বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (ফিফা) সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেছেন, ফুটবলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অনেক উজ্জ্বল। তাদের খেলাটির প্রতি আবেগ আছে। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশে ফুটবলের কাছে ক্রিকেট পাত্তাই পাবে না।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে ফিফা সভাপতিকে প্রশ্ন পর্বে একজন সাংবাদিক বলেন, ক্রিকেট বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা।
ওই সাংবাদিকের কথা শেষ হতে না হতেই ফিফা সভাপতি ইনফান্তিনো বলেন, ক্রিকেট বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা এটা আমি মনে করি না।
ফিফা সভাপতি বলেন, ফুটবল খেলে বিশ্বের ২১১টি দেশ। ক্রিকেট খুব বেশি দেশ খেলে না। ১০-১১টি দেশ খেলে, এখানে ভালো করার সম্ভাবনা এমনিতেই বেড়ে যাবে। হ্যাঁ, বুঝতে পারছি ক্রিকেটে বাংলাদেশের অনেক সাফল্য আছে। কিন্তু ক্রিকেট তো সারা দুনিয়ায় হাতে গোনা কিছু দেশ খেলে।
ইনফান্তিনো আরও বলেন, ক্রিকেট অনেক কঠিন খেলা। ক্রিকেট খেলে এমন দেশের সংখ্যা কত, ১০-১১! কিন্তু আপনি কি বলতে পারবেন ক্রিকেট খেলাটা সবাই বোঝে? ফুটবল সবাই বোঝে, এটি সহজেই খেলা যায়। বল নিয়ে আপনি খেলাটা খেলছেন, উল্লাস করছেন। ফুটবল হৃদয় দিয়ে খেলা যায়।
মঙ্গলবার কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ২০২২ বিশ্বকাপ ও ২০২৩ এশিয়া কাপের বাছাইপর্বের ম্যাচে র্যাংকিংয়ে ৮৩ ধাপ এগিয়ে থাকা ভারতকে কাপিঁয়ে দিয় ১-১ গোলে ড্র করে বাংলাদেশ।
ভারতের মাঠে অসাধারণ ফুটবল খেলা প্রসঙ্গে ফিফা সভাপতি বলেন, বাংলাদেশে আমি ফুটবল নিয়ে যে উন্মাদনা দেখলাম বিশেষ করে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের পর, তাতে আমি নিশ্চিত বাংলাদেশ অনেক ওপরে যাবে। এভাবে খেলতে পারলে নিশ্চিত হয়েই বলছি, বাংলাদেশে ক্রিকেট পাত্তাই পাবে না।
বৃহস্পতিবার ভোররাতে ঢাকা এসে সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত শেষে বাফুফে ভবন পরিদর্শনে যান ইনফান্তিনো। বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে। এই সফরে ইতিবাচক মনোভাব নিয়েই দেশত্যাগ করবেন বলে জানালেন ফিফা প্রেসিডেন্ট, ‘দেশটা ফুটবল সম্পর্কে অল্পবিস্তর জানে, কিন্তু এটা নিয়ে তেমন উচ্ছ্বাস নেই এখানে, এখানে আসার আগে এমন একটা ধারণাই ছিলো। কিন্তু এসে পুরোপুরি ভিন্ন এক পরিস্থিতিই দেখলাম। এখন যাবার মূহুর্তে দেশটা সম্পর্কে ইতিবাচক এক মনোভাব নিয়েই যাচ্ছি।’
বয়সভিত্তিক ও মেয়েদের ফুটবলে উন্নয়নে জোর দেয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ফিফা বস বলেন, ‘মেয়েদের ফুটবলে বিনিয়োগ করতে আমি উৎসাহিত করি। কেননা, মেয়েদের ফুটবলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা এখনও অতটা কঠিন নয়। ইউরোপে ছেলেদের ফুটবল যতটা কাঠামোবদ্ধ, মেয়েদের ফুটবল ততটা নয়। তাই মেয়েদের ফুটবলে তুলনামূলক দ্রুত সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছানোর সুযোগ আছে। আর আমি নিশ্চিত বাংলাদেশ তা পারবে।‘
ফিফা সভাপতি এরপর সংবাদ সম্মেলন শেষে আজই লাওসের উদ্দেশ্যে ব্যক্তিগত বিমানে দেশ ছাড়েন।