জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় যুক্তরাজ্যে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য হচ্ছেন নারীরা। কাউকে-কাউকে রাস্তায় বসেই খদ্দেরের চাহিদা মেটাতে হচ্ছে। এই নারীরা এতোটাই ঝুঁকিতে আছেন যে, খদ্দেররা তাদের সঙ্গে সহিংস আচরণ কিংবা নিপীড়নমূলক আবদার করলেও তারা না-করতে পারছেন না। জীবন বাঁচাতে তাদের অন্যায় চাহিদাও পূরণ করতে হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যে রেকর্ড পরিমাণ মূল্যস্ফীতি ঘটেছে। মানুষের মজুরিও কমে গেছে। জ্বালানিমূল্য ও বিল ক্রমে বাড়তে থাকায় তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে গ্রাহকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। চলতি গ্রীষ্মে দ্য ইংলিশ কালেকটিভ অব প্রসটিটিউটসে সহায়তা চেয়ে কল আসা এক-তৃতীয়াংশ বেড়েছে।
সম্ভাব্য আইন মেনে নিজেদের নিরাপদ রেখে পতিতাবৃত্তিতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে উত্তর লন্ডনভিত্তিক বিভিন্ন হেলপলাইন থেকে।
দ্য ইংলিশ কালেকটিভ অব প্রসটিটিউটসের মুখপাত্র নিকি অ্যাডামস বলেন, জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্নভাবে নারীরা পতিতাবৃত্তির দিকে যাচ্ছেন। রাস্তা, বাড়ির আঙ্গিনা ও অনলাইনে তারা যৌনবৃত্তিতে বাধ্য হচ্ছেন। আমরা দেখছি, মানুষ আর কোনো উপায় না-পেয়ে এই কাজে আসতে বাধ্য হচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, এর অর্থ হচ্ছে, সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে আমরা তাদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হচ্ছি। এতে পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিতদের অবস্থার অবনতি ঘটছে। নারীদের জীবন ঝুঁকিতে পড়ে যাচ্ছে।
চার সন্তানের এক মা বলেন, সরকারের পুরোনো ব্যবস্থার সুবিধাভোগী থেকে ইউনিভার্সাল ক্রেডিটে যাওয়ার কারণে হাজার হাজার পাউন্ড হারিয়েছেন তিনি। কর্মসংস্থান হারিয়ে তিনি বিভিন্ন বিল দিতে পারছিলেন না। যে কারণে রাস্তায় বসেই তাকে পতিতাবৃত্তি করতে হয়েছে।
তিনি জানান, বাড়ির ভেতরে বসে পতিতাবৃত্তির করার মতো অবস্থা তার ছিল না। যে কারণে রাস্তায় নেমে আসতে হয়েছে তাকে। কিন্তু বাড়িতে বসে কাজ করতে পারা খুবই নিরাপদ।
এই কাজ থেকে আসা অর্থই এখন তার জীবনরক্ষাকারী বলে মন্তব্য করে ওই নারী জানান, বর্তমান পরিস্থিতির কথা তার সাবেক নিপীড়ক জীবনসঙ্গী যদি জানতে পারেন, তাহলে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে চেষ্টা করবেন।
নিকি অ্যাডামস আরও জানান, শুধু খাবার এবং বাড়ি ভাড়ার খরচ যোগানোর জন্য অনেক নারী পতিতাবৃত্তিতে নামতে বাধ্য হচ্ছেন। করোন মহামারীর পর অর্থনীতিতে ইউক্রেন যুদ্ধের আঘাতের ফলে চাকরি হারিয়েও অনেকে পতিতাবৃত্তিতে নেমেছেন।
সূত্র: স্কাই নিউজ