রাজীব আহসান, কানাডা
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই জো বাইডেনের নির্বাহী আদেশে যে সিদ্ধান্তগুলো রয়েছে তার মধ্যে কানাডার কিস্টোন পাইপ লাইনের অনুমোদন বাতিলের সিদ্ধান্তও রয়েছে।
এদিকে এ সিদ্ধান্ত কানাডার স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই কানাডাবাসীর মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কানাডিয়ানরা মনে করছেন শুধু আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নয়; এ সিদ্ধান্ত দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক তৈরিতে বিরাট প্রভাব ফেলবে।
উল্লেখ্য, কানাডার আলবার্টার তেলক্ষেত্র থেকে অতিরিক্ত ৮৩০ হাজার ব্যারেল বিটুমিন যুক্তরাষ্ট্রের রিফাইনারিগুলোতে সরবরাহ করার জন্য এই পাইপ লাইন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়।
ওবামা সরকার ক্ষমতায় এসে এই পাইপ লাইনের অনুমোদন বাতিল করে দেয়। পরে ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৯ সালে এর অনুমোদন দেন।
ইতিমধ্যে প্রায় ২০০ কিলোমিটার পাইপ বসানো হয়ে গেছে এবং আলবার্টা ও যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি রাজ্যে পাম্প বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
জো বাইডেন তার নির্বাচনী ঘোষণায় এই পাইপ লাইনের অনুমোদন বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে ঠিক কবে নাগাদ এটি বাতিল করবেন সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি।
আমেরিকায় কানাডার রাষ্ট্রদূত গত এক মাস ধরেই মার্কিন প্রশাসন এবং জো বাইডেনের ক্যাম্পেইন টিমের সঙ্গে দেনদরবার করছিলেন।
কানাডার প্রত্যাশা ছিল তারা আমেরিকার প্রশাসন এবং নতুন সরকারের নীতিনির্ধারকদের পাইপ লাইনের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে পারবেন। তিনি বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন- ওবামা সরকার যে প্রকল্পটি বাতিল করে দিয়েছিলেন- এটি ঠিক সেই প্রকল্প নয়।
রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টেন হিলম্যান রোববার এক বিবৃতিতে বলেছেন, পাইপ লাইনের প্রথম প্রস্তাব থেকে বর্তমান প্রস্তাবটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। শুধু তাই নয়, কানাডা তেল উৎপাদনের প্রক্রিয়ায়ও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটিয়েছে।
অটোয়ার ফেডারেল সরকার জো বাইডেনের নতুন সরকারের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আভাস দিয়েছে। কিন্তু আলবার্টার প্রাদেশিক সরকার আমেরিকার সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়তে চায় বলে ধারণা দিয়েছে।
আলবার্টার প্রিমিয়ার জেসন ক্যানি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পাইপ লাইন সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে।
আলবার্টার প্রিমিয়ার জেসন ক্যানি এক বিবৃতিতে পাইপ লাইনের অনুমোদন বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে কানাডার প্রতি সম্মান দেখানোর জন্য আমেরিকার নতুন প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, পাইপ লাইন নির্মাণের অনুমোদন বাতিলের সিদ্ধান্তের ফলে কানাডা-আমেরিকা দুই প্রান্তেই মানুষ চাকরি হারাবে, দুদেশের মধ্যকার সম্পর্ককে দুর্বল করবে।
একই সঙ্গে তেলের জন্য ওপেকভুক্ত দেশের ওপর নির্ভরশীলতার মাধ্যমে এই অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করবে।