দেশজুড়ে করোনার দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্ট বা ধরন ছড়িয়ে পড়েছে। তা বেশ সংক্রামক এবং এর তীব্রতাও ভয়াবহ উল্লেখ করে উদ্বেগ জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। করোনার এই নতুন ধরনটি দ্রুত ছড়াচ্ছে। এতে মানুষ দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এর লক্ষণ বা উপসর্গ আগের ধরনের চেয়ে কিছুটা আলাদা। এর কারণে মানসিক সমস্যা হচ্ছে রোগীদের। নতুন এ ধরনে নয়া চ্যালেঞ্জ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। করোনার নতুন এই ধরনে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাও বেশি।
অথচ আগের ধরনটিতে দ্বিতীয় বার আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা ছিল খুবই কম। এবারের ভ্যারিয়েন্ট খুব দ্রুতই রোগীদের অবস্থার অবনতি ঘটাচ্ছে। ফলে অনেক রোগীকে সুস্থ করে তোলা কঠিন হয়ে পড়ছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে সামনের দিনগুলোয় দেশে শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকলে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ধরনটিকে দেশের জন্য ‘অশনি সংকেত’ বলেছেন তারা।
জাতীয় পরামর্শক কমিটির অন্যতম সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টটি ইউকে’র ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে বিপদজনক। এটি খুব দ্রুত ছড়ায়। এর বৈশিষ্ট্য হলো- সংক্রমণ অনেক বেশি। এটির বিরুদ্ধে আমাদের আগের ভ্যারিয়েন্টের অ্যান্টিবডি কাজ নাও করতে পারে। তিনি আরো বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। পরামর্শক কমিটি আইসিইউ ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা বৃদ্ধির কথা বলেছিল। কিন্তু করা হয়নি। আইসিইউ চালানোর মতো দক্ষ জনবলও নেই। বর্তমান সংক্রমণের গতি এবং মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া দেখে দেশে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।
চিকিৎসকরা বলছেন, দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের মাধ্যমে যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের সঙ্গে আগে আক্রান্ত হওয়া রোগীদের বেশ কিছু পার্থক্য বা এক্ষেত্রে নতুন কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের নিয়মিত সেবা দিচ্ছেন হাসপাতালটির মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফজলে রাব্বী। তিনি বলেন, প্রথম দফার তুলনায় এবারে রোগীদের একটি অংশের মধ্যে অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়ার একটি প্রবণতা চিকিৎসকরা দেখতে পাচ্ছেন। অনেককে আক্রান্ত হওয়ার ৬/৭ দিনের মধ্যেই উচ্চমাত্রার অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। তাও আবার সেটি তুলনামূলক দীর্ঘ সময়। যেমন ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে। ডা. ফজলে রাব্বী বলেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে সেকেন্ড ওয়েভ বা দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্যাটার্ন আগের তুলনায় অনেকটাই ভিন্ন। এবারে আক্রান্তদের অনেকের মধ্যে স্নায়ুতন্ত্রের উপসর্গ আরও প্রকট দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে অনেকের প্রচণ্ড মাথাব্যথা হচ্ছে বলে জানান। এবার নিউরোসাইক্রিয়াটিক সমস্যা, যেমন কারও কারও মধ্যে পাগলামি আচরণের প্রবণতা কিংবা ব্রেইন ইনফেকশনের মতো উপসর্গও দেখা যাচ্ছে। ডা. ফজলে রাব্বী বলেন, তাদের হাসপাতালে এমন অনেক রোগী তারা পেয়েছেন, যাদের রক্তের অনুচক্রিকার সঙ্গে হিমোগ্লোবিনও কমে যাচ্ছে- যদিও তাদের আগে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার রোগ বা রেকর্ড নেই। অথচ গত বছর প্রথম দফার সংক্রমণের সময় অনেকের রক্তের অনুচক্রিকা কমলেও তখন হিমোগ্লোবিনের সমস্যা রোগীদের মধ্যে পাইনি।
আর এসব নতুন ধরনের সমস্যার কারণে অবস্থার দ্রুত অবনতি হয়ে অনেককে খুব তাড়াতাড়ি আইসিইউতে নিতে হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। একই হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, চলতি ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগীদের অবস্থা একটু খারাপ হলে তা দ্রুতই খারাপতর হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আগে আইসিইউতে কোনো রোগী এলে বেশির ভাগকেই আমরা ৮/১০ দিনের মধ্যে রিকভারি করে কেবিনে পাঠাতে পেরেছি। কিন্তু এবার সেটি হচ্ছে না। এবার দীর্ঘ সময় লাগছে এবং আইসিইউ থেকে অনেকে আবার ফিরতেও পারছেন না। মূলত অনেকেরই ফুসফুস দ্রুত সংক্রমিত হচ্ছে এবং রক্ত জমাট বাঁধছে।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছিল ২০২০ সালের ৮ই মার্চ। তখন চিকিৎসরা এর উপসর্গ হিসেবে জ্বর, শুষ্ক কাশি, শরীর ব্যথার মতো উপসর্গের কথা জানিয়েছেন। এখন গবেষকরা বলছেন যে, বাংলাদেশে বর্তমানে করোভাইরাসের দু’টো নতুন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়েছে এবং এদের মধ্যে ইউকে ভ্যারিয়েন্ট শুরুতে শনাক্ত হলেও এখন সবচেয়ে বেশি প্রকোপ দক্ষিণ আফ্রিকার প্রজাতিটির। রোগীদের চিকিৎসার সঙ্গে সরাসরি জড়িত চিকিৎসকরা বলছেন যে, নতুন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের মধ্যে নানান নতুন বৈশিষ্ট্য দেখতে পাচ্ছেন তারা।
আইসিইউ বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আগে আইসোলেশনে থাকার সময় চিকিৎসাতেই সুস্থ হয়ে উঠতো বেশির ভাগ রোগী। কিন্তু এখন ফুসফুস খুব দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং অক্সিজেন লেভেলও আগের তুলনায় দ্রুত কমে যাচ্ছে। ডা. সাজ্জাদ হোসেন আরো বলেন, আগে যাদের অক্সিজেন দরকার হতো, তাদের হয়তো দুই লিটার দিয়ে শুরু করে পর্যায়ক্রমে ৫/১০/১৫/২০ লিটার বা প্রয়োজনে হাই-ফ্লো নেজাল অক্সিজেন দেয়া হতো। অবস্থার অবনতি হলে কয়েকটি ধাপে চিকিৎসা দেয়ার পরে আরও অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হতো। কিন্তু এখন এতো সময়ই পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ভাইরাসটি থেকে সংক্রমিত হওয়ার ধরনেও পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছেন তারা। রেকর্ড নিতে গিয়ে দেখি, আগে হয়তো একজন-থেকে একজন সংক্রমণই বেশি হতো। কিন্তু এবারে আক্রান্তরা তাদের কাছে থাকা ৩/৪ জনকে একসঙ্গে সংক্রমিত করছেন।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, নতুন এই ধরনটি যেহেতু দ্রুত ছড়ায় এখনই ব্যবস্থা না নিলে সামনের দিনগুলোতে সংক্রমণের সংখ্যাও বাড়বে, মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়ে যাবে।
এই ক্ষুদ্র জেনেটিক পরিবর্তনের মাধ্যম ভাইরাসটি নতুন কপি তৈরি করে যা আরও দ্রুত ও তীব্রভাবে ছড়াতে পারে। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের হুমকি। এই ধরনটি বয়স্ক এবং আগে থেকেই অসুস্থদের ক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানা গেছে। নতুন ধরনটি যেহেতু সহজেই এবং দ্রুত ছড়ায় তাই এর বিরুদ্ধে টিকা যথেষ্ট কার্যকর নাও হতে পারে বলে উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা ।
অন্যদিকে, কেউ যদি আগে একবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তাহলে তার শরীরে যে প্রাকৃতিক ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয় সেটা সাউথ আফ্রিকান ধরনের ক্ষেত্রে কাজ করে না বলে জানান জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ। এককথায় দক্ষিণ আফ্রিকার এই ধরনটিকে মারাত্মক আখ্যা দিয়ে একে বাংলাদেশের জন্য ‘অশনি সংকেত’- বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। তবে এই বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে এখন যে টিকাটি আছে সেটারই সম্পূর্ণ ডোজ সম্পন্ন করার দিকে তারা মনোযোগ দিচ্ছেন। টিকা নিলেও করোনাভাইরাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা জানান তিনি।
করোনাভাইরাসের নতুন এই ভ্যারিয়েন্টটির প্রতিকারের চাইতে প্রতিরোধের ওপরেই বেশি জোর দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, টানা তিন সপ্তাহ মানুষের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা বা কঠোর লকডাউন ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আর কোনো উপায় নেই। কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অর্থাৎ মাস্ক পরা, তিন ফুট সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, বার বার সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া ভয়াবহ এই ভ্যারিয়েন্ট থেকে বাঁচার সবচেয়ে কার্যকর পথ। এছাড়া, বাংলাদেশে শনাক্ত ভাইরাসের জেনম সিকোয়েন্স বা জিন বিশ্লেষণের মাধ্যমে সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টটি কতোটা ছড়িয়েছে সেটা পুনরায় নিশ্চিত হয়ে টিকা দেয়ার কৌশলে পরিবর্তন আনতে হবে বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
দেশে সক্রিয় করোনার ৮১ শতাংশ আফ্রিকান ধরন: দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত অতি সংক্রামক করোনার ধরনটি মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় বলে উঠে এসেছে আইসিডিডিআর,বি’র এক গবেষণায়। আইসিডিডিআর,বি বুধবার তাদের ওয়েবসাইটে গবেষণার ফল প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, মার্চের শেষ সপ্তাহে দেশে করোনাভাইরাসের যে ধরনগুলো সক্রিয় ছিল, তার ৮১ শতাংশই দক্ষিণ আফ্রিকার ধরন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং আইইডিসিআর’র সঙ্গে মিলে গত ডিসেম্বর থেকে এই গবেষণা শুরু করে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর,বি। গবেষকরা গত ১লা জানুয়ারি থেকে ২৪শে মার্চ পর্যন্ত মোট ১৬ হাজার ২৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করেন এবং তার মধ্যে ২ হাজার ৭৫১টি নমুনা ‘পজিটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত হয়, যা ১৭ শতাংশ। পজিটিভ নমুনাগুলোর মধ্যে ৪৪৩টি নমুনার স্পাইক জিন সিকোয়েন্সিং করা হয়। আইসিডিডিআর,বি’র করা সিকোয়েন্সিংয়ে ৬ই জানুয়ারি প্রথমবার যুক্তরাজ্যের ধরনটি শনাক্ত হয়। অবশ্য করোনাভাইরাসের এ ভ্যারিয়েন্টটি গতবছরের ডিসেম্বর থেকেই বাংলাদেশে আছে বলে সার্স-সিওভি-২ সিকোয়েন্স ডেটাবেইজে তথ্য রয়েছে।
আইসিডিডিআর,বি’র গবেষণায় দেখা যায়, মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের যুক্তরাজ্যের ধরনটির সক্রিয়তা বাড়ছিল। সে সময় সক্রিয় সবগুলো ধরনের মধ্যে ৫২ শতাংশ ছিল ইউকে ভ্যারিয়েন্ট। কিন্তু মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্টটি আবির্ভূত হলে নাটকীয় পরিবর্তন দেখা যায়। অন্য সব ধরনকে ঠেলে দক্ষিণ আফ্রিকার ধরনটি অতিমাত্রায় সক্রিয় হয়ে ওঠে।
মার্চের শেষ সপ্তাহে সক্রিয় সবগুলো ধরনের মধ্যে ৮১ শতাংশই ছিল আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্ট। গবেষকরা বলছেন, দেশে করোনাভাইরাসের বিভিন্ন ধরন নিয়ে এখন নিয়মিত নজরদারি দরকার, কারণ রোগী ব্যবস্থাপনা ও টিকার কার্যকারিতার জন্য বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।
একদিনে সর্বোচ্চ ৭৪ জনের মৃত্যু
দেশে করোনায় মৃত্যুর মিছিল দ্রুত দীর্ঘ হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৭৪ জন। এটিই এখন পর্যন্ত একদিনে দেশে সর্বোচ্চ মৃতের সংখ্যা। এর আগে গত মঙ্গলবার সর্বোচ্চ মৃত্যু ছিল ৬৬ জন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু হয়েছে ৯ হাজার ৫২১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৮৫৪ জন। এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৬৬ হাজার ১৩২ জন। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৩৯১ জন, এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৬৫ হাজার ৩০ জন। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৩৩ হাজার ৩২৮টি, অ্যান্টিজেন টেস্টসহ নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৩ হাজার ১৯৩টি। এখন পর্যন্ত ৪৯ লাখ ১৫ হাজার ৭৫৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং এখন পর্যন্ত ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৪ দশমিক ৮২ শতাংশ এবং মৃত্যু হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৪৮ জন পুরুষ এবং নারী ২৬ জন। এখন পর্যন্ত পুরুষ ৭ হাজার ১৩০ জন এবং নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ২ হাজার ৩৯১ জন। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৬০ বছরের উপরে ৪৬ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৬ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৫ জন এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছেন। বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায়, মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগেই মারা গেছেন ৪৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩ জন, খুলনা বিভাগে ৭ জন, বরিশাল বিভাগে ৪ জন এবং সিলেট বিভাগে ২ জন। ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ৭০ জন এবং বাসায় ৪ জন।
একদিনে দ্বিতীয় ডোজের টিকাগ্রহীতা ৮১ হাজার: দেশে টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে গতকাল দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৮১ হাজার ৩২৩ জন। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরে নিয়েছেন ১৪ হাজার ৪৬৩ জন। অন্যদিকে সারা দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরুর ৫০তম দিনে প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন ১৪ হাজার ৮০৪ জন। এর মধ্যে ঢাকায় নিয়েছেন ২ হাজার ৮৬০ জন। এ পর্যন্ত দেশে মোট টিকা নিয়েছেন ৫৫ লাখ ৮৩ হাজার ৫০৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৩৪ লাখ ৬২ হাজার ৫৬৯ জন এবং নারী ২১ লাখ ২০ হাজার ৯৩৬ জন। টিকা নেয়ার পর সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে ৯৪১ জনের। গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টিকা নিতে অনলাইনে মোট নিবন্ধন করেছেন ৬৯ লাখ ৯২ হাজার ৭৯০ জন। গত ২৭শে জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে গণ টিকাদান শুরু হয় ৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে।উৎসঃ মানবজমিন