ভারতে লোক ঠিক করেছিলেন। সেখানে ১২০ কোটি টাকা কয়েক কিস্তিতে পাঠিয়েছিলেন। তবে ভারতে স্থায়ী হবার কোন ইচ্ছা তার ছিলো না। কথা ছিলো, ডিসেম্বরেই কানাডায় তার জন্য বাড়ী কিনে দেয়া হবে। অবসরের পর ব্যবসায়িক কোটায় ইমিগ্রান্ট হবেন কানাডায়। সব কিছু ঠিক করেছিল ভারতীয় দালাল। কিন্তু আচমকা গতকাল মঙ্গলবার তার বিদেশ যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা এলো। তিনি ডাক অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র। একদা প্রচন্ড ক্ষমতাবান এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন। দুর্নীতি দমন কমিশন, গোয়েন্দা সূত্রে তার ভারত সফরের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে তার বিদেশ যাত্রার উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করে।
ভদ্রের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পেয়েছে দুদক। যে সব ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে তার মধ্যে রয়েছে ডাক বিভাগের ভবন নির্মাণ, পোষ্ট ই. সেন্টার ফর রুরাল কমিউনিটি প্রকল্পের পয়েন্ট অব সেল (পওস) মেশিন কেনায় অনিয়ম, আট হাজার ল্যাপটপ না কিনেই বিল উত্তোলন।
উল্লেখ্য, পোষ্ট-ই- সেন্টার ফর রুরাল কমিউনিটি প্রকল্প সম্পূর্ণ ভাবে বাস্তবায়ন না করে শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন গত ১ সেপ্টেম্বর তাকে তলব করে। ২৩ সেপ্টেম্বর সংসদীয় কমিটি তাকে চাকরী থেকে অপসারণের সুপারিশ করে। ১২ অক্টোবর তাকে এক মাসের ছুটি দেয়া হয়। ১৯ নভেম্বর তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়।
ভদ্র কে তার আমলা বন্ধুরা ডাকতো টাকা ভদ্র হিসেবে। টাকা ছাড়া তিনি কিছুই করতেন না। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভদ্র টাকা নিতেন বস্তায়। হুন্ডির লোক মুহুূর্তে টাকা নিয়ে যেতো। ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হওয়ার পর, তিনি ১০০ কোটি টাকা তোলার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ভদ্র বলেছিলেন, আমার খুটি শক্ত। কেউ আমাকে কিছু করতে পারবে না।’ সবাই জানতো, ভদ্র কানাডায় বাড়ি কিনছেন। অবসরের পর সেখানেই চলে যাবেন। ডাক বিভাগে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন ‘এইটা হলো অভদ্রের দেশ। ভদ্র লোকের দেশ হলো কানাডা, সুইজারল্যান্ড।’ কিন্তু আপাতত: ভদ্রের কানাডা যাওয়া হলো না, ভদ্র অভদ্রের দেশে আসামী।