অর্থপাচার রোধে বিভিন্ন সময় বিদেশে অবস্থানকারীদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কাছে তথ্য চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। এমন নির্দেশনার ধারাবাহিকতায় দ্বৈত নাগরিকদের তথ্য জমা পড়েছে উচ্চ আদালতে।
অর্থপাচারকারীদের তালিকা চাওয়ার পর গত ২১ ডিসেম্বর দ্বৈত নাগরিক ও দ্বৈত পাসপোর্টধারীদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
নির্দেশনার আলোকে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ওই প্রতিবেদনে থাকা তালিকায় ১৩ হাজার ৯৩১ জন দ্বৈত নাগরিকের তথ্য জানানো হয়েছে। পুলিশের বিশেষ শাখার (ইমিগ্রেশন) পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন দাখিল করা হয় হাইকোর্টে।
প্রতিবেদন পাওয়ার পর সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আজ (৩১ মার্চ) প্রতিবেদনটি হাতে পেয়েছি। এর এফিডেভিট প্রক্রিয়া চলছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্বৈত পাসপোর্টধারী এবং নাগরিকদের মধ্যে যারা বিদেশে যাওয়া-আসা করেন, ইমিগ্রেশন ডাটাবেজ অনুসারে তাদের সংখ্যা ১৩ হাজার ৯৩১ জন। কিন্তু বিদেশে টাকা পাচার বা বাড়ি বানিয়েছেন এমন তথ্য ইমিগ্রেশন বিভাগে নেই।
কোন দেশের কতজন দ্বৈত নাগরিক?
আমেরিকা ও বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে ১০ হাজার ৭৭৪ জনের। আফগানিস্তানের ৯ জনের, আলজেরিয়ার ১ জনের, এন্টিগুয়ার ৫ জন, অস্ট্রেলিয়ার ১৭৮ জন, অস্ট্রিয়ার ৭ জন, বাহামিয়ান ১ জন, বাহরাইনের ২ জন, বারবাদোসের ১ জন, বেলজিয়ামের ২১ জন, ভুটানের ২ জন, বলিভিয়ার ১ জন, বসনিয়ার ১ জন, ব্রাজিলের ২ জন, ইংল্যান্ডের ৫৬৮ জন, ব্রুনাইয়ের ২ জন, বুলগেরিয়ার ১ জন, কানাডার ৩৮৯ জন, কম্বোডিয়ার ২ জন, চিলির ১ জন, চীনের ১৭৭ জন, ডেনমার্কের ৫ জন, জিবুতির ১ জন, ডমিনিকানে রিপাবলিকের ৩ জন, ডাচ ১২ জন, পূর্ব তিমুরের ১ জন, মিসরের ১১ জন, সাইপ্রাসের ২ জন, ফারো দ্বীপপুঞ্জের ১ জন, ফিলিপাইনের ৪০ জন, ফিনল্যান্ডের ২১ জন, ফ্রান্সের ২১ জন, জার্মান ২৩৮ জন, গ্রিক ৩ জন, হংকংয়ের ১৫ জন, ভারতের ৬১৭ জন, ইন্দোনেশিয়ার ৪০, ইরানের ৭, ইরাকের ৭, আইরিশ ১১ জন, ইতালির ১১৭ জন, জাপানের ৬৬ জন, জর্ডানের ১ জন, কেনিয়ার ৩ জন, উত্তর কোরিয়ার ১ জন, দক্ষিণ কোরিয়ার ৪১ জন, কুয়েতের ২ জন এবং কিরগিজ ২ জন।
এ ছাড়াও লাটভিয়ান ১ জন, লেবাননের ২ জন, লিবিয়ার ১ জন, লুক্সেমবার্গ ১ জন, মালয়েশিয়ার ৭৬ জন, মালদ্বীপের ১৩ জন, মালির ৪ জন, মরিশাসের ২ জন, মালদোভান ২ জন, মঙ্গোলিয়ান ৫ জন, মিয়ানমারের ৮ জন, নেপালের ২২ জন, নিউজিল্যান্ড ১২ জন, নাইজেরিয়ান ৩ জন, নরওয়ের ৩ জন, পাকিস্তানি ১১৯ জন, ফিলিস্তিনে ১ জন, পেরু ১ জন, ফিলিপাইনে ২ জন, পোল্যান্ডের ৪ জন, পর্তুগালে ৬ জন, কাতারের ১ জন, রোমানিয়ান ৩ জন, রাশিয়ান ৬৫ জন, গ্রানাডা ১ জন, সৌদি আরবের ১০ জন, সিঙ্গাপুরের ১৭ জন, সোমালিয়ার ১৬ জন, দক্ষিণ আফ্রিকার ১৩ জন, স্প্যানিশ ১১ জন, শ্রীলঙ্কার ৫৭ জন, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসের ৪ জন, সুইডেনের ৫৯ জন, সুইজারল্যান্ডের ২৩ জন, তাইওয়ানের ৬ জন, তানজানিয়ার ৮ জন, থাইল্যান্ড ২৬ জন, তিমুরের ১ জন, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর ১ জন, তুরস্কের ১৫ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৮ জন, উগান্ডার ৬ জন, ইউক্রেনের ৪ জন, উজবেকিস্তানের ২ জন, ভেনিজুয়েলার ২ জন, ভিয়েতনামের ৫ জন, ওয়ালেসের ১ জন, ইয়েমেনের ৩ জন ও জিম্বাবুয়ের ২ জন ব্যক্তি দ্বৈত নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশে বাস করছেন।
প্রতিবেদনটির বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, আমরা প্রতিবেদনটি হাতে পেয়েছি। পর্যালোচনা শেষে শুনানির দিন হাইকোর্টে তুলে ধরা হবে।
উৎসঃ banglatribune