আহসান রাজীব বুলবুল
কানাডায় প্রতিবছরের মতো এবার জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে পালিত হচ্ছে না খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান বড়দিন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে বিভিন্ন প্রদেশের প্রধান এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা নাগরিকদের পরিবারের সঙ্গে ঘরে বসে বড়দিন পালনের পরামর্শ দিয়েছেন।
দেশটির বিভিন্ন প্রদেশে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমন এবং মৃত্যুর সংখ্যা। এ কারণে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্রগুলোতে রোগীদের চাপ বেড়েছে।
বড় দিনের ছুটিতে নাগরিকদের বাড়ির বাইরে জমায়েত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন টরন্টো স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. এইলিন দ্য ভিলা। তবে নতুন এক সমীক্ষা বলছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী হওয়া সত্ত্বেও স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মানছেন না অনেকেই।
এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. এইলিন দ্য ভিলা বলেন, পরিস্থিতি খুবই খারাপ এবং ভাইরাসটি আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে দ্রুত ছড়াচ্ছে। এ বছরকে অন্যান্য বছরের মতো ভাবলে হবে না। ডিসেম্বরের প্রথম সাত দিনেই টরন্টোতে নতুন করে ৪ হাজার ১০০ জন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬৮ জন মারাও গেছেন। সংখ্যাটা এতোই বেশি যে, আমি কেবল এটুকুই বলতে পারি, পরিস্থিতি খুবই গুরুতর। এর সঙ্গে দ্বিমত করার কিছু নেই। টরন্টোতে কোভিড-১৯ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
তিনি বলেন, এ অবস্থায় ঘরের বাইরে কোনো ধরনের উৎসব উদযাপন পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তুলতে পারে। আমরা যা দেখছি তাতে ২৪ ডিসেম্বর থেকে নতুন বছরের শুরু পর্যন্ত সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে। কারণ এই সময়টাতে লোকজন পরস্পরের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ বেশি করবে।
অ্যাঙ্গাস রিড ইনস্টিটিউটের নতুন এক সমীক্ষা বলছে, ২৭ শতাংশ অন্টারিওবাসী ছুটির মধ্যে স্থানীয় বন্ধু ও স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা ভাবছেন। ৮ শতাংশ বাসিন্দা আবার অন্য কমিউনিটির বা প্রদেশের বাইরে গিয়ে সাক্ষাতের পরিকল্পনাও করছেন।
তাদের এ পরিকল্পনা স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কারণ স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে বড়দিনের ছুটিতে কেবলমাত্র পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রদেশের বাইরে গিয়ে বড় দিন উদযাপনে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
বড়দিনে কানাডায় থাকে ছুটির আমেজ। দেশটির নাগরিকরা পরিবার পরিজন নিয়ে আনন্দ-ফুর্তিতে নিজেদের মধ্যে সময় কাটায়। আলোক সজ্জায় সজ্জিত হয় অফিস আদালত আর কেনাকাটার বিভিন্ন মল।