” ২০২১’- বাংলাদেশ আদমশুমারি “

মাহবুবুর রব চৌধুরী – টরন্টো

এবছর’ – ০২  জানুয়ারি থেকে ০ ৮  জানুয়ারি  ২০২১’ – দেশে  আদমশুমারি হবার কথা ছিল। করনার  কারনে  যা   অক্টবরে  পিছিয়ে নেওয়া হয়েছে।  বাংলাদেশের  ইতিহাসে এটি  সর্বাপেক্ষা বৃহৎ বাজেটের  আদমশুমারি।
 ২০১১ সালের  – গত আদমশুমারিটির  বাজেট  ছিল  ২৩৭ কোটি টাকা। এবার  তা  ১৭৬১. কোটি টাকার।
 গুরুত্ব  পূর্ন  এ বিষয়টি  বিশেষ কোন আলোচনা,  পর্যালোচনার  আয়োজন  ছাড়াই , এক প্রকার   সাড়া শব্দ  হীন ভাবেই এগিয়ে চলেছে। বিভিন্ন কারনে যা বেশ  – তাৎপর্য  পূর্ন !
  আদমশুমারি নিয়ে   আলোচনার   অন্যতম  একটি  কারন এই   রহস্য  জনক  ভাবে বিষয়টি  অনেকটা  রাখ ঢাক  ও  নিঃশব্দতায়  এগিয়ে যাওয়া ।
উপ মহাদেশে ১৮৭২ সালে ব্রিটিশ আমলে সর্ব  প্রথম আধুনিক  সেনসাস  এর শুরু।
 এই  আলোচনায় –  ১৯৫১ সাল  থেকে বাংলাদেশ ও  পশ্চিম  বাংলার  আদমশুমারি এবং  সেই ধারাবাহিকতায়  ২০২১ এর বাংলাদেশ  আদমশুমারির
সম্ভাব্য গতি প্রকৃতির ধারাটি  এখানে দেখবার চেষ্টা  করব।১৯৫১ সাল থেকে ২০১১ সাল-এই সময় কালে প্রতি  দশ বছর পর পর, নিয়ম মেনেই বাংলাদেশে ৭ টি সেন্সাস ( আদমশুমারি )- হয়েছে। শুধু মাত্র মহান মুক্তি যুদ্ধের বছর হওয়াতে ১৯৭১ এর পরিবর্তে তা ১৯৭৪ এ’ গণনা হয়।বড় বাজেটের বাইরে দৃশ্যত – আরো বেশ কিছু বেতিক্রমী বিষয়  এবারের আদমশুমারিতে যুক্ত হতে যাচ্ছে । এর ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া কি হতে পারে – সে বিষয় গুলিও  পর্যালোচনা করে দেখা জরুরি ।২০২১ এর বাংলাদেশ সেন্সাস এ -এই প্রথম বাংলাদেশে অবস্থান রত বিদেশী এবং প্রবাসী বা অনাবাসী বাংলাদেশীদেরও  যুক্ত করবার কথা এসেছে। নুতন এই  উদ্যোগ। অনাবাসী বাংলাদেশীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি অভিনন্দন যোগ্য হলেও – বিদেশিদের যুক্ত করলে   বিতর্কের ক্ষেত্র তৈরী হবার একটি  সমূহ  সম্ভাবনা আছে। শেয়ার  মার্কেটে  লক সিস্টেম তুলে দেওয়ার  ফলে  –  যে  হ জ ব র ল  অবস্থাদেখা দিয়েছে বা দিয়েছিলো  বিদেশিদের দেশি 2021- Census Bangladeshe – এ অন্তর ভুক্ত করে ভবিষ্যতে ও রকম – কিছু ঘটনা – ঘটবার  পথ  সৃষ্টি হতে পারে কিনা  তা  গভীরভাবে  আলোচনা – পর্যালোচনায়  আসা  উচিত। ১৯৫১ থেকে ২০১১ পর্যন্ত –বাংলাদেশের  গত সাতটি আদমশুমারির চিত্রে দেখা যায় বিভিন্ন কারনে দেশে গড়ে প্রায় ২ % হারে হিন্দু জন সংখ্যা কমছে ।চিত্রঃ টি এইরূপ। বাংলাদেশের পূর্ববর্তী ৭ টি  আদমশুমারি  অনুযায়ী  হিন্দু জনসংখ্যার শতকরা হার এইরূপ ছিলো।১৯৫১   থেকে  ২০১১ পর্যন্ত।১৯৫১ সালে ২২%১৯৬১ সালে ১৮.৫%১৯৭৪ সালে ১৩.৫%১৯৮১ সালে ১২.১%১৯৯১ সালে ১০.৫%২০০১ সালে ৯.২%২০১১ সালে ৮.৩%=============================এই একই সময় আমরা পশ্চিম বাংলাতেও  দেখতে পাই  হিন্দু জন সংখ্যার গড়’ – ক্রমহ্রাসমান ধারাতে  হয়েছে ।সেটিও এখানে চার্টে আমরা দেখতে পাব ।  ১৯৫১  থেকে  ২০১১ পর্যন্ত – ভারতের আদম শুমারিতে’ পশ্চিম বাংলায়  হিন্দু জনসংখ্যার শতকরা হার– গত ৭ টি শুমারি অনুসারে এইরূপ।*১৯৫১ সালে ৭৮.৪৫%১৯৬১ সালে ৭৮.৮০%১৯৭১ সালে ৭৮.১১%১৯৮১ সালে ৭৬.৯৬%১৯৯১ সালে ৭৪.৭২%২০০১ সালে ৭২.৪৭%২০১১ সালে ৭০.৪৩%=============================  ১৯৫১  থেকে  ২০১১ পর্যন্ত – গত ৭ টি শুমারি অনুসারে বাংলাদেশে মুসলিম জনসংখ্যার  হারটি  ছিল এইরূপ।জনসংখ্যার  হারটি  ছিল এইরূপ।———————————————– ? Islam/Muslim – 1951′.-78.9 % ?  Islam/ Muslim –  1961′- 80.4 % ? Islam / Muslim –  1974′ –  85.4 % ? Islam -/ Muslim – 1981′ –  86.6 %? Islam / Muslim -1991′  88.3 % ? Islam/Muslim. -2001′-  89.7%   ? Islam-/Muslim-  2011′ *  90.39 %*এই চার্ট গুলি আলোচনা – পর্যালোচনায়  দেখা যায় বাংলাদেশে  ১৯৫১’ র  আদমশুমারিতে যেখানে  হিন্দু  জনসংখ্যার  শতকরা  হার ছিল ২২ %  তা  ৭ টি  আদমশুমারির  শেষটি-  ২০১১  তে  হয়েছে  ৮%  অর্থাৎ  ১৪ % কম।এভারেজ  প্রতিটি  শুমারিতে  ২% কম।অপর দিকে একই  সময়কালে ১৯৫১  থেকে  ২০১১ পর্যন্ত – ভারতের আদম শুমারিতে’ – পশ্চিম বাংলায়  হিন্দু জনসংখ্যার শতকরা হার–   ১৯৫১’ র  আদমশুমারির  ৭৮.৪৫%  থেকে  – ৭ টি  আদমশুমারির শেষটি  ২০১১-র ‘ শুমারিতে’ এসে দাঁড়িয়েছে – ৭০.৪৩%   অর্থাৎ  দশ বছর অন্তর  ৭টি  শুমারিতে  গড়ে  ১%  এর  উপর  হিন্দু জনসংখ্যা  কমেছে।   তুলনা মূলক ভাবে সারা  বিশ্বেই  মুসলিম শিশু জন্ম হার বেশি । বাংলাদেশেও   মুসলিম গড় হারে বৃদ্ধি তাই স্বাভাবিক। অন্য  সব  ফ্যাক্টর বাদ  দিলেও এটিই  বাংলাদেশের  বাস্তবতা। বিষয়টি  বোঝা  কঠিন  কিছু নয়।20 মাইল স্পীডে ছুটে চলা একটি ঘোড়ার পক্ষে একই গতিতে চলে. -তার সামনে ছুটে চলা ৩০ মাইল স্পীডের ঘোড়াটিকে ছোয়া বা অতিক্রম করা বাস্তবে অসম্ভব,অবাস্তব।
 এই  সূত্র  অনুসারেই  বাংলাদেশে   ২০২১ এর আদমশুমারিতেও  অর্থাৎ -পরবর্তী   সেন্সাসেও  মুসলিম  জনসংখ্যার গড় হার ,গত সেন্সাসের  গড় ৯০.৩৯ % থেকে আবারও   পুনঃ বৃদ্ধি   হওয়াটা ই    স্বাভাবিক।  

 ২০২১ এ বাংলাদেশের -পরবর্তী সেন্সাসএ – যদি বিপরীত  কিছু  ঘটনা দেখান হয় তবে তা হবে নুতন  এক অগ্রহন যোগ্য  অসম্ভব,অবাস্তব কাহিনী।বিগত  বেশ  কিছু দিন যাবৎ  কিছু  তৎপরতাই  এই  রূপ আশঙ্কা  জাগ্রত  করে।তাই  এ বিষয়টির  অবতারণা। দেশে  কিছু  হিন্দু সংগঠন -এবং তাদের অনুগত কিছু  গ্রূপ – গোবিন্দ প্রামাণিক সহ আরো কয়েক জন হিন্দু  ব্যক্তিত্ব  দেশে পৃথক নির্বাচন সহ  হিন্দু জনসংখ্যার হার বৃদ্ধি করে দেখাবার জন্য বেশ কিছু দিন ধরে নিরলস ভাবে  বিভিন্ন ভাবে কৌশলী  বক্তব্য রেখে চলেছেন । এবিষয়টি নিয়ে ইউ- টিউব’ সহ ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে তারা  বক্তব্য রেখেছেন। অতিরিক্ত  হিন্দু জনসংখ্যার হার বৃদ্ধি করে দেখাবার  তাদের বিভিন্ন মুখী উদ্দেশ্য আছে। আগামী শুমারিতে তারা যেন অণেয্য  ভাবে তাদের উদ্দেশ্যের  প্রতিফলন ঘটাতে না পারেন তার জন্য প্রয়োজন  সত্যিকার  সঠিক  গণনা। দেশে  ট্রান্সপারেন্ট  সিস্টেমের  অভাব, উপযুক্ত  সৎ  মনিটরিং এর  অভাব ‘এবং দুর্নীতি গ্রস্থ  আমলাতন্ত্রের  এক অংশ কে ব্যবহার  করে কেউ যেন আগামী শুমারিতে তাদের  অণেয্য  উদ্দেশ্যের   প্রতিফলন ঘটাতে না পারেন । সংশ্লিষ্ট  সর্ব  মহলে তাই , চাই  দেশ  প্রেমিক  সচেতনতা।

?

                    মাহবুবুর রব চৌধুরী – টরন্টো।

এমন আরো সংবাদ

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন !
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ সংবাদ