ট্রাম্পের চোখে চোখ রাখার জন্য মার্কিন মুলুকে যারা ইতিহাস হয়ে থাকবেন, তাদের মধ্যে প্রথম সারিতে জ্যাক ডরসিকে রাখতেই হবে। প্রথম মেয়াদে যে ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোটি কোটি ডলার ছড়িয়ে ভুলভাল তথ্য প্রচার করে সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়েছিলেন, সেই তাকে ডরসি আজ টুইটারে ‘লজ্জাহীন মানুষে’ পরিণত করে ছেড়েছেন।
ট্রাম্প যাতে টুইটারে ভুয়া কোনো কনটেন্ট শেয়ার করতে না পারেন কয়েক মাস আগে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেন টুইটারের সিইও ডরসি। যখনই মিথ্যা কিছু লিখেছেন, বলেছেন-তখনই ট্যাগ লাগিয়ে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছেন।
সেই ট্যাগ দেখে মানুষ বুঝেছে এই টুইটের ভিত্তি নেই। লজ্জার মাথা খেয়ে ট্রাম্প তবু কখনো অসত্য, কখনো মিথ্যা কথা বলেই যাচ্ছেন।
ট্রাম্প টুইটারকে একাধিকবার হুমকি দিয়েও কাবু করতে পারেননি। কিছুতেই তারা ট্যাগ কিংবা ল্যাবেল লাগানোর ফিচার বন্ধ করেনি। নির্বাচনের সময়ও সেটি অব্যাহত আছে।
ট্রাম্পের মিথ্যার নাগাল টানতে ফেইসবুকও কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু তারা এটি করতে বাধ্য হয়েছে ওই টুইটারের কারণে। টুইটার যখন ট্যাগ লাগানো শুরু করে, তখন মার্ক জাকারবার্গ বলেছিলেন, আমরা কারো স্ট্যাটাসের বিচার করতে পারবো না!
ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে বিভিন্ন ডেটা বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠানকে টাকা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশেষ করে ফেইসবুকে প্রচার চালান। সেই দিনগুলোতে যাচ্ছেতাই তথ্য দিয়ে মার্কিনিদের ভোট টানেন।
এবার যখন হারের পথে, তখন টুইটারের বিষয়ে ট্রাম্প লিখেছেন, টুইটার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আইনের ২৩০ ধারার কথা উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের সময় শুক্রবার সকালে (বাংলাদেশ বিকাল) টুইটারকে আক্রমণ করে স্ট্যাটাস দেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ৫ ঘণ্টার ব্যবধানে ট্রাম্পের চারটি টুইটে ডরসির কোম্পানি ট্যাগ জুড়ে দেয়। কয়েকটি টুইটে আবার রি-টুইটও করা যায়নি।
ট্রাম্প এদিন টুইটে লিখেছেন, ‘টুইটার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এটি সরকারের ২৩০ ধারার উপহার। ’
এই ধারার অধীনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলো তাদের ফ্ল্যাটফর্মে শেয়ার করা সব ধরনের কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ট্রাম্প গত অক্টোবরে আইনটি পাল্টাতে চেয়েও পারেননি।
ট্রাম্প টুইটারকে আক্রমণ করেছেন জর্জিয়ায় পিছিয়ে পড়ার পর। এই রাজ্যটিতে হারলেই তার আরেকবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার আশা শেষ হয়ে যাবে।
ফক্স নিউজসহ প্রভাবশালী কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ট্রাম্প জিতেছেন ২১৪টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট, অন্যদিকে বাইডেনের এ সংখ্যা ২৬৪। জর্জিয়ার ১৬টি জিতে নিলে তিনি অনায়াসে ২৭০ এর ‘ম্যাজিক ফিগার’ ছাড়িয়ে যাবেন।