দীন ইসলাম: আপনি কি বৈধভাবে কানাডা যেতে চান? কানাডার ওয়ার্ক পারমিট বা জব ভিসা সহজে পেতে চান। কমপক্ষে এসএসসি পাস ও বয়স ১৮ থেকে ৪৫ হলে আপনিও বৈধভাবে কানাডায় জব ভিসায় যেতে পারেন। আইএলটিএস লাগবে না। যে কোন ট্টেড স্কিল জানা থাকলে অগ্রাধিকার। প্রসেসিং সময় ৬০ দিন থেকে ৯০ দিন। তাহলে আর দেরি কেন? আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। আমরা কানাডার ওয়ার্ক পারমিট ভিসাসহ স্কুডেন্ট বা স্ট্যুরিস্ট ভিসা প্রাপ্তির নিশয়তা প্রদান করছি। কানাডায় আমাদের নিজস্ব আইনজীবীর মাধ্যমে ফাইল প্রসেস করা হয়। বাংলাদেশ থেকে ফেসবুকে লগইন করলে এমন শত শত চটকদার স্পন্সর বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে। ওই সব বিজ্ঞাপনে ‘কানাডা ভিসা’র নিশ্চয়তার ভাষা পড়লে আগ্রহীরা রীতিমতো হুড়োহুড়ি শুরু করে দেন। চটকদার বিজ্ঞাপনদাতা কোম্পানির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। কোম্পানিটি প্রথমে আগ্রহী ব্যক্তির ই-মেইল এড্রেস বা ফোন নাম্বার চেয়ে নেয়। এরপর বিশ্বস্ততা অর্জনের জন্য ভূইফোঁড় কোম্পানিটি জানায়, ফ্রি ইলিজিবিলিটির টেস্ট এর সিভি, ছবি, সব শিক্ষাগত সনদপত্র এবং পাসপোর্ট কপি দরকার। এসব কপি ই-মেইল বা আমাদের হোয়াটস অ্যাপ নম্বরে পাঠান। আগ্রহীরা এসব কাগজপত্র পাঠানোর পর অনেকটা জালে আটকে যান কানাডা ভিসা’র নিশ্চয়তা প্রদানকারি প্রতিষ্ঠানটির। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক অ্যাম্বাসেডর মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ভোরের আলোকে বলেন, বাংলাদেশে ভূয়া ইমিগ্রেশন প্রতিষ্ঠানের আখড়া। এসব প্রতিষ্ঠানণ্ডলো ফেসবুক বা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে তাদের শিকার ধরে। যারা শিকারে পরিণত হন তারা আর্থিক ও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, আমার চাকুরি জীবনে এমন অসংখ্য ঘটনার প্রতিকার চেয়ে আবেদন পেয়েছি। কিন্তু সরকারি নিয়মের বেড়াজালের কারনে অনেক কিছু করতে পারিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ঘেটে দেখা যায়, ফেসবুকে স্পন্সর বিজ্ঞাপনদাতা ভূইফোঁড় কোম্পানিণ্ডলো নিজেদের কানাডার তালিকাভূক্ত অভিবাসন প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। দেন। কানাডার অরজিন্যাল ভিসা করতে না পারলে অনেক সময় জাল ভিসা ধরিয়ে দেয়া হয়। এরপরই সর্বশ্রান্ত হন কানাডা আসতে আগ্রহী রঙ্গিন স্বপ্নে বিভোর মানুষেরা। প্রতারকচক্রের সদস্যরা এরপরই সটকে পড়েন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, কানাডার বিভিন্ন প্রদেশে কর্মরত বাংলাদেশি এবং ভারতীয় বংশদদ্ভূত কিছু ইমিগ্রেশন কনসালটেন্ট নেপথ্যে কাজ করছেন। তাদের ছত্রছায়া বা প্রশ্রয়ে বেপরোয়া বাংলাদেশের কিছু ভিসা কনসালট্যান্সি প্রতিষ্ঠান। ওই সব ভিসা কনসালট্যান্সি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার আবার তাদের আত্মীয়-স্বজনরা। এসব আত্মীয়-স্বজনদের সামনে দিয়ে নেপথ্যে থেকে অপকর্ম করে চলেছেন তারা।এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্যানবাংলা ইমিগ্রেশন সার্ভিসেসের প্রিন্সিপাল কনসালট্যান্ট মাহমুদা নাসরীন ভোরের আলোকে বলেন, ইমিগ্র্যান্টদের স্বর্গরাজ্য কানাডা। তাই কানাডা’র বিভিন্ন ক্যাটেগরির ভিসা নিয়ে প্রতারকরা সক্রিয় থাকবেন এমনটাই স্বাভাবিক। এমন কিছু বিষয় আমার নজরেও পড়েছে। তবে আমি কানাডা আসতে আগ্রহীদের বলবো যাচাই বাছাই করে যেন তারা কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করেন। বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন পযায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০-২৫ লাখ টাকা খরচ করে অনেক ছাত্র বা সাধারণ ব্যক্তি কানাডায় এসেছেন। এজন্য ঢাকার পান্থপথ, মিরপুর, ফার্মগেট কেন্দ্রিক একটি সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। এসব সিন্ডিকেটের সদস্যরা আইএসটিএস কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে তাদের কাস্টমার যোগাড় করেন। বিনিময়ে আইএলটিএস কোচিং সেন্টারকে কমিশন দিয়ে থাকেন। ইমপিরিকেল ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস ইনকর্পোরেশনের সিইও তানভীর নওয়াজ ভোরের আলোকে বলেন, প্রতারক চক্র থাকবেই। এটা যুগে যুগে চলে আসছে। তাই প্রতারকদের চিনতে হবে গ্রাহকদেরই। আমি মনে করি প্রতারক চক্রের বিষয়ে আমাদের সবাইকে সতর্ক হতে হবে।