করোনা মহামারিতে চলচ্চিত্র শিল্পে অনেকটা ধস নেমেছে। দেশের প্রেক্ষাগৃহে চালানের মতো তেমন কোনো ভালো সিনেমা নির্মাণ হচ্ছে না। তই, সিনেমা সংকট ও দর্শক সংকট কাটাতে বাংলাদেশের সিনেমা হলগুলোতে বিদেশি ছবি চালানোর প্রস্তাব করেছেন হল মালিকরা৷ সিনেমা হলকে বন্ধের কবল থেকে বাঁচাতে এর বিকল্প নেই বলে তাদের মত৷
গত নভেম্বরে বাংলাদেশ হল মালিক সমিতির নেতাসহ অন্যান্যরা তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই প্রস্তাব দেন।
আজ বুধবার রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে সিনেমা হল বন্ধ প্রতিরোধে ও বিদেশি সিনেমা আমদানির ব্যাপারে দীর্ঘ বৈঠক করেছে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট তিনটি সংগঠন। বৈঠকে তিন সংগঠনের নেতারা সরকারের কাছে যৌথ প্রযোজনা নীতিমালা সহজ করারও দাবি জানিয়েছেন।
আজকের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু, নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান, প্রদর্শক সমিতির সাবেক সভাপতি মির্জা আবদুল খালেক, প্রযোজক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, পরিচালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম খোকন, হল মালিক ও প্রদর্শক সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন এবং প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওয়াল হোসেন উজ্জ্বল।
বৈঠকে দেশীয় নির্মাতা এবং প্রযোজকদের স্বার্থ আগে দেখার আহ্বান জানিয়ে পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রমান গুলজার বলেন, ‘বিদেশি ছবি আমদানি করলেও সবার আগে দেশের নির্মাতা ও দেশের সিনেমাকে প্রাধান্য দিতে হবে। আমরা কেবল দেশের চলচ্চিত্রের বৃহত্তর স্বার্থে বিদেশি ছবি আমদানি করে দেশের চালাতে একমত প্রকাশ করছি।’
প্রযোজক নেতা খোরশেদ আলম খসরু বলেন, ‘করোনার কারণে আমাদের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে সিনেমায় লগ্নী করতে পিছিয়ে যাচ্ছেন প্রযোজকরা। তাই সিনেমা হল খুললেও নতুন সিনেমা সংকটে ভুগছে হলগুলো। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে চলচ্চিত্রের তিন সংগঠন বিদেশি সিনেমা আমদানি করে হলে চালাতে একমত হয়েছি। এ ক্ষেত্রে দেশীয় নির্মাতা ও প্রযোজক ও সিনেমার স্বার্থে যেন ব্যাঘাত না ঘটে সে দিকে দৃষ্টি দেবে সরকার।’
হল মালিক সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন বলেন, ‘সবাই জানেন দেশে বছরে কয়টা সিনেমা নির্মাণ হয়। সংখ্যার বিচারে যে সিনেমাগুলো নির্মাণ হয় তার অনেকগুলো আবার হলে চালানো সিনেমাও না।এই পরিস্থিতিতে বিদেশি ছবি আমদানি করে না চালালে হলগুলো ছবি ও দর্শক সংকটে একে একে বন্ধ হয়ে যাবে। তাই বিদেশি সিনেমা আমদানি করে চালানোর বিষয়ে সুন্দর একটা সিদ্ধান্তে এসেছি আমরা। আশা করি বিদেশি সিনেমা দেশে মু্ক্তি পেলে হলে দর্শক ফিরবে। তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে আমাদের দেশেও ভালো ছবি নির্মাণের সংখ্যা বাড়বে।’