসেবে ধরা হয়। সেটাতে পাশ করতে না পারলে বিয়ে তো দূরে থাক, হবু বরকে উল্টো এক লাখ টাকা জরিমানা দিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়।
শুনতে আশ্চর্য লাগলেও গুজরাটের গান্ধীনগর জেলার কালোল এলাকার পিয়াজ গ্রামে বিয়ের ক্ষেত্রে এমনই ঘটনা ঘটছে। জানা গেছে, বিয়ে বা বাগদানের আগে হবু বরের মুখে গন্ধ শুঁকে মেয়ের বাবা, ভাই ও গ্রামের কমপক্ষে ২৫ জন পুরুষ সদস্য। কিন্তু বরের মুখে যদি মদের গন্ধ পাওয়া যায় তাহলে বিয়ে বাতিল হয়ে যায়। আবার বিয়ের কথাবার্তা ঠিকঠাক হওয়ার পর বিয়ের দিন যদি হবু বরের মুখে মদের গন্ধ পাওয়া যায় তাহলে হবু বরকে জরিমানাও দিতে হয়। আর যদি গন্ধ না থাকে তাহলে ওই গ্রামের মেয়েকে বিয়ে করার অনুমতি পায় বর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পিয়াজ গ্রামে মূলত ঠাকোর সম্প্রদায়ের মধ্যেই এভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়। কয়েক বছর আগে মদ খেয়ে ওই গ্রামের ১৫ জন যুবক মারা যান। তারপর থেকেই এ পদ্ধতি চালু করা হয়।
এ বিষয়ে ঠাকোর সম্প্রদায়ের শরপঞ্জ রমেশ ঠাকোর বলেন, ‘মদ্যপ স্বামীর কারণে অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট হয়। এ কারণে গ্রামের সবাই মিলে বিয়ের আগে কোনো পুরুষ মদ্যপায়ী কিনা তা পরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছি।’
তিনি জানান, এ ধরনের উদ্যোগের ফলে অনেক পুরুষই বিয়ের আগে মদ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি আরও জানান, ১২ থেকে ১৩ বছর বয়সে মদ্যপান শুরু করার কারণে তাদের সম্প্রদায়ে অনেক ছেলেই অল্প বয়সে মারা গেছে।
রমেশ ঠাকোর জানান, পুলিশ অভিযানে এলে বেশিরভাগ সময় মদ ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যায়। গ্রামবাসীর ধারণা, পুলিশ ও মদ ব্যবসায়ীদের মধ্যে কোনো ধরনের যোগসূত্র রয়েছে। রমেশ ঠাকোর বলেন, ‘ পুলিশের ওপর ভরসা না করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা নিজেরাই বর মদ্যপ কিনা তা পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
সদ্য বিয়ে করা ২১ বছরের এক যুবক জানান, আগে তিনি প্রতিদিন মদ খেতেন। কিন্তু অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে তার কয়েকজন বন্ধু মারা যাওয়ার পর থেকেই তিনি এর ভয়াবহতা বুঝতে পারেন। তিনি আরও জানান, বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি মদ্যপান ছাড়ারও সিদ্ধান্ত নেন।