সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর সড়কের কোন্দানালা খালের ওপর শেষ মুহূর্তের নির্মাণ কাজ চলছিল সেতুটির। গার্ডার বসানোর সময় ভেঙে পড়ে -বাংলাদেশ প্রতিদিন
নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর সড়কের কোন্দানালা খালের ওপর একটি সেতুতে গার্ডার বসানোর সময় হাইড্রোলিক জ্যাক বিকল হয়ে ধসে গেছে সেতুটি। গতকাল ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো অবহেলা আছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে বিকল্প সড়ক থাকায় সেতু ধসের কারণে সড়কে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়নি। এদিকে সেতুটি ধসে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে বিকল্প সড়ক ডুবে গেলে এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতে ভোগান্তি বাড়বে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এতে জেলা সদরের সঙ্গে জগন্নাথপুর উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর সড়কে ৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনটি সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। বাস্তবায়নের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ এম বিল্ডার্স। সওজ জানায়, গতকাল ভোরে অন্য স্থানে তৈরি গার্ডার সেতুর পাটাতনের ওপর বসানোর কাজ শুরু করেন কর্তৃপক্ষ। এ সময় চারটি হাইড্রোলিক জ্যাকের একটি বিকল হয়ে গেলে সেতুটি ধসে গিয়ে মাটিতে বসে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, দুই বছর আগে সেতুটির কাজ শুরু হলেও নির্মাণকাজে ধীরগতির কারণে দুই বছরের মাথায় রাতের আঁধারে গার্ডার বসানোর উদ্যোগ নেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ ক্ষেত্রে তাদের দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি স্থানীয়দের। সেই সঙ্গে কাজের গুণগত মান খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান তারা। স্থানীয় বাসিন্দা গফুর মিয়া বলেন, সেতুটির কাজ যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পেয়েছে তার কাজ খুব ধীরগতির। এ ছাড়া নিম্নমানের উপাদান ব্যবহার করেছে বলেই সেতুটি ভেঙে গেছে। সরকারের উচিত এদের বিচারের মধ্যে নিয়ে আসা। সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচ করা উন্নয়ন প্রকল্পে এমন অনিয়ম মেনে নেওয়া যায় না।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা আবদুল মুমিন বলেন, এ সড়কে মোট সাতটি নতুন সেতুর নির্মাণকাজ চলছে। নির্মাণের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি আছে কি না তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন। কোনো গাফিলতি থাকলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ এম বিল্ডার্সের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ বলেন, ‘গার্ডার বসানোর সময় হাইড্রোলিক জ্যাক বিকল হয়ে যাওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এখানে আমাদের কোনো গাফিলতি ছিল না। এতে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার পুরোটা আমরা বহন করব। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেতুটি আবারও নির্মাণ করা হবে।’ সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গার্ডার ধসের ফলে সেতুর মূল কাঠামোর কোনো ক্ষতি হয়নি। ধসে যাওয়া গার্ডারগুলো ঠিকাদার তার নিজ খরচে অপসারণ করে নতুন করে করে গার্ডার বসিয়ে িেদবেন। এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানান তিনি।উৎসঃ বিডি-প্রতিদিন