স্ট্রেলিয়ার শীর্ষ ‘তরুণ ধনী’র তালিকায় বাংলাদেশের ৩৮ বছর বয়সী আশিক আহমেদের অবস্থান ২৫ নম্বরে। ব্যবসা ও অর্থ বিষয়ক দৈনিক ‘অস্ট্রেলিয়ান ফিন্যান্সিয়াল রিভিউ’ বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দেশটির শীর্ষ ‘তরুণ ধনী’দের তালিকা প্রকাশ করেছে।
মাত্র ১৭ বছর বয়সে আশিক পাড়ি জমিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ায়। এরপর মেলবোর্নের একটি ফাস্ট ফুড চেইনে বার্গার ফ্লিপ করার কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। এখন তার সম্পত্তির পরিমাণ ১৪৮ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকারও বেশি)।
আশিকের আগ্রহ ছিল গণিত এবং বিজ্ঞানে। গণিত, বিজ্ঞান ও কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা-চ্যালেঞ্জের সমন্বয়ে ২০০৮ সালে সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ‘ডেপুটি’ নামে একটি সফটওয়্যার তৈরি করেন তিনি। ঘুরে যায় তার ভাগ্যের চাকা।
‘ডেপুটি’ এমন একটি সফটওয়্যার যা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের রোস্টার (কাজের সূচি) তৈরি এবং বেতন প্রদানের হিসাবের রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত সহজ করে দেয়। বর্তমানে ১ লাখ ৮৪ হাজার প্রতিষ্ঠান ‘ডেপুটি’ সফটওয়্যার ব্যবহার করছে। এদের মধ্যে নাসা ও কান্টাসের (অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বড় এয়ারলাইন্স) নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
অস্ট্রেলিয়ান গণমাধ্যম এসবিএস নিউজের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে আশিক বলেছেন সফটওয়্যার তৈরির পেছনের ঘটনাগুলো। আশিক বলেন, “আমি নিজে ঘণ্টাভিত্তিক বেতনে কাজ করতাম। সেসময় আমি দেখেছি, যারা এভাবে কাজ করেন, হিসাব রাখার ক্ষেত্রে তাদেরকে বেশ কিছু সমস্যায় পড়তে হয়। আবার মালিকপক্ষের যারা কাজের হিসাব রাখেন, তাদেরও বেশ কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। এই সমস্যা সমাধান করা যায় কীভাবে সে বিষয়টি আমার মাথায় কাজ করতে থাকে। তখন গণিত, বিজ্ঞান ও কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা-চ্যালেঞ্জের সমন্বয়ে সমস্যা সমাধানের একটি গাণিতিক উপায় আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করি এবং শেষ পর্যন্ত আমরা ‘ডেপুটি’ নামের এই সফটওয়্যারটি তৈরি করতে সক্ষম হই।”
শীর্ষ ‘তরুণ ধনী’র তালিকায় স্থান পাওয়ার বিষয়ে আশিক বলেন, “এটা আমার জন্য দারুণ একটি ব্যাপার। তবে আমি কখনোই শুধু অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করিনি, কখনো করবোও না। বরং শুরু থেকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল সমস্যার সমাধান করা।”