দেশের ভেতরে অথবা বাইরে যেখানেই যে থাকুক না কেন একটি শব্দের আর সম্পর্কের কোন পরিবর্তন হয় না আর সেটা হল বন্ধুত্ব। বন্ধু কথাটার সাথে মিশে থাকে ভালোবাসা, ভালোলাগা আর জীবনের নানান স্মৃতি। সেই স্মৃতিই বারে বারে বন্ধুদের টেনে আনে শেকড়ের কাছে। বারবার মিলতে মন চায়, সময়কে থামিয়ে দিতে ইচ্ছে করে। বন্ধুরা যখন এক সাথে মেলে কোন উৎসবে সেটা হয়ে ওঠে এক প্রাণের মিলন মেলা। গত ২৭ জানুয়ারী এজিনকোর্ট কমিউনিটি সেন্টারে এস এস সি ১৯৯৮ – এইচ এস সি ২০০০ ব্যাচের এবারের পিঠা উৎসব যেন সেই মিলন মেলার এক অনবদ্য ইতিহাস হয়ে রইলো।

শনিবার পিঠা উৎসব শুরু হয় বিকেল ৫ টা থেকে। যদিও আয়োজকদের ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায় সকাল থেকেই, কেউ ছোটে পিঠা আনতে, কেউ বা কোমল পানীয়, আবার কেউ ছোটে রাতের খাবারের খোঁজে। চিন্তার বলি রেখা সবার কপালে ঠিক সময়ে মঞ্চ তৈরি করা যাবে তো? সময় যে বড় অল্প। সকলের ঐকান্তিক পরিশ্রমে সেই মঞ্চও সেজে ওঠে সময়ের আগেই। একে একে সবাই আসতে থাকে নানান দেশীয় সাজে। মেয়েরা বাংলার চিরাচরিত শাড়ী আর অলংকারে সাজিয়ে তোলে নিজেদেরকে। ছেলেরাও পিছিয়ে ছিল না, তারাও পরে নানান রঙের পাঞ্জাবি আর ফুলের মতো ছোট বাচ্চাদের মায়েরা তাঁদের বাচ্চাদের সুন্দর বাঙালি পোশাকে সাজিয়ে নিয়ে আসে, যেন ফুলের বাগানে এরা প্রজাপতি। উৎসব কেন্দ্রটি মুহূর্তের ভেতর প্রানের রঙ্গে রঙ্গিন হয়ে ওঠে। সেই রং ছড়িয়ে পড়ে সকলের মনে আর তারপর শুরু হয় আড্ডা, মজা আর ছবি তোলা।

সাফায়েতের শেষ গান “আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম” এর সাথে ছেলেদের রেলগাড়ি নাচ আনন্দের মাত্রা অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। তারপর সবাই মিলে গ্রুপ ছবি তোলার হিড়িক পড়ে যায়। এরপর উৎসবের স্পন্সরদের হাতে পুলকের পরিচালনায় ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয় রিয়েল্টর মহি রহমতউল্লাহ , রিয়েল্টর মোঃ আজিম এবং স্পেস শেয়ার এর পরিচালক কামরুন নাহার এর হাতে, সাথে তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয়। ছোট বাচ্চারা অনেক কষ্ট করেছিল অনুষ্ঠান কে সুন্দর করে সাজাতে, তাই ওদের হাতে তুলে দেওয়া হয় গিফট কার্ড।

শেষ পর্বে ছিলো ডিনার আর লটারীতে প্রাপ্ত বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় শায়লা’স কালেকশনের সৌজন্যে। অনুষ্ঠান শেষ হয় অনিকের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মধ্যদিয়ে। আলোকচিত্রের গুরু দায়িত্ব ছিল একা ফয়সালের কাধে। সাউন্ড সিস্টেমের পুরো আয়োজনে ছিলো সাফায়েত। মঞ্চ সাজানো, পোস্টার আর ডালা/কুলাতে আল্পনা করার মতো সুক্ষ কাজগুলো সুনিপুন হাতে সম্পন্ন করেছে ডোনা, শম্পা, হীরা আর রুমা। ফটো বুথে সাহায্য করেছে তনু, রিনি আর ঝর্ণা । সুদূর বাংলাদেশ থেকে ডালাকুলা বয়ে এনেছে অন্তরা, বাতাসা আর নকুলদানা নিয়ে এসেছে ফারজানা আর ব্রামটন থেকে দু ট্রে তেলের পিঠা বানিয়ে এনেছে রুমানা । ধন্যবাদ দিলেও যে কম হয়ে যায় অনিক, মোস্তফা, খালেদ, সোহাগ, পুলক আর সব কাজ হাসি মুখে করে যাওয়া তুহিনের অবদান।
