ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) চার কোটি টাকা স্থানান্তর ও আত্মসাতের মামলায় সমন পেয়েও সাক্ষ্য দিতে আসেননি সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ভাই ও ভাতিজা। তাই আদালত এ দুইজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম এই আদেশ দেন।
পরোয়ানা জারি হওয়া দুইজন হলেন-এসকে সিনহার ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহা ও ভাতিজা শঙ্খজিৎ সিনহা।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কৌঁসলী মীর আহমেদ আলী সালাম বাংলানিউজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির হতে এই দুইজনকে আগেই সমন দেওয়া হয়েছিল। সমন পেয়েও তারা আদালতে হাজির হননি। তাই আমরা তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন করেছিলাম, আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন। আগামী ২৮ ডিসেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিনে তাদের হাজির করতে মৌখিকভাবে পুলিশকে জানানো হয়েছে।
এই মামলায় মোট ১৮ সাক্ষীর ১৪ জন আদালতে জবানবন্দি দেন। মঙ্গলবার সাক্ষ্য দিয়েছেন পদ্মা ব্যাংকের কর্মকর্তা এম আতিফ খালেদ।
এই মামলার মোট আসামি ১১ জন। এর মধ্যে কারাগারে থাকা আসামি মাহবুবুল হক চিশতি ওরফে বাবুল চিশতিকে এদিন আদালতে হাজির করা হয়।
এছাড়া জামিনে থাকা এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রাক্তন ক্রেডিট প্রধান কাজী সালাহউদ্দিন, সাবেক এমডি এবিএম শামীম, ভাইস প্রেসিডেন্ট লুৎফুল হক, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, টাঙ্গাইলের মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন কুমার সাহা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এই মামলায় এসকে সিনহাসহ মোট ৪ আসামি এখন পলাতক। তারা হলেন- ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সফিউদ্দিন আসকারী আহমেদ, সাভারের শ্রীমতি সান্ত্রী রায় (সিমি) ও রণজিৎ চন্দ্র সাহা।
গত ৯ ডিসেম্বর ১১ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়। অভিযোগত্রে ফারমার্স ব্যাংকের নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতীর (বাবুল চিশতী) নাম নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর তদন্তকালে এজাহারনামীয় আসামি ফারমার্স ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক (গুলশান) মো. জিয়া উদ্দিন আহমেদ মারা যাওয়ায় তাকে এই মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
সেই অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে গত ৫ জানুয়ারি এসকে সিনহাসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর গত ২০ ফেব্রুয়ারি মামলাটি বিচারের জন্য এই আদালতে বদলির আদেশ দেন ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ।
গত ১৩ আগস্ট একই আদালত অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে তাদের বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। গত ১৮ আগস্ট এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ওইদিন মামলার বাদী দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল সাক্ষ্য দেন।
এর আগে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভুয়া ঋণের মাধ্যমে চার কোটি টাকা স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করার অভিযোগ মামলাটি করে দুদক। গত ৪ ডিসেম্বর এই মামলায় অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয় সংস্থাটি।
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম