RRSP-তে কন্ট্রিবিউশন: বাড়ীর ডাউন পেমেন্টের সহজ সমাধান

লিখেছেন রিয়েল্টর শিহাব উদ্দিন: রেজিস্টার্ড রিটায়ারমেন্ট সেভিংস প্ল্যান (RRSP) বা অবসরকালীন সঞ্চয় পরিকল্পনা ফেডারেল গভর্নমেন্টের একটি চমৎকার পরিকল্পনা যার মাধ্যমে কানাডিয়ানরা অবসরকালীন সময়ের জন্য সঞ্চয় করে থাকেন। অন্যভাবে বলতে গেলে RRSP হচ্ছে কর্মক্ষম থাকা অবস্থায় পেনশনের জন্য স্বেচ্চায় অর্থ জমা করে রাখার পরিকল্পনা। সন্তান সন্ততি বা সরকারের নূন্যতম পেনশনের উপর নির্ভর না করে কর্মরত থাকা অবস্থায় RRSP একাউন্টে সঞ্চয় জমিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যময় অবসর জীবন নিশ্চিত করার জন্যই একাউন্ট খোলা হয়।

RRSP তে কন্ট্রিবিউট করে বাড়তি চাইল্ড ট্যাক্স বেনিফিটসহ আরো অনেক সুবিধা নেয়ার সুযোগ রয়েছে। RRSP একাউন্টের প্রধান লক্ষ্যে হচ্ছে পেনশন ফান্ড গঠনের পাশাপাশি নিজ হাতে নিয়ন্ত্রণ রেখে কষ্টার্জিত আয়টাকে যথাসম্ভব সুরসুরক্ষা দেয়া। যেবছর পারিবারিক আয় অপেক্ষাকৃত বেশী, সেই বছর RRSP একাউন্টে কন্ট্রিবিউট করে আয়কর কমিয়ে আনা যায়| ফলে RRSP ক্রেতা কম আয়কর দিয়ে পার পাওয়া যাবে, এমনকি ট্যাক্সাবল আয়কে নির্দিষ্ট ব্র্যাকেটের মধ্যে রেখে আয়কর থেকে পুরোপুরি পরিত্রান পাওয়াও সম্ভব। যে অর্থবছরে অসুস্থতা, ভ্রমণ কিংবা unemployment থাকবে সেবছরে RRSP একাউন্ট থেকে সঞ্চয় উঠিয়ে আয় সমন্বয় করা যায়|

তবে RRSP এর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সুবিধা হচ্ছে বাড়ী কেনার সময় এ একাউন্ট থেকে সঞ্চিত অর্থ ডাউনপেমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করতে পারা। এ সুবিধা অবশ্য কেবলমাত্র প্রথমবারের মতো বাড়ী ক্রেতাদের জন্য প্রযোজ্য| একজন ক্রেতা তার একাউন্ট থেকে সর্বোচ্চ ৩৫,০০০$ ডাউনপেমেন্ট পেমেন্ট করতে পারেন। স্বামী ও স্ত্রী দুইজনই যৌথভাবে ক্রেতা হলে সর্বোচ্চ ৭০,০০০$ RRSP থেকে শোধ করা যায়। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু শর্ত আছে| ক্রেতাকে অবশই 1st time home buyer হতে হবে। স্বামী ও স্ত্রী দুজনের যেকোনো একজন 1st time home buyer হলে যিনি 1st time buyer শুধুমাত্র তিনিই এই সুবিধা পাবেন| অর্থাৎ এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩৫,০০০$ RRSP থেকে শোধ করা যাবে। তবে এক অর্থ-বছরেই কেউ এই সর্বোচ্চ এমাউন্ট ৩৫,০০০$ কন্ট্রিবিউট করতে পারবেন না। কে সর্বোচ্চ কত কান্ট্রিবিউট করতে পারবেন তা লিখা থাকে আগে বছরের ফেডারেল নোটিস অব এসেসমেন্টে। তবে ২০২০ অর্থ-সালের জন্য RRSP-তে কন্ট্রিবিউট করার সর্বোচ্চ বয়স ৭১ এবং এমাউন্ট জনপ্রতি ২৭,২৩০$। অর্থাৎ, পূর্ণ সুবিধা পেতে হলে কমপক্ষে দুই/তিন বছর ধরে কন্ট্রিবিউট করতে হবে।


কোনভাবেই ২য় বা ৩য় বাড়ী কেনার ক্ষেত্রে এই সুবিধা ভাবেই নেয়া যাবে না। তবে, প্রথম বাড়ী কিনে কেউ সেটা বিক্রি করে দিলে, বিক্রির পাঁচ বছর পর পুনরায় এই সুবিধার জন্য তিনি বিবেচিত হতে পারবেন।
RRSP একাউন্টের ওপর উল্লেখযোগ্য সুবিধা হচ্ছে এতে গচ্ছিত অর্থ আয়কর থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। RRSP-তে কন্ট্রিবিউশনের জন্য ব্যাংক লোন দিয়ে থাকে।একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে প্রায়ই বিভিন্ন ব্যাংকের অফার থাকে। ২০২০ অর্থ বছরের জন্য RRSP-তে কন্ট্রিবিউটের সর্বশেষ সুযোগ থাকছে পহেলা মার্চ, ২০২১ পর্যন্ত।


যাদের এখনো বাড়ী কেনা হয়নি, কিন্তু কষ্টার্জিত অর্থ আয়কর পরিশোধে শেষ হয়ে যাচ্ছে, তাদের জন্য আদর্শ এক প্ল্যান RRSP। RRSP-তে আগামী ২/৩ বছরের কন্ট্রিবিউশন হতে পারে বাড়ী কেনার ডাউনপেমেন্টের সহজ সমাধান। তবে বাড়ী ক্রয়ের জন্য পেনশন ফান্ড থেকে উঠানো এমাউন্ট বাড়ী কেনার দুই বছর পর থেকেই পরিশোধ করা শুরু করতে হয় এবং ১৫ বছরের মধ্যে সেটা বাধ্যতামূলকভাবে পুরোপুরি পরিশোধ করতে সম্পন্ন হয়। তবে একটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ| শুধু RRSP নয় যেকোন অফার বা প্রোগ্রাম নেয়ার আগে অবশ্যই এর মধ্যে কোনোরূপ ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ আছে কিনা যাচাই করে নেয়া উচিত।

প্রকৌশলী শিহাব উদ্দিন, রিয়েল এস্টেট ব্রোকার , 514 368 9000

এমন আরো সংবাদ

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন !
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ সংবাদ