মাহবুবুর রব চৌধুরী, টরেন্টো
বিশ্বের সব থেকে জনপ্রিয় খেলা ফুটবলের ২২তম আসর, ২০২২ অনুষ্ঠিত হচ্ছে কাতারে। শত বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম একটি মুসলিম দেশ এর আয়োজক। কাতার মাস ব্যাপী এই বিশাল আয়োজনে কোন ঘাটতি রাখতে চায়নি। শত সহস্র বাধা ও সমালোচনার পথ মাড়িয়ে ঘটনাটি তারা শেষ মেষ করেতে পারছে। এটি তাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া।
১৯৩০ সনে প্রথম অফিশিয়াল ফিফা বিশ্ব কাপের আসর বসে উরুণ্ডয়েতে। তার পর থেকে প্রতি চার বছর পর এটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শুধু মাত্র বিশ্ব যুদ্ধ কালীন সময়টি বাদে। প্রতি আসরেই হয়েছে কিছু না কিছু ব্যতিক্রমী রেকর্ড। এবারও তা হয়েছে এবং হচ্ছে।
কাতার বিশ্বকাপেও ইতিমধ্যেই হয়েছে কিছু নুতন রেকর্ড। আর তা হল প্রথম কোন মুসলিম দেশে বিশ্ব কাপ ফুটবল অনুষ্ঠিত হওয়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এবারই প্রথম পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত। পাঠ করেন ফিফা বিশ্বকাপের শুভেচ্ছাদূত ২০ বছর বয়সী গানিম আল-মিফতাহ (Ghanim Al-Muftah)।
গত এপ্রিলে গানিম আল-মিফতাহকে কাতারের পক্ষ থেকে ফিফা বিশ্বকাপের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে নির্বাচন করা হয়।
এছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভিন্নভাবে ইসলামী আকিদা সহ আল্লাহর বাণী এবং মহত্ত্বকে তুলে ধরা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসলিম স্কলারদেরকে কাতারে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাদের মাঝে ড. জাকির নায়েক অন্যতম। নভেম্বর শীত মৌসুমে- আসরটি পিছিয়ে আনা, ঘরের মাঠে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পরাজয়ের স্বাদ পাওয়া। যা ইতিপূর্বে আর কোন আয়োজক দলের ক্ষেত্রে কখনও ঘটেনি। আল-খোরের আল-বায়াত স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচেই স্বাগতিক কাতারকে ২-০ গোলে হারিয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ ইকুয়েডর।
হারলে অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে ম্যাচ ফিক্সিং এবং ঘুষ খাবার অপবাদ উঠতে পারত। ইতিপূর্বে ২০০২ সালে প্রথম এশিয়া মহাদেশে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। জাপান ও সাউথ কোরিয়ার যৌথ আয়োজনে। ২০০২ সালের কাপ জার্মানকে ২-০ গোলে হারিয়ে ব্রাজিল জিতে নেয়। এটি ছিল ব্রাজিলের পঞ্চম টাইটেল অর্জন। ঐ আসরে – The Turkish Hakan Sukur made history by scoring the earliest World Cup goal of all time against South Korea at only 11 seconds.
ফুটবল জ্বরে আক্রান্ত বিশ্বের লক্ষ কোটি ফুটবল প্রিয় মানুষ ভাল খেলা দেখতে উম্মুখ হয়েও নিজ প্রিয় দলের সমর্থনে পাগল। এটিও খেলার অংশ হয়ে গেছে। বাংলাদেশ এ খেলায় সরাসরি অংশ না নিলেও – দেশের মানুষ কোথাও পিছিয়ে নেই। প্রিয় দলের পতাকা তৈরির রেকর্ড ও মিছিলে কারো থেকে কোন অংশেই কম নয়।
কাতার প্রথম মুসলিম দেশ – আয়োজক হওয়াতে বাংলাদেশে আলোচনার মাত্রায় বিশ্ব ক্রীড়া জগতে মুসলিম অর্জনের বিভিন্ন দিক ণ্ডলি- প্রিন্টিং , ইলেক্ট্রিনিক সোসাল মিডিয়া ছেড়ে আড্ডা চা এর আসর মাতিয়ে জমিয়ে তুলছে। সেখানে ফ্রান্স এর জিদান, মিশরের সালেহ , মোহাম্মদ আলী , করিম আব্দুল জব্বার বাদ নেই। বাংলাদেশের ফুটবল ক্রিকেটের অর্জনও।
আলোচনায় উঠে আসছে – মুসলিম কৃষ্টি , কালচার তুলে ধরবার কাতারের প্রচেষ্টার দিক ণ্ডলি। মাদক ও অশ্লিলতা মুক্ত পরিবেশ পাবার প্রচেষ্টাও।
শেষের এখনও কিছুদিন বাকি। নিস্বন্দেহে আলোচনায় এখন তুঙ্গে থাকবে – কে হবে এবারের বিজয়ী ! সমাপ্তি শেষে আরো অনেক পর্যালোচনা , চুলচেরা বিচার বিচ্ছেলেশনের সুযোগ ত থাকবেই । সুন্দর ,সফল হোক এবারের বিশ্ব কাপ।
মাহবুব রব চৌধুরী, টরেন্টো।