২০০৯ সালের জুলাই মাসে দেশে বায়ু দূষণ বন্ধে সরকার (CLEAN AIR AND SUSTAINABLE ENVIROMENT) প্রকল্প চালু করে। এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য ছিলো ঢাকাসহ দেশে বাংলাদেশে বায়ু দূষণ সহনীয় মাত্রায় কমিয়ে আনা।
এই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হয়েছিলেন ড: মনজুরুল হান্নান খান। ঢাকায় বায়ু দূষণ তিনি বন্ধ করতে পারেননি। কিন্তু এই বায়ু দূষণ কতটা প্রাণঘাতি তা ঠিকই অনুভব করেছিলেন। আর একারণেই গোটা পরিবারকে বায়ু দূষণ থেকে রক্ষায় পাঠিয়ে দেন কানাডায়।
৮৫ ব্যাচের এই কর্মকর্তা এখন অতিরিক্ত সচিব হিসেবে অবসরের প্রহর গুনছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ে ওএসডি তিনি। তার এক ছেলে এক মেয়ে কানাডায় পড়াশুনা করে। স্ত্রী কানাডায় ইমিগ্রান্ট। তিনিও সময় সুযোগ পেলে অবসর কাটাতে কানাডায় যান।
সরকারও তাকে ‘আনন্দ চিত্তে বিনোদনের জন্য ছুটি দেয়। সর্বশেষ ছুটি পেয়েছিলেন গত বছরের মার্চে। সরকার তার ছুটি মনজুরুল সংক্রান্ত অনুমোদন আদেশে লিখেছে ‘বিশ্রামও বিনোদনের জন্য ১৫ দিন কানাডা থাকবেন।’ বাংলাদেশে কি অসাধারণ উন্নতিই না হয়েছে, একজন আমলা বিশ্রাম নিতে কানাডায় যান!
যদিও বাংলা ইনসাইডারের সংগে আলাপে ড: মনজুরুল দাবী করেছেন, কানাডায় তার বাড়ী নেই। কিন্তু সরকারের সংগৃহীত তথ্যে দেখা যায় সেখানে তার স্ত্রীর নামে একটি এপার্টমেন্ট আছে। এছাড়াও বেনামে আরো দুটি এপার্টমেন্ট রয়েছে বলে সরকারী তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
৮৫ ব্যাচের কর্মকর্তা হলেও তিনি সচিব হতে পারেননি। আর এর পেছনে কারণ হলো দুর্নীতি। কেস প্রকল্পের পরিচালক থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু আমলাদের হাতে অদ্ভুত জাদুর কাঠি আছে। যে কাঠির স্পর্শে সব দুর্নীতির কালো দাগ মুছে যায়। কেস প্রকল্প ছাড়াও ড: মনজুর পরিবেশ মন্ত্রনালয়ে চাকরী করেন, সেখানেও তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছিল। তবে কোন অভিযোগই শেষ পর্যন্ত তদন্ত হয়নি।
বাংলা ইনসাইডারের সংগে আলাপকালে ড: মনজুর স্বীকার করেন যে তার ছেলে এবং মেয়ে কানাডায় উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করছে। স্ত্রী কানাডার ইমিগ্যান্ট হলেও, মনজুরের ভাষায় ‘তিনি যাওয়া আসার মধ্যে থাকেন’। সত্যিই তো বাংলাদেশে উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা। না হলে, একজন অতিরিক্ত সচিবের স্ত্রী চাইলেই উড়ে যেতে পারেন কানাডায় কিভাবে।