প্রতিরক্ষা মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়ে অডিটর নিয়োগ পরীক্ষায় ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। এই প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে শুক্রবার রাজধানীর কাফরুল ও কাকরাইল থেকে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এর মধ্যে একজন মাহবুবা নাসরিন রূপা। তিনি বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেত্রী।
মাহবুবা নাসরিন রূপার ফেসবুক আইডিতে দেখা যায়, তিনি ছাত্রলীগ ইডেন মহিলা কলেজ শাখার সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। একই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদকেরও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরে ২০১৮ সালে দুপচাঁচিয়া উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু শনিবার সন্ধ্যায় সমকালকে বলেন, মাহবুবা নাসরিন রূপা ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী। বর্তমানে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
গ্রেপ্তারের পর তার বিরুদ্ধে দলীয় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘তার গ্রেপ্তারের খবর কেবলমাত্র শুনলাম। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
দুপচাঁচিয়া উপজেলার একাধিক ব্যক্তি জানান, মাহবুবা নাসরিন রূপা নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান হলেও তিনি এলাকায় সেভাবে থাকেন না। মাঝেমধ্যে আসেন, আবার চলে যান ঢাকায়। এলাকায় আসলে আওয়ীমী লীগের জাতীয় নেতাদের সঙ্গে ঢাকায় তার তোলা ছবি মোবাইল ফোনে লোকজনকে দেখাতেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ভূঁইপুর গ্রামে। নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মীদের সমর্থন ছিল তার প্রতি।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, মাহবুবা নাসরিন প্রশ্নফাঁস চক্রের অন্যতম হোতা। নিয়োগের কথা বলে চাকরিপ্রার্থী সংগ্রহ করতেন তিনিসহ কয়েকজন।
ডিবি কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রতিরক্ষা মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়ের অধীন ডিফেন্স ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের ৫৫০টি অডিটর পদে নিয়োগের জন্য শুক্রবার ৭০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ডিবির গুলশান বিভাগ তথ্য পায়-চক্রের সদস্যরাই পরীক্ষার্থী সেজে কেন্দ্রে ডিজিটাল ডিভাইস নিয়ে যায়। প্রশ্নপত্র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে তারা ডিভাইসের মাধ্যমে চক্রের অপর সদস্যদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। বাইরে থেকে তারা প্রশ্ন সমাধান পাঠিয়ে দেয় কেন্দ্রে। চাকরি প্রার্থীদের এভাবেই তার পাস করাতেন তারা। এর জন্য প্রতি চাকরি প্রার্থীর কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা নিতেন। অগ্রিম হিসেবে নেওয়া হত দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা।