ভারতে গ্রেপ্তার প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের সম্পত্তির বিষয়ে আবারও কানাডার কাছে তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ। চলতি মাসের মাঝামাঝিতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পি কে হালদার গ্রেপ্তার হওয়ার পরপরই কানাডার কাছে বাংলাদেশ এ অনুরোধ জানায়।
কানাডা থেকে একটি কূটনৈতিক সূত্র আজ রোববার প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রটি জানায়, পি কে হালদারের কানাডার সম্পত্তির বিষয়ে জানতে ঢাকা থেকে দূতাবাসকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে কানাডার কাছে পি কে হালদারের তথ্য চাওয়া হয়েছে।বিশেষ করে কানাডায় তাঁর একাধিক বাড়ি ও ব্যাংকে বিপুল অর্থ রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে বলা হয়েছে। ওই সব বাড়ির ঠিকানাসহ চিঠি পাঠিয়ে সেগুলোর মালিক পি কে হালদার কি না, তা কানাডার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা নিয়ে প্রায় আড়াই বছর আগে দেশ ছেড়েছিলেন পি কে হালদার। তিনি কানাডায় গিয়েছিলেন বলে বিভিন্ন খবরে বলা হয়েছিল। এর আগেও একবার কানাডা সরকারের কাছে তাঁর সম্পদের বিষয়ে জানতে চেয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সংশ্লিষ্ট একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, কানাডা কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সেই অনুরোধের বিষয়ে কিছু জানায়নি।
অতীতে কানাডায় কাজ করেছেন এমন একাধিক কূটনীতিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পশ্চিমের অনেক দেশের মতো কানাডায় নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলে তা জানা যায় না। কানাডার আইন অনুযায়ী সে দেশে অবস্থানরত কোনো ব্যক্তির তথ্য জানানোর ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ রয়েছে।
এ বিষয়ে অপর একজন কূটনীতিক জানিয়েছেন, কানাডার প্রাইভেসি আইন ছাড়াও অর্থ পাচারের মতো বড় অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের তথ্য না দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্য কারণ থাকতে পারে।
১৪ মে কলকাতা থেকে পি কে হালদারকে গ্রেপ্তার করে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ইডির রিমান্ড শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের আদালত। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, এখন কারাগারে থাকা পি কে হালদার ও তাঁর পাঁচ সহযোগীকে চাইলে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন ইডির কর্মকর্তারা। মূলত আর্থিক কেলেঙ্কারি, বেআইনিভাবে ভারতে অর্থ পাঠানো, বিদেশে অর্থ পাচার এবং আইনবহির্ভূত সম্পত্তির বিষয়ে তদন্ত করছে ইডি।
বাংলাদেশে ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং পিপলস লিজিংসহ চারটি প্রতিষ্ঠানের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে দুদকের ৩৭টি মামলা রয়েছে।