নিজের মাকে ২০০ বার কুপিয়ে শিরশ্ছেদ করা এক অস্ট্রেলিয়ান তরুণীর সম্পর্কে ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে আদালতের পর্যবেক্ষণে। জেসিকা ক্যামিলারি নামের ওই ২৫ বছর বয়সী তরুণী দিনে ১০০ বারের বেশি তার প্রতিবেশী ‘অসংখ্য বাংলাদেশিকে’ ফোন করতেন।
বিখ্যাত প্রকাশনা সংস্থা নিউজ ক্রপের মালিকানাধীন অস্ট্রেলিয়ান গণমাধ্যম নিউজ.কম.এইউ রবিবার আদালতের পর্যবেক্ষণের বিস্তারিত প্রকাশ করেছে। সেখান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেসিকা ভৌতিক সিনেমায় আচ্ছন্ন থাকতেন সব সময়। নারীদের একদম সহ্য করতে পারতেন না। তাদের সঙ্গে কথাও বলতেন না। অপরিচিত পুরুষদের ফোন নম্বর জোগাড় করে বিরক্ত করতেন।
আদালত জানিয়েছে, জেসিকা অসংখ্য বাংলাদেশি পরিবারকে প্রতিদিন ফোন করতেন। এই মানুষদের ফোন নম্বর নাকি তার খুব পছন্দ ছিল!
গত বছর ২০ জুলাই জেসিকা তার মা রিতা ক্যামিলারিকে রাতে হত্যা করে। পুলিশ বাড়িতে গিয়ে জেসিকার সারা শরীরে রক্তমাখা দেখতে পায়। সেদিন তিনি পুলিশকে বলেন, ‘মায়ের মাথা কংক্রিটের ওপর রাখা আছে।’
এ সময় পুলিশের সঙ্গে তিনি আরও ভয়ংকর সব কথোপকথনে অংশ নেন। পুলিশের বডিক্যামেরায় সেসব রেকর্ড হয়।
আরও পড়ুন: আন্দামানের রহস্যময় দ্বীপে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া জাহাজ!
ট্রায়ালে জেসিকাকে মায়ের হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি; বরং তাকে নরহত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
জেসিকা অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি একাধিক মানসিক রোগে ভুগছিলেন বলে ‘মায়ের হত্যাকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করার পরিবর্তে নরহত্যার দায় দেয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জেসিকার পাশাপাশি তার পরিবার, বন্ধু এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জোগাড় করেছেন।
জেসিকা ২০ জুলাই তার মাকে যখন হত্যা করেন, তার কয়েক দিন আগে প্রতিবেশীরা ৫৭ বছর বয়সী রিতাকে সাবধান হতে বলেন। কিন্তু রিতা তাদের বলেন, ‘আমার মেয়ে একটা পোকাকেও মারতে পারে না।’
সেদিন রাতে ফাস্টফুড নিয়ে জেসিকার সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয় রিতার। মেয়েকে ধমক দিয়ে তিনি বলেন, ‘আর খাবার চাইলে পাগলা গারদে পাঠিয়ে দেব।’
জেসিকা ভাবত, তার মা অন্য আত্মীয়দের বেশি খাতির করে। এটা নিয়ে আগে থেকেই তার ক্ষোভ ছিল।
জেসিকার বিরুদ্ধে এখনো কোনো রায় দেয়নি আদালত। সামনের বছর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।