ওয়েছ খছরু, সিলেটের খাসদবিরে বস্তাভর্তি জাতীয় পরিচয়পত্র মিলেছে। জাতীয় পরিচয়পত্রে ওই কার্ডগুলো খাসদবির এলাকার বলে জানিয়েছে পুলিশ। ইতিমধ্যে কার্ডের সূত্র ধরে কয়েক জনের পরিচয় মিলেছে। তাদেরকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। তবে- গভীর রাতে পাওয়া এই কার্ডগুলো নিয়ে খোদ পুলিশের কাছেই রহস্য দেখা দিয়েছে। এ কারণে পুলিশ অনুসন্ধান শুরু করেছে। পুলিশ জানায়, কার্ডগুলো কার কাছে ছিল, কে নিয়ে আসলো, রাস্তায় ফেলে রাখলো কে- এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হচ্ছে। আর কার্ড উদ্ধারের খবরে স্থানীয় খাসদবির এলাকার মানুষের মধ্যে কৌতূহলও দেখা দিয়েছে।পুলিশ জানায়, গতকাল সোমবার ভোররাত ৩টার দিকে স্থানীয় এক যুবকের তথ্যের ভিত্তিতে খাসদবির এলাকায় যায় আম্বরখানা ফাঁড়ি পুলিশ। সেখানে মোজাহিদ ভিলা নামে একটি বাসার সামনে তারা বস্তাভর্তি কার্ড দেখতে পায়। মোট তিনটি বস্তা ছিল। এর মধ্যে একটি বস্তায় কার্ড পাওয়া যায়। অন্য দুটিতে ছিল পুরাতন কাপড়। পরে সেগুলো পুলিশ জব্দ করে এয়ারপোর্ট থানায় নিয়ে যায়। খাসদবির এলাকার বাসিন্দা রোহান আহমদ জানিয়েছেন, গভীর রাতে প্রথমে এলাকার মানুষ এসব জাতীয় পরিচয়পত্র পান। খাসদবির এলাকায় ফুটপাথের উপর ৩টি বস্তা দেখতে পেয়ে সেগুলো খোলা হয়। এরপর দেখা যায় একটি বস্তায় কাপড় ও অন্যটিতে জাতীয় পরিচয়পত্র। একটি বস্তার ভেতরে এলইডি বাল্বের কয়েকটি প্যাকেটও পাওয়া গেছে। পরে এলাকার লোকজন পুলিশকে খবর দিয়ে আম্বরখানা ফাঁড়ি পুলিশ এসে সেগুলো উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। স্থানীয় এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ আম্বরখানা ফাঁড়ির এসআই মফিজুর রহমান জানিয়েছেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে ওই বস্তাগুলো উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এর মধ্যে একটি বস্তায় জাতীয় পরিচয়পত্র ভর্তি ছিল। তিনি জানান, ধারণা করা হচ্ছে স্মার্টকার্ড পাওয়ার পর আগের কার্ডগুলো জমা দিতে হয়। হয়তো এসব কার্ডভর্তি বস্তা কেউ চুরি করে পরে কোনো কারণে এখানে ফেলে গেছে। এদিকে- গতকাল সকালে বস্তা থেকে বের করে পুলিশ থানার ভেতরে কার্ডগুলো গণনা করেন। মোট ২৮৭টি জাতীয় পরিচয়পত্র মিলেছে বলে জানিয়েছেন এয়ারপোর্ট থানার ওসি মাইনুল জাকির। তিনি জানিয়েছেন, কার্ডের লেখা ঠিকানায় দেখা গেছে ওই কার্ডগুলো খাসদবির এলাকার মানুষের। কার্ডের ঠিকানা দেখে কয়েকজনকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। তাদের কাছ থেকে তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে জানান তিনি। তবে কার্ডগুলো কোথায় ছিল, কারা বস্তায় করে নিয়ে এসেছে কিংবা কার্ডগুলো আসল না নকল সব তদন্তের পর জানা যাবে। এ জন্য পুলিশ নির্বাচন কমিশনেরও সহায়তা নেবে বলে জানান তিনি। এদিকে স্থানীয় একটি সূত্র পুলিশকে জানিয়েছে, যে পরিচয়পত্রগুলো পাওয়া গেছে সেগুলোর মধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশনের ৫ নং ওয়ার্ড, ৬ নং ওয়ার্ড, উপ-শহর ও টিলাগড় এলাকার কিছু কার্ড রয়েছে। ৩১ তরঙ্গ আবাসিক এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ ইতিমধ্যে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বোরকা পরা এক মহিলা রাত ১২টা ১০ মিনিটের সময় ওই তিনটি বস্তা এনে রাস্তার পাশে ফুটপাথে রেখে যায়। খাসদবির এলাকা থেকে বেরিয়ে আসা ওই মহিলা আবার খাসদবির এলাকা দিয়ে চলে যায়। তবে অন্ধকার থাকায় ওই মহিলাকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।