ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পরাজয় ঘটলে পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু হতে পারে বলে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোকে সতর্ক করে দিয়েছেন সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে এই সতর্কবাণী দিয়েছেন তিনি।
২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে থাকা দিমিত্রি মেদভেদেভ বর্তমানে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রভাবশালী নিরাপত্তা পরিষদের উপ-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন । তিনি বলেছেন, ‘প্রচলিত যুদ্ধে পারমাণবিক ক্ষমতাধর রাশিয়ার পরাজয় পারমাণবিক যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটাতে পারে।’
মেদভেদেভ বলেছেন, ‘পরমাণু শক্তিধর দেশগুলো বড় ধরনের সংঘাতে কখনই হারেনি। কারণ এর ওপর তাদের ভাগ্য নির্ভর করে।’
মেদভেদেভ বলেন, ন্যাটো এবং পশ্চিমের অন্যান্য প্রতিরক্ষা নেতারা শুক্রবার জার্মানির রামস্টেইন বিমান ঘাঁটিতে বৈঠকে মিলিত হয়ে যুদ্ধের কৌশল ও ইউক্রেনে রাশিয়াকে পরাজিত করার পশ্চিমের প্রচেষ্টার সমর্থনের ব্যাপারে কথা বলবেন। তবে তাদের নীতির ঝুঁকির বিষয়েও চিন্তা করা উচিৎ।
এখন পর্যন্ত বিশ্বের শীর্ষ দুই পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে বিশ্বের প্রায় ৯০ শতাংশ পারমাণবিক ওয়ারহেডের দখল রয়েছে। রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কেবল প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হাতে রয়েছে।
রাশিয়ার ওপর প্রচলিত সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব ন্যাটোর থাকলেও পারমাণবিক অস্ত্রের হিসেবে ইউরোপের জোটের তুলনায় মস্কোর পারমাণবিক শক্তি বেশি রয়েছে। রাশিয়ার ওয়ার হেডের সংখ্যা ৫,৯৭৭টি। এর মধ্যে রাশিয়ার ‘ডুমসডে আর্সেনাল’ই সমগ্র পৃথিবীকে কয়েকবার ধ্বংস করতে সক্ষম। অন্য কোনো দেশ যদি রাশিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে প্রথমে ধ্বংসও করে, সে তার স্বয়ংক্রিয় সেকেন্ড স্ট্রাইক ক্যাপাবিলিটি দিয়ে সেই ধ্বংসকারীকে তারপরেও ধ্বংস করতে সক্ষম।
ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানকে আগ্রাসী এবং দাম্ভিক পশ্চিমের বিরুদ্ধে অস্তিত্বের লড়াই বলে অভিহিত করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একই সঙ্গে যেকোনও আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে নিজেকে এবং দেশের জনগণকে রক্ষায় রাশিয়া তার সম্ভাব্য সব উপায়ের ব্যবহার করবে বলেও হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন তিনি।
পুতিন এই যুদ্ধের শুরুতেই বলেছিলেন, রাশিয়া না থাকলে পৃথিবীর আর থাকার দরকার নেই। পারমাণবিক অস্ত্রগুলো রাশিয়া শুধু দেখানোর জন্য বানায়নি।