গোপেন দেবঃ জয়তী চক্রবর্তীর মন্ট্রিয়ল সফরটি নাকি প্রথমই ঘটেছে গত রোববার ১৭ জুলাই। কেমন ছিল তাঁর প্রথম সফরটি ! তিনি বললেন, ‘চমৎকার’। আমরা যারা তাঁর শ্রোতা ছিলাম, তাদের অনুভূতিই বা কী? – সেটির উত্তরও একই – চমৎকার! গত রবিবাসরীয় সন্ধ্যাটি আসলে চমৎকারিত্বেই কেটেছে।
সঙ্গীত বোদ্ধারা বলেন, গান প্রাণ পায় – কথা সুর কন্ঠ আর যন্ত্রে। জয়িতা চক্রবর্তীর কন্ঠে যখন কথা ওঠে তখন সেই সুর কেমন নিবিড় হয়ে বলে ওঠে ‘ তোমার সুরের ধারা / ঝরে যেথায় তারই পারে, …./ আমি শুনবো ধ্বনি কানে / … ভরবো ধ্বনি প্রাণে …’।
কী দিয়ে শুরুটা হবে, ভাবছিলেন একটু। এর আগে কিছু কথা বললেন কবিতার মত করে। গানে নয় শুধু, বলনেও কী সাবলীল সুন্দর উপস্থাপনা! তিনি শুরু করলেন অবশ্যই গুরুদেবকে দিয়ে ‘ আজি বিজন ঘরে নিশিত রাতে আসবে যদি শূন্য হাতে … জানি বন্ধু জানি’। নিমিষেই সুরেলা হয়ে ওঠলো পুরো মিলনায়তন। একের পর এক চললো প্রিয় সব গান। আর রাবীন্দ্রিক-স্নিগ্ধতায় ভাসতে থাকলেন দর্শক শ্রোতারা।গানের ফাঁকে শিল্পী টুকটাক কথাও বললেন। এভাবেই শিল্পী জয়তী চক্রবর্তী মাতিয়ে রাখলেন পুরো চার ঘন্টা।
একক সঙ্গীত সন্ধ্যাটি আয়োজন করেছিল ‘লোকজ’ মন্ট্রিয়ল। সাংষ্কৃতিক অঙ্গনে দীর্ঘদিন ধরে অবদান রাখায় আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে মন্ট্রিয়লের চার সাংষ্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে সম্মাননা স্মারক ও ক্রেস্ট প্রদান করে সংবর্ধিত করা হয়। সংবর্ধিত ব্যক্তিত্বরা হলেন, সফিউল ইসলাম, তৃপ্তি দাস, নিরোজ বড়ুয়া ও শংকর রায় চৌধুরী।অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত ব্যক্তিদের ’লোকজ’র পক্ষে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন বিশিষ্ট শিল্পী জয়তী চক্রবর্তী ও ক্রেস্ট প্রদান করেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শামীমুল হাসান ও বিশিষ্ট একাউন্টেন্ট সুবীর চৌধুরী। ‘লোকজ’র প্রধান সমন্বয়কারী অনুপ চৌধুরী মিঠু শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন শক্তিব্রত হালদার মানু।
ঐদিন ছিল মন্ট্রিয়লে প্রচন্ড তাপপ্রবাহ। এরপরও প্রিয় শিল্পী জয়তী চক্রবর্তীর গান শুনতে সনাতন ধর্ম মন্দিরের মিলনায়তনে মিলিত হয়েছিলেন বিপুল সংখ্যক শ্রোতা। তাঁরা শেষ পর্যন্ত নিবিষ্ট হয়ে উপভোগ করেছেন সন্ধ্যাটি। অনুষ্ঠানস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে বারবারই অনুরনিত হচ্ছিল ‘ … সুদূর কোন নদীর পারে / গহন কোন বনের ধারে / গভীর কোন অন্ধকারে হতেছ তুমি পার / পরানসখা বন্ধু হে আমার …’। আরো অনেকটা প্রহরই হয়তো বাজবে প্রাণে লাবণ্য ছড়ানো সেই সুর !