প্রায় এক সপ্তাহ আগে আঘাত হানা দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্কের কাহরামানমারাস প্রদেশের পাজারসিক শহর। ভূমিকম্পে এলাকাটিতে ৪৫০ জনের প্রাণহানি হয়েছে। একইসঙ্গে বন্ধ হয়ে গেছে একটি স্থানীয় পত্রিকা, যার নাম ‘আসু হাবের গাজেটেসি’।
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পত্রিকাটি যেই সাংবাদিক চালাতেন তার নাম সোয়াত ইয়েনিপিনার। ৬০ বছর বয়সী এই সাংবাদিক ভূমিকম্পের সময় তার নাতির সঙ্গে পঞ্চমতলার অ্যাপার্টমেন্টে ছিলেন। আকস্মিক কম্পনে ঘুম থেকে জেগে ওঠেন তিনি।
সোয়াত ইয়েনিপিনার, ‘যখন ভূমিকম্প হচ্ছিল আমি আমার নাতিকে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু আমরা দেয়ালে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যাই। পরে ভবনটি ধসে পড়বে ভেবে আমার নাতিকে শরীর দিয়ে ঢেকে রাখি। যদিও ভূমিকম্প শেষ হওয়ার পর আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে আসি। সে সময় ভবনটি টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে যাচ্ছিল’।
সাংবাদিক সোয়াত এখন রেড ক্রিসেন্টের একটি ভ্রামামাণ রান্নাঘরের পাশে তাঁবুতে থাকছেন। যেই ভবনটিতে তিনি থাকতেন, সেখানেই একটি অফিস নিয়ে পত্রিকাটি চালাতেন। আসু হাবের গাজেটেসি সর্বশেষ প্রকাশিত হয়েছিল গত ৩ ফেব্রুয়ারি, ভূমিকম্পের আগে। কিন্তু শহরটি ধ্বংস হওয়ার পর এটি এখন মহাকালের স্মৃতি হয়ে গেছে।
পাজারসিকে প্রায় ২৮ হাজার মানুষ বসবাস করেন। যদিও সরকারি হিসেবে সেখানকার জনসংখ্যা প্রায় ৬৮ হাজার জন। তবে শহরটির অনেক বাসিন্দা বিদেশে কাজ করে, যাদের বেশিরভাগই থাকে জার্মানিতে। স্থানীয়দের মতে, এখন সেখানে মাত্র কয়েক হাজার লোক রয়েছে।
সাংবাদিক সোয়াত বলেন, ‘পাজারসিকের সব ভবন ভেঙে ফেলতে হবে’। তিনি প্রাপ্যের চেয়ে বেশি দেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তবে একইসঙ্গে কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেন। বলেন, সুযোগ পেলেই অন্য শহরে চলে যাবেন। কারণ শহরটি পুনর্নির্মাণ করা হবে বলে বিশ্বাস নেই তার।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি রাজনীতিবিদদের বিশ্বাস করি না। তারা আজ এক কথা বলে, কাল অন্য কথা’।