সাকের মোস্তফা চৌধূরী—————————-মনে হলো বহুল আলোচিত আল জাজিরার রিপোর্টটি নিয়ে নিজের মনোভাবটা প্রকাশ করি। জানিনা কয়জন ধৈর্য্য সরকারের লেখাটি পড়বেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন চৌকস অফিসার ছিলেন মেজর জেনারেল প্রয়াত মইনুল হোসেন চৌধুরী (বীরবিক্রম)। তিনি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অসীম বীরত্বের জন্য পেয়েছিলেন বীরবিক্রম খেতাব। তাছাড়া ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধেও তিনি অংশগ্রহণ করেন এবং কাশ্মীর ফ্রন্টে দায়িত্বরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে তিনি ১ম ইস্টবেঙ্গল রেডিমেন্টের অধিনায়ক হিসেবে সম্মুখ সমরে থেকে নেতৃত্ব দেন। একাত্তরের ১৯শে মার্চ ঢাকার অদূরে জয়দেবপুরে সংঘটিত প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধের ইতিহাসে তিনিই হলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি বাঙালীদের ওপর গুলি চালাতে পাকিস্তানী কর্তৃপক্ষের দেওয়া নির্দেশ সরাসরি অমান্য করেছিলেন।নিজ কর্মদক্ষতায় মাত্র সাইত্রিশ বছর বয়সেই পদন্নোতি পেয়ে হয়ে যান মেজর জেনারেল। রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব এবং সেনাবাহিনীর এডজুটেন্ট জেনারেলের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ পদেও তিনি সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য পাক সেনারা তাঁর সিলেট শহরের পৈতৃক বাড়ী পুরোপুরি জ্বালিয়ে দেয়, আর সেইসাথে চিরতরে হারিয়ে যায় পারিবারিক ছবি সহ সমস্ত স্মৃতিচিহ্ন।সিলেটের চৌধুরী পরিবারগুলোর মধ্যে নানাদিক দিয়ে আছে আত্মীয়তার সম্পর্ক। খুব নিকটের না হলেও জেনারেল মইনুলও ছিলেন আমাদের আত্মীয়। অত্যন্ত স্পষ্টবাদিতা আর পক্ষপাতহীন ভূমিকার জন্য তিনি ছিলেন বিখ্যাত।
তিনি তাঁর পেশাগত জীবনে দেশের পটপরিবর্তনের নানা ঘটনাগুলো খুব কাছে থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছেন। খুব কাছে থেকে দেখা ঐসব বাস্তব ঘটনার আলোকে রচনা করেন ‘এক জেনারেলের নীরব সাক্ষ্য: স্বাধীনতার প্রথম দশক’ নামক একটি ঐতিহাসিক বই। কর্তব্যনিষ্ঠ এবং পেশাদার সেনা কর্মকর্তা হিসেবে লিখিত তাঁর ঐ গ্রন্থটি বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং ব্যাপক পাঠক জনপ্রিয়তা পায়। ঐ বইটি পড়ে আমি পর্দার অন্তরালে থাকা অনেক রহস্যের প্রকৃত ঘটনা জানতে পারি।
মহান মুক্তিযুদ্ধে একেবারে সম্মুখ সমরে তাঁর বিরোচীত অপারেশনগুলো পড়লে মনে হবে বুঝি কোন অ্যাডভেঞ্চারের গল্প!বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন তাঁর নেতৃত্বেই দেয়া হয়েছিল গার্ড অফ অনার। এরপর স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের সামরিক সচিব হিসেবে তিনিই দায়িত্ব পালন করেন। ১৬ই ডিসেম্বরের পর ঢাকা শহরের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল ভারতের মিত্রবাহিনী। জেনারেল মইনুল তাঁর বইয়ে অকপটে উল্লেখ করেছেন ঢাকা সেনানিবাস থেকে ভারতীয় বাহিনী কতৃক ট্রাকের পর ট্রাক ভরে অস্ত্রসস্ত্র, গোলাবারুদ, রসদ এবং বিভিন্ন মূল্যবান আসবাবপত্র লুট করার কথা, এবং ঐসব ঘটনার চাষুষ সাক্ষী তিনি নিজে। তাছাড়া ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সদস্যদের অহমিকার কথাও তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে উল্লেখ করেছেন। জেনারেল মইনুলের ভাষায় ভারতীয় বাহিনীর মনোভাবটা এমন ছিল যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যেন তাদেরই দানে পাওয়া।
১৯৭৩ সালের জানুয়ারী মাসে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে জেনারেল মইনুলের বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়, যে অনুষ্ঠানে স্বয়ং বঙ্গবন্ধু উপস্থিত ছিলেন। তিনি তাঁর বইয়ে উল্লেখ করেন যে, দেশে ঐসময় খাদ্যসংকট, আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি এবং সার্বিক অবস্থা নাজুক ছিল বলে নিজের বিয়ে উপলক্ষ্যে তিনি মাত্র একদিনের জন্য ছুটি নিয়েছিলেন।
জেনারেল মইনুলের মতে পৃথিবীর ইতিহাসে সামরিক বাহিনী কতৃক সংগঠিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডগুলোর মধ্যে সবচাইতে নৃশংসতম হলো বঙ্গবন্ধু আর তাঁর পরিবারের হত্যাকাণ্ড।বঙ্গবন্ধু নিহত হবার কয়েকমাস পূর্বে বাস্কেটবল খেলতে গিয়ে জেনারেল মইনুল পায়ে মারাত্মক আঘাত পান এবং চিকিৎসার জন্য কয়েকমাস ছুটিতে থাকেন এবং ঐসময় তাঁকে লাঠিতে ভর দিয়ে চলতে হতো।
খোন্দকার মোশতাক প্রেসিডেন্ট হবার পর ফারুক-রশীদরা বঙ্গভবনে গিয়ে আস্তানা গাড়ে। বঙ্গবন্ধু নিহত হবার কয়েকসপ্তাহ পর খোন্দকার মোশতাক সিনিয়র সামরিক অফিসারদের বঙ্গভবনে চা-চক্রে নিমন্ত্রণ করেন। কিন্তু জেনারেল মইনুল স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে ফারুক-রশীদরা উপস্থিত থাকলে তিনি কোন অবস্থাতেই সেখানে যাবেননা। তাই বাধ্য হয়েই ফারুক-রশীদদের সেখানে অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয়নি। এরপর তিনি বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনকালে কখনো বঙ্গবন্ধুর খুনীদের তাঁর অধীনস্থ দূতাবাসের কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করার অনুমতি দেননি।
বঙ্গবন্ধু নিহত হবার পরবর্তী কয়েকমাসের অবস্থা ছিল খুবই টালমাটাল। এরই মধ্যে নভেম্বরের তিন তারিখ খুব ভোরে বেগম খালেদা জিয়া ফোন করে তাঁকে খবর দেন যে কিছু অফিসার আর সৈনিকরা জেনারেল জিয়াউর রহমানকে অস্ত্রের মুখে ধরে নিয়ে যাচ্ছে।এ খবর শুনামাত্র তিনি অসীম সাহসিকতায় এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সম্পূর্ণ একা এবং লাঠিতে ভর দিয়ে হেঁটেহেঁটে গিয়ে হাজির জন জিয়াউর রহমানের বাসাতে। সশস্ত্র সৈনিকরা তখন সেখানে পথ আগলে ছিল। তিনি ধমক দিয়ে তাঁদের সরিয়ে দিয়ে বাসার ভিতরে গিয়ে দেখতে পান জেনারেল জিয়া বসার ঘরে অন্তরীণ। তাঁকে দেখে জেনারেল জিয়া রীতিমতো হতভম্ব হয়ে যান।উল্লেখ্য, জিয়াউর রহমান ছিলেন ঐসময় সেনাপ্রধান এবং ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে জিয়ার বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান হয় এবং এর কয়েকদিন পরই ৭ই নভেম্বর সিপাহী-জনতার পাল্টা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জিয়া মুক্ত হন এবং খালেদ মোশাররফ নিহত হন।
আমাদের বেশীরভাগেরই ধারণা যে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান হত্যার পেছনে মূখ্য ভূমিকা ছিল জেনারেল মঞ্জুরের। কিন্তু মইনুল হোসেন চৌধুরী তাঁর বইয়ে পরিস্কার উল্লেখ করেছেন যে, ৩০শে মে ভোরে যখন মঞ্জুরকে জিয়া হত্যার খবর দেয়া হয় তখন তিনি তার বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন। খবর পেয়ে জেনারেল মঞ্জুর ও তার স্ত্রী যখন শোবার ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন তখন তাদের পরনে ছিল স্লিপিং ড্রেস। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, জিয়া হত্যার পর খুব তড়িঘড়ি করেই রেডিও-টিভিতে জিয়া হত্যায় মঞ্জুরকে জড়িয়ে খবর প্রচারিত হতে থাকে। কিন্তু তিনি তখন মত প্রকাশ করে বলেছিলেন যে কোনরূপ তদন্ত ছাড়াই অনুরূপ প্রচার করা ঠিক নয়। ৩০শে মে সকাল বেলা জেনারেল মঞ্জুর তাঁকে অফিসে ফোন করে খুব সংক্ষেপে চট্রগ্রামের পরিস্থিতি বর্ণনা করেন। পরবর্তীতে সেই ফোনালাপের সূত্র ধরে এরশাদ জেনারেল মইনুলকে জিয়া হত্যা ঘটনায় ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল।
তাঁর ঐ বই পড়ে জানতে পারি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হবার পর ঐ হত্যাকান্ডের বিচারের অজুহাতে তৎকালীন সেনাপ্রধান হো, মো, এরশাদ স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অফিসারদের কোণঠাসা করার ঘৃণ্য প্রয়াসে লিপ্ত হয় এবং কোর্ট মার্শালের প্রহসনমূলক বিচারের নামে তেরোজন অফিসারকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করে, যাদের বেশীরভাগই ছিলেন মুক্তিযাদ্ধা। সেনাবাহিনীর সংবিধানে থাকলেও হতভাগ্য ঐ অফিসারদের ক্ষেত্রে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য কোন বেসামরিক আইনজীবি রাখার সুযোগও দেয়া হয়নি। ঐসময় সেনাবাহিনীর এডজুটেন্ট জেনারেলের দায়িত্বরত জেনারেল মইনুল আপ্রাণ চেষ্টা করেন ঐ হতভাগ্য অফিসারদের মৃত্যুদন্ড থেকে বাঁচাতে; কিন্তু সেনাপ্রধান এরশাদ তাঁর সমস্ত আবেদন নাকচ করে দেয়।
হো,মো, এরশাদ স্বাধীনতাযুদ্ধে জেনারেল মইনুলের বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা আর সর্বোপরি তাঁর দৃঢ়চিত্ত আর স্পষ্টবাদিতায় নাখোশ হয়ে তাঁকে প্রেষণে রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ইত্যাদি পদে নিযুক্ত করে পাঠিয়ে দেয় দেশের বাইরে; আর বলা যায় এভাবেই জেনারেল মইনুলের মতো একজন চৌকস অফিসার চলে যান অনেকটাই সবার অন্তরালে। ১৯৮২ সালের অক্টোবর মাসে তাঁকে ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করা হয়। তখন তিনি রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তারের সাথে বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে বঙ্গভবনে যান। জেনারেল মইনুল তাঁর বইয়ে উল্লেখ করেছেন যে, রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তারকে ঐ সাক্ষাতের সময় তিনি পরিষ্কারভাবে সতর্ক করে বলেছিলেন যে সেনাবাহিনী প্রধান এরশাদ যে কোন সময় সামরিক আইন জারি করতে পারেন। তার এ সতর্কবাণী শুনে বয়োবৃদ্ধ রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তার অসহায়ের মতো কেবল তাকিয়েছিলেন এবং তাঁর চোখেমুখে ছিল একজন অসহায় মানুষের প্রতিচ্ছবি! ঐ সাক্ষাতের পাঁচ মাস পরেই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এরশাদ ক্ষমতা দখল করে।
এরশাদের পতনের পর বি,এন,পি সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সেনাবাহিনীর সিনিয়রিটি আর কর্মদক্ষতার বিচারে জেনারেল মইনুলই ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান হবার অন্যতম দাবীদার।কিন্তু তাঁকে ডিঙিয়ে জেনারেল নাছিমকে করা হয় সেনাবাহিনী প্রধান আর জেনারেল মইনুলকে রাষ্ট্রদূত করে পাঠিয়ে দেয়া হয় অষ্ট্রেলিয়াতে। পরবর্তীতে জেনারেল নাছিমের ব্যর্থ সেনা অভ্যুথান থেকে বি,এন,পি সরকার কোনরূপ শিক্ষা নিয়েছে বলে মনে হয়না, যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো জেনারেল মইন উ, আহমেদ (এক্ষেত্রেও করা হয়েছিল সিনিয়রিটি লঙ্ঘনের মারাত্মক ঘটনা)।১৯৯৮ সালে অবসর গ্রহণের পর জেনারেল মইনুল ২০০১ সালের তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিভিন্ন টক শো তেও তিনি নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন। ২০১০ সালে তিনি পরলোক গমন করেন।
যাইহোক, এবার আসি আল জাজিরার রিপোর্ট প্রসঙ্গে। বলার অপেক্ষা রাখেনা যে গত কয়েকদিন থেকে দেশে-বিদেশের সকল বাংলাদেশীদের আলোচনার মূখ্য বিষয় হলো সদ্য প্রকাশিত আল জাজিরার রিপোর্ট। যথারীতি একদল এ রিপোর্ট প্রকাশিত হবার পর চরম উল্লসিত, আবার আরেকদল এ রিপোর্টটিকে তুলোধুনো করে ছাড়ছেন। রিপোর্টটি সত্য না মিথ্যা তা হয়তো ভবিষ্যতে কোন সময় জানা যাবে, আবার হয়তোবা কোনদিনই জানা যাবেনা এবং হয়তো একসময় এ রিপোর্টটির কথা সবাই ভুলেই যাবে।তবে যেহেতু রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ মিডিয়া আল জাজিরা, তাই ঐ বিশেষ রিপোর্টটিকে এক ফুৎকারে উড়িয়ে দিবারও জো নেই। বিশ্বের অনেক দেশে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে আল জাজিরার অনেক অনুসন্ধানী রিপোর্ট খুবই প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় এবং সামরিক বিভাগের আই,এস,পি,আর থেকে রিপোর্টটির প্রতিবাদ করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, ঐ প্রতিবেদনের ঐতিহাসিক বিবরণে একাত্তরের ভয়াবহ গণহত্যার কথা উল্লেখ করা হয়নি। এ দাবীটি খুবই অপ্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়েছে! একাত্তরের গণহত্যার ভয়াবহতার ইতিহাস এখানে কীভাবে প্রাসঙ্গিক, সেটাই বুঝতে পারলামনা। আর তা উল্লেখ করলেই কি প্রতিবেদনটির শুদ্ধতা প্রশ্নাতীত হয়ে যেত?
সব তর্ক-বিতর্ক ছাপিয়ে যে বিষয়টি আমার কাছে খুবই স্পর্শকাতর বলে মনে হয়েছে তা হলো, ঐ রিপোর্টে সেনাপ্রধানের ছেলের বিয়েতে সেনা প্রধানের দাগী আসামী ভাইয়ের সাথে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আর সেনাপ্রধানের যে ছবি প্রকাশিত হয়েছে, সে সম্পর্কে বঙ্গভবন কতৃপক্ষ বা আই,এস,পি,আর থেকে কোন প্রতিবাদ বা বিবৃতি প্রদান করা হয়েছে মর্মে কোন খবর এখনো চোখে পরেনি।
সেই যে বললাম, এ রিপোর্টের সত্যাসত্য আদৌ জানা যাবে না কি রিপোর্টটি আজীবন রহস্যের অন্তরালেই থেকে যাবে- সেটাও এক বিরাট প্রশ্ন বৈ কি?
হয়তোবা জেনারেল মইনুলের মতো এ প্রজন্মেরও কোন জেনারেল তার পেশাগত জীবনে ঘটে যাওয়া অনেক রহস্যাবৃত কিন্তু বাস্তব ঘটনাসমূহ নিয়ে রচনা করবেন কোন আত্মজীবনী। হয়তোবা সে বইটির নাম হবে ‘একজন জেনারেলের না বলা কথা’। আমাদের যদি জানার সৌভাগ্য নাও হয়, হয়তোবা পরবর্তী প্রজন্মের কৌতুহলীরা সে জেনারেলের বই পড়ে জানতে পারবে প্রকৃত ঘটনা আসলেই কি ছিল।
হয়তো সে বই পড়ে জানা যাবে জেনারেল আজিজের সেনাপ্রধান হবার পেছনে মূখ্য কারণ ছিল তার দাগী আসামী ভাইয়েরা—যারা ছিল প্রধানমন্ত্রীর খাস দেহরক্ষী।নয়তো জানা যাবে জেনারেল আজিজ ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইতিহাসে অন্যতম মেধাবী, তুখোড় এবং চৌকস একজন অফিসার; যেজন্য তার তিন ভাই খুনের মামলা সহ নানা ভয়ংকর অপরাধে দণ্ডিত হবার পরেও সেনাবাহিনী প্রধানের মতো রাষ্ট্রের অতি স্পর্শকাতর পদে তাকেই পদোন্নতি দিতে হয়েছিল।
এ প্রজন্মের কোন জেনারেলের লেখা থেকে পিলখানা আর সেনানিবাসের অভ্যন্তরে ঘটে যাওয়া রহস্যাবৃত ঘটনাগুলোর প্রকৃত সত্য জানার অধীর অপেক্ষায় রইলাম।—————-
লেখক- প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্টজালালাবাদ এসোসিয়েশন অব টরন্টো