বিশ্বজুড়ে নতুন আতঙ্ক-পেগাসাসকাণ্ড। এতে আছে বাংলাদেশের নাম। ইসরাইলের এনএসও গ্রুপের তৈরি ফোনে আড়ি পাতা বিষয়ক প্রযুক্তি পেগাসাস। বিশ্বে ভয়াবহ রকম মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে এমন সব দেশ বা সেখানে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিভাগগুলো ব্যবহার করছে এই প্রযুক্তি। বেশকিছু দেশে তা ব্যবহার করা হচ্ছে বা হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এমন ইঙ্গিতও মিলেছে। ফলে অপরাধ তদন্তের বৈধ একটি হাতিয়ার এই প্রযুক্তি, এমন দাবি করলেও এর ব্যবহার নিয়ে ব্যাপক সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। কানাডার অনলাইন সিটিজেন ল্যাব তার পেগাসাস কেলেঙ্কারি বিষয়ক ‘হাইড অ্যান্ড সিক’ শীর্ষক ৪০ পৃষ্ঠার রিপোর্টে এসব কথা লিখেছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধান, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, কূটনীতিক, রাজনীতিক, সাংবাদিক, অধিকারকর্মীর ব্যবহার করা ৫০ হাজার ফোন নম্বরের গোপন তথ্য চুরি করা হয়েছে।কি পরিমাণ মানুষ এর শিকারে পরিণত হয়েছেন, তার প্রকৃত সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কেউ কেউ বলছেন, এ সংখ্যা অনেক বেশি। অনলাইন বিবিসি ও গার্ডিয়ান বলেছে, কর্তৃত্ববাদী ও বিশ্বের সবচেয়ে নিষ্পেষণমূলক কিছু শাসকগোষ্ঠী ইসরাইলে তৈরি পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করেছে তার সমালোচক, বিরোধী পক্ষের বিরুদ্ধে। এ খবরে রীতিমতো তুলকালাম কাণ্ড সৃষ্টি হয়েছে বিশ্বজুড়ে। কোথায় কোন রাজনীতিক ফেঁসে যাচ্ছেন, কোন প্রধানমন্ত্রীর গোপন কথোপকথন এর মধ্য দিয়ে ফাঁস হয়ে যাচ্ছে তা নিয়ে শিরদাঁড়া বেয়ে নামছে হিম আতঙ্ক। তবে পেগাসাসের প্রস্তুতকারী ইসরাইলের এনএসও গ্রুপ কোনো অন্যায় করেনি বলে দাবি করেছে। তারা বার বার বলেছে, তাদের আবিষ্কৃত পেগাসাস শুধু সন্ত্রাসী ও ভয়াবহ অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য। কিন্তু সরকারগুলো তা ব্যবহার করছে এর বাইরে নিজেদের উদ্দেশ্যে। এনএসও স্বীকার করুক বা না করুক এরই মধ্যে পেগাসাসের মাধ্যমে ফোন ব্যবহারকারীর ফোনকল, কন্ট্রাক্ট লিস্ট, টেক্সট মেসেজ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আড়ি পাতা হয়েছে।
কানাডার সিটিজেন ল্যাব লিখেছে, ৪৫টি দেশে তারা ৩৬টি পেগাসাস অপারেটরের মধ্যে ৩৩টির সঙ্গে সন্দেহজনক ‘পেগাসাস ইনফেকশন’ সনাক্ত করতে পেরেছে। এসব দেশের মধ্যে আছে বাংলাদেশ, আলজেরিয়া, বাহরাইন, ব্রাজিল, কানাডা, কোস্টারিকা, মিশর, ফ্রান্স, গ্রিস, ভারত, ইরাক, ইসরাইল, জর্ডান, কাজাখস্তান, কেনিয়া, কুয়েত, কিরগিজস্তান, লাতভিয়া, লেবানন, লিবিয়া, মেক্সিকো, মরক্কো, নেদারল্যান্ডস, ওমান, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, পোল্যান্ড, কাতার, রোয়ান্ডা, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইজারল্যান্ড, তাজিকিস্তান, থাইল্যান্ড, টোগো, তিউনিশিয়ান, তুরস্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উগান্ডা, বৃটেন, যুক্তরাষ্ট্র, উজবেকিস্তিান, ইয়েমেন ও জাম্বিয়া। এই শনাক্তকরণে ব্যবহার করা হয়েছে ডিএনএস সার্ভার।
এশিয়ায় ৫টি এমন অপারেটর শনাক্ত করতে পেরেছে সিটিজেন ল্যাব। এগুলো হলো গ্যাংস, চ্যাঙ, মারলিয়ন, তুলপার ও সিরদারিয়া। বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের জুন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বাংলাদেশ, ব্রাজিল, হংকং, ভারত ও পাকিস্তানে আড়ি পাতার কাজ করছে গ্যাংস নামের অপারেটর। এক্ষেত্রে রাজনীতিকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। রিপোর্টের ৩৮ নম্বর পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, অপারেটর গ্যাংসয়ের সন্দেহজনক সংক্রমণের স্থান হলো বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল), সারা দেশ। চ্যাং নামের অপারেটর থাইল্যান্ডে চোখ রেখেছে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে। কাজাখস্তানে ২০১৭ থেকে এখন পর্যন্ত সক্রিয় অপারেটর তুলপার। কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, তুরস্কে সক্রিয় ২০১৬ থেকে এখন পর্যন্ত সিরদারিয়া নামের অপারেটর।
এর আগে প্রকাশ হয়েছিল পানামা পেপারস। তাতে কুপোকাত হয়েছেন আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিগমুন্দুর ডেভিড গানল্যাংসন পদত্যাগ করেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ অযোগ্য ঘোষিত হয়ে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান। এবারও কি তেমন ঘটনার অবতারণা ঘটবে বিশ্বের কোথাও, তা নিয়ে চলছে জল্পনা। পেগাসাস ব্যবহার করে এই হ্যাকিং বা নাগরিকদের তথ্য চুরির বিষয় তদন্ত করছে প্যারিসভিত্তিক এনজিও ফরবিডেন স্টোরিস, মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, গার্ডিয়ান, লা মন্ডেসহ ১৪টি বিভিন্ন সংবাদভিত্তিক সংগঠন। তাদের এ প্রজেক্টের নাম দেয়া হয়েছে পেগাসাস প্রজেক্ট। ইসরাইলের বহুল বিতর্কিত এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে টার্গেট করা আইফোন এবং অ্যান্ড্রয়েডকে মেলওয়্যারের মাধ্যমে সংক্রমিত করা হয়। এর ফলে পেগাসাস অপারেটর ওইসব ফোনের মেসেজ, ছবি, ই-মেইল, কল তাদের হাতে পেয়ে যায়। গোপনে সক্রিয় হয়ে যায় মাইক্রোফোন, ক্যামেরা। কিন্তু ফোনের ব্যবহারকারী সে বিষয়ে মোটেও বুঝতে পারেন না। পেগাসাস দিয়ে যেসব মানুষের ফোন হ্যাক করা হয়েছে তার মধ্যে কমপক্ষে ৫০টি দেশের কমপক্ষে ১০০০ মানুষকে শনাক্ত করা গেছে। এর মধ্যে আছেন রাজনীতিক, রাষ্ট্রের প্রধান, ব্যবসায়ী নির্বাহী, অধিকারকর্মী, সৌদি আরবের রাজপরিবারের বেশকিছু সদস্য। এই তালিকায় আছেন সিএনএন, নিউ ইয়র্ক টাইমস, আল জাজিরার মতো সংগঠনের কমপক্ষে ১৮০ জন সাংবাদিক। বেশির ভাগ ফোন নম্বর হলো ১০টি দেশের। এ দেশগুলো হলো- আজারবাইজান, বাহরাইন, হাঙ্গেরি, ভারত, কাজাখস্তান, মেক্সিকো, মরক্কো, রোয়ান্ডা, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
এই আড়িপাতা নিয়ে তদন্ত করছে যেসব আউটলেট তারা সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে এ নিয়ে যোগাযোগ করেছে। এতে ওইসব দেশ থেকে বলা হয়েছে, তারা পেগাসাস ব্যবহার করে না অথবা তারা নজরদারি করার ক্ষেত্রে ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। প্রকৃতপক্ষে কি পরিমাণ ফোনকে টার্গেট করা হয়েছিল পরিষ্কারভাবে সে বিষয়ে তথ্য নেই। কিন্তু ৩৭টি ফোনের ওপর ফরেনসিক তদন্তে দেখা গেছে, তাদের ফোনে হ্যাক করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল এবং এক্ষেত্রে সফল হয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
বিবিসি লিখেছে, ইসরাইলে তৈরি এই স্পর্শকাতর প্রযুক্তি ব্যবহার করে আড়ি পাতার অভিযোগ নতুন নয়। কিন্তু এবার যে পরিমাণ নিরপরাধ মানুষকে টার্গেট করা হয়েছে, সেই সংখ্যাটা নতুন। ২১টি দেশের প্রায় ২০০ সাংবাদিকের ফোন নম্বর রয়েছে ওই তালিকায়। সরকারি উচ্চ পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেন এমন অনেক নাম সামনের দিনগুলোতে প্রকাশ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই তালিকা বা অভিযোগ নিয়ে অনেক প্রশ্নের কোনো সমাধান হয়নি। এর মধ্যে এসব তালিকা কোথা থেকে এসেছে, স্পাইওয়্যার পেগাসাস দিয়ে আসলে কতো বেশি ফোন নম্বরকে টার্গেট করা হয়েছিল। এনএসও গ্রুপ আরও একবার তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলেছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ মানে তাদের কোম্পানির প্রতি আঘাত। সর্বশেষ এসব অভিযোগ তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবে। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কোম্পানি।
কিন্তু এর মধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকদের তথ্য প্রকাশ হয়ে পড়েছে। যেমন আজারবাইজানে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় ইলহাম আলিয়েভ। তিনি ভিন্নমতাবলম্বীদের সহ্য করতে পারেন না বললেই চলে। সেদেশের বিপুলসংখ্যক অধিকারকর্মীর তথ্য প্রকাশ হয়ে পড়েছে। অনলাইনে বা টেলিভিশনে তাদের অনেকের ব্যক্তিগত অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি এরই মধ্যে প্রকাশ হয়ে গেছে। ভিন্নমতাবলম্বী বা অধিকারকর্মী এমন কমপক্ষে ৬ জনের প্রাইভেট কিছু বিষয় ২০১৯ সালে টেলিভিশনে প্রচার করা হয়েছিল। সেইসব তথ্য ফাঁস হওয়া গেপাসাস প্রজেক্টেও রয়েছে। সেখানে নারী অধিকারকর্মীদের টার্গেট করা হয় যৌনতাকে ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইলের জন্য। এমনই একটি ঘটনা প্রকাশ হয় ২০১৯ সালে। তখন নাগরিক সমাজের অধিকারকর্মী এবং সাংবাদিক ফাতিমা মোভলামলি’র অন্তরঙ্গ বেশকিছু ছবি ফেসবুকের একটি ভুয়া পেজে ফাঁস করা হয়। তখন ফাতিমার বয়স মাত্র ১৮ বছর। কীভাবে ওইসব ছবি ফাঁস হয়েছে তা পরিষ্কার নয়। ফাতিমা মনে করেন, পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় তার ফোন নিয়ে নেয় এবং তা আনলক করতে বাধ্য করে তাকে। তার ধারণা এ সময়ই মোবাইল ফোন থেকে তার ব্যক্তিগত ডাটা সংগ্রহ করেছে পুলিশ। এবার পেগাসাস প্রজেক্টেও তার সব তথ্য আছে। এমনকি তার মোবাইল ফোনের নম্বর পর্যন্ত আছে তাতে।
ফাতিমা বলেন, আমার যে বয়স ছিল, তখন আমি নিজে একজন নারী এমন পূর্ণাঙ্গ ধারণা আমার আসেনি। কিন্তু ওই সময়ে আমার শরীর নগ্ন দেখানো হয়েছে মানুষকে। এই অভিজ্ঞতা বহন করা আমার জন্য খুবই কঠিন। এমনকি আমি এজন্য আত্মহত্যার চিন্তা পর্যন্ত করেছি। আমার দেশে একজন নারীকে সীমাবদ্ধ স্বাধীনতার মধ্যে বসবাস করতে হয়, যেটুকু পুরুষরা অনুমোদন করেন। কোনো নারীর শরীর দেখা গেলে তারা তা নিয়ে বিদ্রূপ করেন। এ জন্য আমি মাঝে মাঝেই এখন আমার ফোন পরিবর্তন করি।
ভারতের দিল্লিতে অবস্থিত জহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটির একজন ছাত্র অধিকারকর্মী ও ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্টস ইউনিয়নের নেতা উমর খালিদ। ২০১৮ সালের শেষের দিকে তাকে সম্ভবত টার্গেট করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলার অল্প আগে টার্গেট করা হয়। দাঙ্গা সংগঠনের অভিযোগে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ দাবি করে, তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। এর মধ্যে অন্যতম প্রমাণ হলো তার মোবাইল ফোনে কমপক্ষে ১০ লাখ পৃষ্ঠার তথ্য আছে। কিন্তু পুলিশ কীভাবে এইসব তথ্য হাতে পেয়েছে সে সম্পর্কে কিছুই জানায়নি। বর্তমানে উমর জেলে রয়েছেন।
উপজাতি বা আদিবাসী সম্প্রদায় বা ভারতের নিম্নবর্ণের মানুষদের অধিকার নিয়ে যেসব লেখক, আইনজীবী এবং আর্টিস্ট কাজ করেন তাদের মোবাইলে আড়ি পাতা হয়েছে। এসব ব্যক্তির অনেককে গত তিন বছরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিষয়ক অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদিকে হত্যা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন ৮৪ বছর বয়সী ধর্মীয় নেতা স্ট্যান স্বামী। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ মাসে জেলে মারা গিয়েছেন। রেকর্ড বলছে তার সহযোগীদের মধ্যে আছেন হ্যানি বাবু, সোমা সেন এবং রোনা উইলসন। তাদেরকে গ্রেপ্তারের কয়েক মাস বা বছর আগে নির্বাচিত করে টার্গেট করা হয়ে থাকতে পারে।
২০১৮ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে অপহরণ করা হয় সৌদি আরবের নারী অধিকারের সবচেয়ে সামনের সারির কর্মী লুজাইন আল হাথলুলকে। এরপর তাকে জোর করে সৌদি আরবে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তিন বছর ধরে তাকে জেলে রাখা হয়। এ সময় তার ওপর নির্যাতনের অভিযোগ আছে। তাকে আমিরাতে অপহরণের কয়েক সপ্তাহ আগে সম্ভবত টার্গেট করা হয়েছিল। তাই ধারণা করা হয় এসএসও গ্রুপের অন্যতম ক্লায়েন্ট বলে পরিচিত এবং সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাত তাকে টার্গেট করে থাকতে পারে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে জেল থেকে মুক্তি পান লুজাইন। তা সত্ত্বেও দেশের ভেতরেও তিনি অবাধে চলাফেরার অনুমতি পাননি। তার বিদেশ সফর নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর আগে তিনি জানিয়েছিলেন যে, তার ই-মেইল হ্যাক হয়েছে। ২০১৮ সালে লুজাইনকে গ্রেপ্তারের আগে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সৌদি আরবের অধিকারকর্মী হালা আল দোসারি। তিনি বলেছেন, লুজাইন যেসব মানুষকে সংগঠিত করছেন তার সেই নেটওয়ার্কের নারীদের সম্পর্কে জানার জন্য এই হ্যাক করা হয়ে থাকতে পারে।
মেক্সিকোতে অধিকারকর্মী, আইনজীবী এবং বিপুলসংখ্যাক ক্যাম্পেইনারকে টার্গেট করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন একজন বিচারক এডুয়ার্দো ফেরের ম্যাক-গ্রেগর পোইসট। তিনি ইন্টার-আমেরিকান কোর্টের মানবাধিকার বিষয়ক প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এ ছাড়া টার্গেট করা হয়েছে ক্যাথোলিক যাজক ও অভিবাসী অধিকারকর্মী আলেজান্দ্রো সোলালিন্ডে’কে। তিনি বলেন, মেক্সিকোর আগের সরকার আমার সুনাম ধ্বংস করে দেয়ার চেষ্টা করেছে। এক্ষেত্রে ব্যবহার করেছে ব্ল্যাকমেইল। কারণ, আমি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে সমর্থন করেছিলাম। এজন্য জাতীয় গোয়েন্দা বিষয়ক এজেন্সির একজন সাবেক এজেন্ট তাকে সাবধান করেছিলেন।
২০১৬ সালে আমিরাতের অধিকারকর্মী আহমেদ মানসুরকে টার্গেট করা হয়। এ বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সিটিজেন ল্যাব।