রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে করা গাম্বিয়ার মামলায় সমর্থন দেয়ার জন্য বৃটিশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির ১০৪ এমপি। বৃটেনের পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথবিষয়ক মন্ত্রী ডমিনিক রাবের বরাবরে পাঠানো এক চিঠিতে এ আহ্বান জানান তারা। চিঠিতে বলা হয়, শুধুমাত্র ন্যায়বিচার নিশ্চিত এবং আন্তর্জাতিক আইন রক্ষার জন্যই নয়, ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে বিরত রাখতেও তাদের অপরাধের বিচার হওয়া জরুরি। রোহিঙ্গা অধিকার সম্পর্কিত সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের কো- চেয়ার রুশনারা আলী ও জেরেমি হান্ট এমপিদের পক্ষে চিঠিতে স্বাক্ষর করেন। তারা বলেন, যদি যুক্তরাজ্য এই মামলায় যুক্ত হয় তাহলে আইনগত এবং প্রতীকীভাবে এর গুরুত্ব বাড়বে।
চিঠিতে বলা হয়, মিয়ানমারের মানবাধিকার নিশ্চিতে এর আগেও নেতৃত্ব দিয়েছে যুক্তরাজ্য। দেশটি এখন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ‘পেনহোল্ডার’ এবং যৌন নির্যাতন রোধে পিএসভিআই’র প্রতিষ্ঠা রাষ্ট্র। চিঠিতে আরো বলা হয়, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে মিয়ানমার সরকারের কোনো আগ্রহই দেখা যাচ্ছে না।
তাই এখনই অনেক কিছু করা প্রয়োজন। বিশ্বে যুক্তরাজ্যের নেতৃস্থানীয় ভূমিকা এবং নিরাপত্তা পরিষদের পেন হোল্ডার হিসেবে মর্যাদা থাকার পরেও এ মামলায় যোগ দিতে না পারা সামরিক বাহিনীকে ভুল বার্তা দিতে পারে। চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘আইসিজে’তে করা মামলায় আনুষ্ঠানিকভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের উচিত বিশ্বমঞ্চে মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইন সমুন্নত রাখতে নিজের দায়িত্ব যথাযথ পালন করা। ন্যায়বিচার নিশ্চিতে ব্যর্থ হলে বিশ্বের দমনমূলক সরকারগুলোর কাছে ভুল বার্তা যাবে। তারা জাতিগত নিধন এবং গণহত্যাকে গ্রহণযোগ্য হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে থাকবে।
চিঠিতে বলা হয়, যেহেতু রাশিয়া ও চীন নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারকে রক্ষা করছে- তাই যুক্তরাজ্যের উচিত হবে আইসিজেতে চলা ওই মামলার যুক্ত হওয়া। বৃটিশ সরকারের উচিত এখনই এই মামলার পেছনে সর্বোচ্চ জোর প্রদান।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নৃশংস সামরিক অভিযান ও গণহত্যার মুখে সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। রোহিঙ্গাদের প্রতি সে দেশের সেনাবাহিনীর আচরণ গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে বলে গাম্বিয়া মামলায় উল্লেখ করেছে। আদালত একটি অস্থায়ী ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে-মিয়ানমারে থাকা রোহিঙ্গাদের রক্ষার জন্য ব্যবস্থা নেয়া এবং আদালতে নিয়মিত প্রতিবেদন দাখিল করা। এর আগে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস এ মামলায় হস্তক্ষেপ করেছে।