ভোরের আলো ডেষ্ক: পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে প্রধানমন্ত্রীত্ব খুঁইয়েছেন পাকিস্তানি নেতা নওয়াজ শরিফ। নওয়াজ শরিফের সঙ্গে একই তালিকায় বাংলাদেশের মোট ২৪ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল। বাংলাদেশের কোটি কোটি টাকা পাচারকারি এসব হোতাদের সর্ম্পকে বিস্তারিত তথ্য আজও জানা যায়নি।
এদিকে ফাঁকি দিয়ে বিদেশে টাকা পাচারে জড়িতদের বিষয়ে গত বছরের এপ্রিলে প্রকাশিত হয় একটি তালিকা। যা ‘পানামা পেপারস’ নামে পরিচিতি পায়। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট (আইসিআইজে) এই তালিকা ঘেঁটে বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করে। এতে বাংলাদেশের ২১ ব্যক্তি, তিন প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ১৮টি ঠিকানা প্রকাশ করা হয়।
তবে এই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে পরিচিত মুখ কেউ নন। আর তারা কত টাকা কীভাবে কোথায় পাচার করেছেন, সে বিষয়েও এখনও তথ্য জানা যায়নি। এই কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর দুর্নীতি দমন কমিশন একটি অনুসন্ধান কমিটি করলেও সেই কমিটিও বলার মত কোনো তথ্য পায়নি।
পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে যেসব বাংলাদেশির নাম রয়েছে তারা হলেন, কফিল এইচ এস মুয়িদ, পেসিনা স্টেফানো, রুডি বেঞ্জামিন, ইউসুফ রায়হান রেজা, ইশরাক আহমেদ, নভেরা চৌধুরী, ফরহাদ গণি, মেহবুব চৌধুরী, বিলকিস ফাতিমা জেসমিন, রজার বার্ব, আবুল বাসার, জাইন ওমর, বেনজির আহমেদ, আফজালুর রহমান, সুধীর মল্লিক, জীবন কুমার সরকার, নিজাম এম সেলিম, মোকসেদুল ইসলাম, মোতাজ্জেরুল ইসলাম ও সেলিমুজ্জামান। এদের মধ্যে আফজালুর রহমান ও মোতাজ্জেরুল ইসলামের নাম দুবার করে রয়েছে। এদের মধ্যে মোতাজ্জেরুল ইসলাম ওরফে মিঠু বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেক্টরে লুটপাট চালিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে নিরাপদে ব্যবসা বাণিজ্য করছেন।
এ ছাড়া পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে যে তিনটি প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করা হয়েছে, সেগুলো হলো বাংলাদেশ বিমান ইনকরপোরেশন, ইসলামিক সলিডারিটি শিপিং কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল এজেন্সিজ লিমিটেড।
তবে এই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কারা, সেটি শনাক্ত হয়নি গত ১৫ মাসেও। তাদের কেউই রাজনীতি, ব্যবসা বা অন্য পেশায় পরিচিত মুখ নন। ফলে তাদের নাম আসার পর গণমাধ্যমেও সেভাবে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় হয়নি।
তবে দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চা ব্যক্তিদের নানা দাবির পর তখন দুদকও তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান কমিটি করে। এই সোয়া এক বছরে কয়েকজনের বিষয়ে কেবল তথ্য এসেছে বলে জানিয়েছে তারা। তবে তারাও বিস্তারিত তথ্য পায়নি বিদেশ থেকে।
পানামা কেলেঙ্কারিতে বিশ্বের ২০০ দেশের দুই লাখ ১৪ হাজার ব্যক্তির টাকা পাচারের নথি প্রকাশ হয়েছিল। এর মধ্যে ১৪০ জন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং রাজনীতিকের নাম ছিল। এদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কেবল পাকিস্তানের নওয়াজ শরিফই বলতে গেলে সাজা পেলেন।