দীন ইসলাম: আপনি কি বিলিওনিয়ার ইলন মাস্কের ব্যবসার পার্টনার হতে চান? তাহলে আর দেরি কেন? এখনই ইনভেস্ট করুন। ইলন মাস্কের এ রকম একটি ফেক (মিথ্যা) ভিডিও ইন্টারনেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে রয়েছে। এ রকম একটি ভিডিও দেখে অন্টারিও’র ইটোবিকোর এলিজাবেথ বেকোস নামের এক নারী সাড়ে সাত লাখ ডলার খুইয়েছেন। টাকা খুইয়ে তাঁর স্ট্রোক হয়েছে। কানাডা থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন মিডিয়াকে তিনি জানান, গত জানুয়ারিতে অর্থ ইনভেস্ট করার জন্য অনলাইনে খোঁজ করেন এলিজাবেথ। এর মধ্যে একটি ওয়েবসাইটে এলিজাবেথ ইলন মাস্কের একটি মিথ্যা ভিডিও দেখেন। ওই ভিডিওতে প্রতিটি শেয়ার ২৫০ ডলারে কেনার জন্য অফার করা হয়। এলিজাবেথ অফারটি যুতসই বিবেচনা করে অনলাইনে নিজের ই-মেইল, ফোন নাম্বার এবং অন্যান্য ইনফরমেশন শেয়ার করেন। এরপর থেকে স্ক্যামাররা ফোনে যোগাযোগ করে নানা চটকদার অফার দিতে থাকেন। যোগাযোগকারিরা বলেন, আপনার জন্য ইনভেস্টমেন্টের এখনই সেরা সময়। মহিলাটির কাছে তখন যোগাযোগকারি ব্যক্তিটি জানতে চান, আপনি কি ইলন মাস্কের কোম্পানিতে ইনভেস্টমেন্ট করেছেন। হ্যা সুচক জবাব দেওয়া মাত্রই। স্ক্যামের শিকার নারী এলিজাবেথ অস্থির হয়ে উঠেন। তখনই যোগাযোগকারির পরামর্শ অনুযায়ি কম্পিউটার প্রোগ্রাম এনি ডেষ্ক ডাউনলোড করেন। তখনই যোগাযোগকারি ব্যক্তি বৃদ্ধ এলিজাবেথের কম্পিউটারে পুরো কন্ট্রোল নিয়ে নেন। এরপর প্রথম দফায় তিন লাখ ডলার নেন। কয়েক দিন পর এলিজাবেথ তার ইনভেস্টমেন্টের লাভ দেখতে চান। তখনই স্ক্যামার একটি ভূয়া কাগজ ধরিয়ে দেন। তবে বৃদ্ধ এলিজাবেথ ওই স্ক্যামারকে কাছে সব মিলিয়ে সাড়ে সাত লাখ ডলার ধরা খান। জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পযন্ত এ সময়ে এলিজাবেদের একাউন্ট থেকে এ অর্থ খোয়া গেছে। অর্থ হারিয়ে এখন নিঃস্ব এলিজাবেথ। রাতে ঘুমাতে পারছেন না। খেতে পারছেন না। এখন তিনি তার অর্থ ফেরত চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। অন্টারিও প্রদেশের লন্ডনে বসবাসরত টেকনোলজি এক্সপার্ট কারমি লেভিন বলেন, এলন মাস্কের মিথ্যা মুখ বানিয়ে এসব ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিচ্ছে স্ক্যামাররা। এটা এক ধরনের ডিজিটাল কারসাজি। কারওই উচিত নয় নিজের কম্পিউটারের কন্ট্রোল অন্য কারও কাছে দেয়ার। এখন এলিজাবেথ বাকোস নিজের বাড়িটি হাতছাড়া হওয়ার চিন্তায় দিন পারছেন। কানাডিয়ান এন্টি ফ্রড সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ি ৩১ শে জুলাই পযন্ত ২৮৪ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারের স্ক্যাম সংগঠিত হয়েছে।