দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ আল মাখতুমের স্ত্রী ও প্রিন্সেস হায়া তার বডিগার্ডের সাথে পরকীয়া প্রেমে মজেছিলেন। শুধু তাই নয়, সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে তার প্রেমিককে কয়েক মিলিয়ন ডলার ও ১২ হাজার ডলার দামের ঘড়ি উপহার দেন প্রিন্সেস।
হায়া ছিলেন দুবাইয়ের শাসক ও বিলিয়নিয়ার শেখ মোহাম্মদ আল মাখতুমের ৬ষ্ঠ স্ত্রী। প্রিন্সেসের পরকীয়া প্রেমের জেরে তাদের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্কের অবসান ঘটে।
সন্তানদের অপহরণ ও জোরপূর্বক দুবাইয়ে ফেরত নিয়ে অপচেষ্টার অভিযোগে স্বামী ও দুবাইয়ের শাসকের বিরুদ্ধে লন্ডনের পারিবারিক আদালতে মামলা করেন প্রিন্সেস হায়া। এ নিয়ে আদালতে শুনানির পর প্রিন্সেসের সাথে বডিগার্ডের অনৈতিক প্রেমের বিষয়টি খবরে উঠে আসে।
গণমাধ্যমের কাছে প্রিন্সেস ও তার প্রেমিক রাসেল ফ্লাওয়ারের সম্পর্কের খুটিনাটি বিষয়গুলো মেইল অনলাইনের কাছে তুলে ধরেন রাসেলের সাবেক স্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনরা। তারা জানায়, ৩৭ বছর বয়স্ক প্রেমিক রাসেল ফ্লাওয়ার কিভাবে ৪৬ বছর বয়সী প্রিন্সেসের দ্বারা প্রলুব্ধ হয়েছিল। সম্পর্ক অব্যাহত রাখতে তিনি তার প্রেমিককে ১২ হাজার ডলার দামের ঘড়ি এবং ৫০ হাজার ডলারের শর্টগানও উপহার দেন।
এ ঘটনায় প্রেক্ষিতে স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদের মধ্য দিয়ে প্রিন্সেসের প্রেমিক রাসেল ফ্লাওয়ারের চার বছরের বিবাহিত জীবনের অবসান ঘটে।
রাসেলের স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু মেইল অনলাইনকে জানান, তার স্বামী মূলত প্রিন্সেস হায়ার টাকা এবং উপহার সামগ্রীর দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। প্রিন্সেস সব সময় দামি উপহার দ্বারা প্রমাণ করতেন যে, তিনি সব সময় তার প্রেমিকের পাশেই আছেন।
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রিন্সেস বিদেশ যাত্রায় সব সময়ই রাসেলের সাথে পাশাপাশি রুমে অবস্থান করতে চাইতেন। তিনি যখন যুক্তরাজ্যে থাকতেন, প্রতি রাতেই প্রেমিক রাসেলের সাথে বের হয়ে যেতেন। এমনকি কখনো কখনো সকাল পর্যন্ত বাসায় ফিরতেন না।
রাজকীয় প্রাসাদে রাসেল ফ্লাওয়ার পাঁচ বছর প্রিন্সেসের রক্ষী হিসেবে সেবা করেন। ২০১৬ সালে পুরো সময় জুড়েই তিনি বিদেশ যাত্রায় প্রিন্সেসের সার্বক্ষণিক সঙ্গী হিসেবে থাকতেন।
রাসেলের স্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা গণমাধ্যমকে জানান, প্রতি রাতেই বাসায় ফেরার পর রাসেলের মোবাইলে প্রিন্সেসের ফোন এবং ম্যাসেজ আসতো। এ সময় তিনি সিকিউরিটি বাহিনীর সদস্যদের ফোন বলে স্ত্রীকে আশ্বস্ত করতো। কিন্তু প্রতি ঘন্টাতেই এমন কল আসতো। কখনো কখনো প্রিন্সেসের সন্তানদের কণ্ঠ শোনা যেত।
প্রিন্সেসের দেয়া উপহার সম্পর্কে রাসেলের সাবেক স্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনরা জানান, প্রিন্সেস হায়া জট৫৫ঊখখঝ নামে একটি ব্যক্তিগত নাম্বারও বানিয়ে দিয়েছিলেন।
তবে দুবাইয়ের শাসক সব সময়ই স্ত্রীর বডিগার্ডদের বিষয়ে উদার ছিলেন। কখনোই জানতে পারেননি স্ত্রীর অবৈধ প্রেমের খবর। দুবাই শাসক কখনো কখনো তার স্ত্রী হায়ার রক্ষীদের ৫ থেকে ১৫ হাজার ডলার টিপস দিতেন। কিন্তু রাসেলের গিফট থাকতো অনেক বেশি পরিমান অর্থ।
ডেইলি মেইল অনলাইন তাদের অনুসন্ধানে নিশ্চিত হয়েছে যে, রাসেল ফ্লাওয়ারের সাথে প্রিন্সেস হায়ার প্রেমের ঘটনা আরো ৩ জন বডিগার্ড জানতো। তাদেরকেও সম্পর্কের কথা গোপন রাখতে ১২ লাখ ডলার ঘুষ দিয়েছিলেন প্রিন্সেস।
রাসেলের সাথে তার স্ত্রীর সম্পর্ক ছিলো ১৫ বছরেরও বেশি সময়ের। কিন্তু এমন একটা ঘটনা তাদের সম্পর্কের ইতি টানতে বাধ্য করে। রাসেলের স্ত্রীর পরিবারের এক সদস্য গণমাধ্যমে বলেন, বিবাহিত একজন স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও এমন ঘটনায় রাসেলের লজ্জিত হওয়া উচিত। তিনি বলেন, প্রিন্সেস হায়ার অপরাধেরও কোনো ক্ষমা নেই। তাদের এই অনৈতিক সম্পর্কের কারণে অনেকগুলো জীবন ধ্বংস হয়ে গেলো।
সম্প্রতি প্রিন্সেস হায়া তার স্বামীর সাথে আইনি লড়াইয়ে অংশ নিয়েছেন। হায়ার স্বামী দুবাইয়ের শাসক তার দুই সন্তানকে তার কাছে নিয়ে যেতে চান।
ব্রিটেনের পারিবারিক আদালতের বিচারক অ্যান্ড্রু ম্যাকফ্রালেন্স রাসেল ফ্লাওয়ারের সাথে হায়ার সম্পর্কের প্রমাণ হাতে পেয়েছেন। তবে রক্ষীর সাথে প্রেমের ক্ষেত্রে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেয়ায় রায় হায়ার পক্ষেই যায়।
বিচারক প্রমাণ পেয়েছেন যে, দুবাইয়ের শেখ অর্থাৎ প্রিন্সেসের সাবেক স্বামী ভয়ভীতির মাধ্যমে বিচ্ছেদে বাধ্য করেছেন। প্রিন্সেস হায়া বর্তমানে লন্ডনের কেনসিংটনে দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন। সূত্র- মেইল অনলাইন।