বসেন সুসজ্জিত অফিসে। পরেন দামি দামি স্যুট, টাই। কথাবার্তা, চালচলন এবং আভিজাত্যের ছাপ দেখে বোঝার উপায় নেই তিনি গ্রিলকাটা চোর দলের সর্দার। অহিদুল ইসলাম নয়ন (৪০) নামের এ দুর্ধর্ষ গ্রিলকাটা চোরকে বুধবার রাতে ঢাকার উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি থানার পুলিশ।
বরিশালের বাকেরগঞ্জ থানার কাকুড়িয়া এলাকার শাহ আলম মোল্লার ছেলে নয়নের বিরুদ্ধে গাজীপুরে বাসা-বাড়ির দরজা ও গ্রিল কেটে চুরি, অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইন, যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগে বিভিন্ন থানায় ৮/১০টি মামলা রয়েছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোনাবাড়ি থানার ওসি আবু সিদ্দিক জানান, গত ১৫ মার্চ কোনাবাড়ি থানার হরিণাচালা এলাকার হাবিবুর রহমানের ৭ম তলার ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে নগদ ৪৫ হাজার টাকা, একটি ল্যাপটপ এবং মোবাইলসহ বিভিন্ন মূল্যবান মালামাল লুট হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি মোবাইল ফোন কলের সূত্র ধরে সম্প্রতি বিভিন্ন স্থান থেকে নয়নের দুই ভাইসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই জনের আদালতে দেয়া স্বীকারেক্তিমূলক জবানবন্দিতে বেরিয়ে আসে দলনেতা নয়নের নাম। তাদের দেয়া তথ্যে বুধবার রাতে ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে নয়নকে গেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে চারটি চোরাই মোবাইল ফোন, বিভিন্ন চোরাই মালামাল এবং চুরির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার হয়।
ওসি আরো জানান, এ চক্রের সদস্যরা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে গাজীপুর ও রাজধানী উত্তরায় চুরি করতো। চুরির আগে তারা বাসা টার্গেট করে খোঁজ খবর নিত। চুরির ঘটনায় মামলা হলে তদন্ত কর্মকর্তাসহ পুলিশ সদস্য ও বাদী পক্ষকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে ভয়ভীতি এবং ব্ল্যাকমেইলিং করতো দলনেতা অহিদুল ইসলাম নয়ন। গাজীপুর শহরের জয়দেবপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শহীদ নিয়ামত সড়কে তার একটি সুসজ্জিত বিশাল অফিস রয়েছে। ওই অফিসে বসেই তিনি বাসা বাড়িতে চুরির ঘটনাগুলো নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করতো। প্রায় সবগুলো চুরিতেজ নয়ন নিজে উপস্থিত থাকতেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়নকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন আদালতে পাঠানো হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তিনি আরো জানান, স্যুটটাই পরে ঘুরলেও নয়ন প্রাইমারীর গন্ডিও পার হননি। মূলত মানুষকে ধোকা এবং পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতেই দামি পোশাক পরতেন