প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে বিদেশে পালিয়ে থাকা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে) প্রচারিত সাক্ষাৎকার ও টকশো’ নিয়ে এবার লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করার জন্য একাত্তর টিভি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের
+সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আগামী ১৭ই জানুয়ারির মধ্যে ৭১ টিভি কর্তৃপক্ষকে লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে ওই দিন পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট খুরশীদ আলম খান। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। পরে আমিন উদ্দিন মানিক মানবজমিনকে বলেন, পি কে হালদারকে নিয়ে ৭১ টিভির প্রচারিত সাক্ষাৎকার ও টকশো’ প্রচারের বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করার জন্য ৭১ টিভি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ১৭ই জানুয়ারির মধ্যে ৭১ টিভি কর্তৃপক্ষকে লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে ওইদিন পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত।
তিনি জানান, সকালে পি কে হালদারকে নিয়ে প্রচারিত সাক্ষাৎকার ও টকশো’র ভিডিও ক্লিপ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে দাখিল করেন একাত্তর টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ। ওই সাক্ষাৎকার ও টকশো’র ভিডিও ক্লিপ প্রায় এক ঘণ্টা ধরে আদালত শুনেন। এ সময় দুদকের আইনজীবী ৭১ টিভির খবর ও টকশোতে অংশ নেয়া ছয় জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আর্জি জানান। এরপর আদালত এ বিষয়ে ৭১ টিভি কর্তৃপক্ষের লিখিত ব্যাখ্যা জানতে চান।
এর আগে গত ২৮শে ডিসেম্বর ৭১ টিভিতে প্রচারিত পি কে হালদারের বক্তব্যের বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। পরে আদালত পি কে হালদারকে অতিথি করে প্রচারিত অনুষ্ঠানের ভিডিও ফুটেজ ১০ই জানুয়ারির মধ্যে হাইকোর্টে পাঠাতে ৭১ টিভি কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে পলাতক এবং দণ্ডিত আসামির বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেন। হাইকোর্টের ওই আদেশ অনুযায়ী ৭১ টিভি কর্তৃপক্ষ পি কে হালদারকে নিয়ে করা অনুষ্ঠানের ভিডিও সিডি গতকাল আদালতে দাখিল করলে সে ভিডিও ভার্চ্যুয়াল আদালতে চালিয়ে দেখেন হাইকোর্ট।
এর আগে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয় পি কে হালদার জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নামে- বেনামে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। যার ফলে কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এরই মধ্যে গোপনে দেশ ছাড়েন পি কে হালদার। এমন বাস্তবতায় টাকা ফেরত পেতে ক্ষতিগ্রস্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকেরা আদালতের শরণাপন্ন হন। একপর্যায়ে হাইকোর্ট পি কে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনা ও গ্রেপ্তারের পদক্ষেপ জানতে চেয়ে আদেশ দেন। সর্বশেষ গত ৮ই জানুয়ারি ইন্টারপোল পলাতক প্রশান্ত কুমার হালদারকে গ্রেপ্তারে রেড এলার্ট জারি করে। অন্যদিকে হাইকোর্ট এক আদেশে পি কে হালদারের মা-সহ ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন।