মাহবুবুর রব চৌধুরী, টরেন্টো
*বাংলাদেশে প্রথম সারির সমস্যা সমূহের মাঝে দুর্নীতিই প্রধান। উপর থেকে নিচে সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি চলছে অবলীলায়। সিস্টেম চেঞ্জ করে দুর্নীতি মুক্ত, ট্রান্সপারেন্ট সিস্টেম প্রতিষ্ঠা না করা পর্যন্ত- দুর্নীতি যাবেনা। মুখের কথায় দুর্নীতি বন্দ হয় না। সেটি হলে এতদিনে দেশে দুর্নীতির নাম, গন্ধ থাকবার কথা নয়। দুর্নীতি বিরোধী কথা হয়, প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়, অতীতে দেওয়া হয়েছে এখনও বলা হয় কিন্তু তার পরও এটি থাকবার মূল কারন – ” শুধু কথায়’- কোন কাজ হয় না।
*দেশে এমনকি সাধারণ একটি ট্রাফিক অনিয়মেও ঘুষ দিয়ে বাঁচা অথবা আইন রক্ষা কারী সংস্থার হাতে চরম ভাবে নাজেহাল হওয়া। এটি ওপেন সিক্রেট। প্রায় স্বাভাবিক নিয়মের পর্যায়ে এটি দাঁড়িয়ে গেছে।
*এই ধরনের উদাহরণ শত সহস্র পাওয়া যাবে। এখন এরূপ হওয়াটাই সাধারনের জন্য- সাধারণ স্বাভাবিক নিয়তি। উন্নত সিস্টেমের দেশে যখন পুলিশ থেকে টিকিট পাবেন তখন ঐ টিকিটের সাথেই আপনার ত্রুটি বা অপরাধটা কি হয়েছে এবং পরবর্তী করণীয় কি তা লিখিত ভাবেই জানিয়ে দেওয়া হয়। অর্থাৎ লিখিত ভাবে অপরাধ এবং পরবর্তী করণীয় জানিয়ে দেওয়া হয়।।
*এর পর অভিযুক্তের নিজ সিদ্ধান্ত। তিনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বীকার করে, দায়, দায়িত্ব নিবেন না কোর্টে যাবেন। সেটি তার নিজস্ব বিবেচনা। প্রাথমিক সাধারণ নিম্ন কোর্ট নিজেই ফেঁস করবার সুযোগ আছে। এটি একটি খরচ মুক্ত প্রোসেস।
*বাকি কাজ কোর্টে আইনে সাব্যস্ত হয়।
*গবেষণা এবং নিয়মিত প্রয়োজনীয় পরিবর্তন পরিবর্ধনের মাঝে দুর্নীতি মুক্ত সিস্টেমকে জীবিত রাখা হয়। এবং এভাবেই তা কার্যকরী ভাবে টিকিয়ে রাখা এবং সচল রাখা সম্ভব হয়।
*তাই প্রয়োজন সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্ব ক্ষেত্রে দুর্নীতি মুক্ত সেবা পেতে এবং সুন্দর স্বচ্ছ পরিবেশ পেতে – প্রয়োজন দুর্নীতি মুক্ত পরিষ্কার জবাব দিহি সিস্টেম। যা উন্নত সব দেশেই আছে। এটি যথা সম্ভব হয়রানি মুক্ত, দ্রুত সেবা পেতে সর্বাত্মক সাহায্য করে। শত ভাগ সম্ভব না হলেও এ সিস্টেম সম্ভাব্য সর্বপেক্ষা সন্তোষ জনক।
*দুস্ট বুদ্ধির মানুষ ণ্ডলি ২৪ ঘন্টা’ – নিত্য দিন – আইনের ফাক, ফোকর বের করতেই তাদের সময় আর বুদ্ধি খাটায়। চায় সিস্টেমটি ভাঙতে। তাই দুস্ট বুদ্ধির প্রকোপ থেকে সিস্টেমকে সচল উপযোগী রাখতে’- সপ্তাহের সাত দিনই রাখা হয় নিত্য গবেষণা। কালো নজরের খপ্পর থেকে বাঁচাতে এবং সিস্টেমটিকে আপ টু ডেট রাখতে নিয়মিত গবেষনা একটি ণ্ডরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন।
*রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনে হয়রানি মুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত সিস্টেম প্রতিষ্ঠায় সংস্কার এবং পরিবর্তন চাইলে ‘ প্রয়োজন প্রচলিত, গতানুগতিক ধারার প্রশাসনিক ব্যবস্থাটিকে সচ্ছ , জবাবদিহি , সময় সচেতন এবং দুর্নীতি মুক্ত ব্যবস্থাতে পরিবর্তন করা। এবং একই সাথে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক সিস্টেমকে সুষ্ঠু, সুন্দর ও কার্যকরী ভাবে প্রতিষ্ঠিত রাখা।
*আমাদের দেশেও দুবার, দুটার্মের বেশি প্রধানমন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্ট পদ কেউ অলঙ্কৃত করতে পারবেন না, শাসনতন্ত্রে এটিও অবশ্যই সংযুক্ত করা প্রয়োজন।
*বর্তমান অবস্থায় অভ্যন্তরীণ সংকট কাটাতে প্রয়োজন অন্তত আরো চার বার, চার টার্ম। নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃ চালু করা।
*বিষয়টি সত্যিকার ণ্ডরুত্বের সাথে নিলে দেশ থেকে দুর্নীতি উচ্ছেদ অসম্ভব নয়।
মাহবুবুর রব চৌধুরী, টরন্টো।