বিশ্বখ্যাত সুন্দরী প্রতিযোগিতা ‘মিস ইউনিভার্স ২০২০’-এর ওয়েবসাইট থেকে নামিয়ে ফেলা হয়েছে বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রতিযোগী তানজিয়া জামান মিথিলার নাম! প্রতিযোগিতাটির বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ বলছে, লকডাউন ও ভ্রমণ বাধ্যবাধকতার কারণে নিজেরাই এতে অংশ নেওয়া থেকে সরে এসেছেন।
এগুলোর পাশাপাশি আরো দুটি কারণ মিথিলা জানালেন, যার ফলে ৬ মে থেকে শুরু হওয়া বিশ্বসুন্দরীদের আসরে অংশ নিতে পারছেন না তিনি। এগুলো হলো- ভ্যাকসিন না নেওয়া ও ন্যাশনাল কস্টিউম তৈরি না হওয়া!
মিথিলা বলেন, ‘অংশ নিতে না পারার অনেকগুলো কারণ আছে। প্রথম কারণ হলো- আমি করোনা ভ্যাকসিন নিতে পারিনি এখনো। দ্বিতীয়ত, আমরা ভিসা ফেসের জন্য যে আবেদন করেছিলাম, লকডাউনের কারণে সে তারিখ ক্যানসেল হয়েছে। প্রি-প্রোডাকশন ভিডিও তৈরি হয়নি। এমনকি ন্যাশনাল কস্টিউমও তৈরি হয়নি। ৫ এপ্রিল থেকে তো মূলত আমাদের লকডাউনের ঘোষণা আসে। যে কারণে আমরা ন্যাশনাল কস্টিউমসহ কোনও ভিডিওর শুট করতে পারিনি। ভিসা আবেদনের আগে যে কাজগুলো করতে হয় সেগুলোর কিছুই করতে পারিনি। পরে তো ভিসা অফিস ভিসা ফেসের ডেটই বাতিল করেছে।’
এদিকে, বয়স লুকানো ও পুরুষ হয়রানি নিয়ে যে অভিযোগ মিথিলার বিরুদ্ধে এসেছে- সেগুলো মিস ইউনিভার্সের তালিকা থেকে বাদ পড়ার কারণ নয় বলে তিনি দাবি করেন।
মিথিলা জানান, মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশি প্রতিযোগীকে বাতিল করেনি। বরং ভিসা ফেস করতে না পারাসহ অন্যান্য কারণে এবার প্রতিযোগী পাঠাতে পারছেন না বলে যুক্তরাষ্ট্রে খবর পাঠালো মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে, এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ ২০ এপ্রিল সকালে মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ তাদের ফেসবুকে পোস্ট করেছে। সেখানে লেখা- ‘লকডাউন ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে আমরা প্রস্তুতি শেষ করতে পারিনি। তাই আমরা এবারের আসরে অংশ নিতে পারছি না। বিষয়টি মূল আয়োজকদের এই সপ্তাহে জানানো হয়েছে।’
এদিকে, বিউটি পেজেন্টদের নিয়ে কাজ করা ‘সাশ ফ্যাক্টর’ নামের অনলাইন ম্যাগাজিনের ফেসবুক পেজ থেকে জানানো হয়েছে, ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০২০ তানজিয়া জামান মিথিলাকে ঘিরে অনেক বিতর্ক দেখা যাচ্ছে। অনেক বাংলাদেশি বিউটি পেজেন্টরা মিথিলাকে নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন এবং তাকে মূল প্রতিযোগিতার জন্য সাপোর্ট করছেন না। এ কারণে মিস ইউনিভার্স ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে তার নাম।’
সাশ ফ্যাক্টর ছাড়া আরও দু’একটি ফেসবুক পেজ একই ধরনের মন্তব্য করলেও তারা কোনও তথ্যসূত্র প্রকাশ করেনি।
বিষয়টি নিয়ে মিথিলা বলেন, ‘এখানে বয়সের লুকোচুরির কোনো বিষয় নেই। বরং আমরা প্রস্তুতি নিতে ব্যর্থ হয়েছি এটা মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ জানানোর পরই ওয়েবসাইট থেকে আমার নাম সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’
বয়সের ব্যাপারে মিথিলা বলেন, ‘বয়সের কোনও তথ্য আমি গোপন করিনি। আমার জন্মনিবন্ধন, ভোটার আইডি, পাসপোর্ট সবকিছুতে লেখা আছে, ১৯৯৪ সালের জানুয়ারিতে আমার জন্ম। ১৯৯২ হলেও আমি কোয়ালিফাইড, ১৯৯৪ হলেও আমি কোয়ালিফাইড। আর বয়সের বিষয়টি মিস ইউনিভার্স বুঝবে। তাদের কাছে সব তথ্য দেওয়া আছে।’
মিস ইউনিভার্সের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিযোগীর বয়স ২৮ বছরের কম হতে হবে। মিথিলা এ বয়সের সীমা আগেই পেরিয়েছেন বলে অভিযোগ মিলেছে। মোট মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হলিউডে অনুষ্ঠিতব্য এবারের ‘মিস ইউনিভার্স’ প্রতিযোগিতার মূল মঞ্চে থাকছে না বাংলাদেশের পতাকা।